West Bengal BJP: মোদির ২০ বছরের শাসনকাল উদযাপন ভিতরে, বক্তৃতা করছেন খোদ জাভড়েকর, বাইরে বিজেপি কর্মীদের মারামারি
Kolkata News: শনিবার কলকাতার হো চি মিন সরণিতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস কেন্দ্রে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়।
শিবাশিস মৌলিক, কলকাতা: গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী, দীর্ঘ ২০ বছরের শাসনকাল নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi)। তাঁর শাসনকালের সুফল তুলে ধরতে কলকাতার বুকে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। তাতে বক্তৃতা করতে দিল্লি থেকে উড়ে এসেছিলেন স্বয়ং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর (Prakash Javadekar)। কিন্তু তিনি যখন বক্তৃতা করছেন, সেই সময় বাইরে বিজেপি-র (BJP) দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ধস্তাধস্তি, হাতাহাতি, মারামারি ঘিরে ধুন্ধুমার বাধল।
কলকাতায় বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতার বক্তৃতার সময়ই হুলস্থুল কাণ্ড দলের কর্মীদের মধ্যে
শনিবার কলকাতার (Kolkata News) হো চি মিন সরণিতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস কেন্দ্রে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। সকাল থেকে দফায় দফায় তাতে অংশ নেন তফসিলি থেকে সব শাখার প্রতিনিধিরাই। সুকান্ত মজুমদার না থাকলেও, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, শমীক ভট্টাচার্য-সহ রাজ্য নেতৃত্বের অনেকেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন। মোদির ২০ বছরের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে আয়োজন হয়েছিল বিশেষ সেমিনারেরও। সেখানে বক্তৃতা করছিলেন জাভড়েকর। সেই সময়ই আইসিসিআর-এর বাইরে ধুন্ধুমার বেধে যায়।
সেখানে সব্যসাচী রায়চৌধুরী নামের এক ব্যক্তিকে মারধর করতে শুরু করেন বিজেপি-র অভিজিৎ নাহা। তৃণমূলের দালাল, তোলাবাজ বলে কটাক্ষও করা হয় সব্যসাচীকে। একসময় সব্যসাচীর কলারও ধরতে দেখা যায় অভিজিৎকে। আরও কয়েক দজনকে ওই গন্ডগোলে দেখা যায়। সেখানে সব্যসাচীর উদ্দেশে অভিজিৎকে বলতে শোনা যায়, "আপনি তৃণমূলের দালাল। আইপিএস বলে পরিচয় দিয়ে টাকা তোলেন। সিবিআই-এর নাম করে টাকা তোলেন বিভিন্ন জায়গায়। দলের নেতাদের নাম করে গরিব, বেকার ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে টাকা তোলেন।"
আরও পড়ুন: Post Poll Violence Case: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআই-জালে ৩, বীরভূম জুড়ে তল্লাশির পর গ্রেফতারি
এর পাল্টা অভিজিতের উদ্দেশে সব্যসাচী বলেন, "গরু চুরি করো তোমরা।" তিনি নিজে থেকে সেখানে আসেননি, আইনজীবী হিসেবে বঙ্গ বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য ওকালতনামায় সই করতে তাঁকে ডেকে পাঠানোতেই এসেছিলেন বলেও জানান সব্যসাচী। তার পরও ঝামেলায় ইতি পড়েনি। বরং হাতাহাতি, টানা-হ্যাঁচড়া চলতে থাকে। বিজেপি নেতাদের নাম করে সব্যসাচী বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে সব্যসাচী টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ করেন অভিজিৎ।
বাইরের ঝামেলার খবর এর পর ভিতরেও পৌঁছয়। তাতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন শমীক। তিনি বলেন, "একথা ঠিক যে, ওকালতনামায় সই করার জন্য এসেছিলেন উনি। কলকাতা পৌরসভা নির্বাচনের আগে অভিজিৎ নাহাই বাড়িতে নিয়ে গিয়ে সব্যসাচী রায়চৌধুরীর সঙ্গে আমার পরিচয় করিয়ে দেয়। উনি দলের সদস্য নন। আমি শুধু বলতে পারি, আমার সল্টলেকের বাড়িতে এসে সব্য়সাচীর সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয় অভিজিৎই। উনি সাবর্ণ্য রায়চৌধুরীর পরিবারের ছেলে। এর বাইরে কিছু বলছি না।"
রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের হাতে দলের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণ কতটা, উঠছে প্রশ্ন
কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যেখানে মোদিকে নিয়ে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করছেন, সেই সময় অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে এ ভাবে বিজেপি-র দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ধস্তাধস্তি, হাতাহাতি, মারামারিতে দলের কর্মীদের উপর বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণ নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। অভিজিৎ খোদ যেখানে সব্যসাচীর সঙ্গে শমীকের পরিচয় করিয়ে দেন, সেখানে এমন ঝামেলা বাধল কী ভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।