KMC: খরচে রাশ কলকাতা পুরসভার, বরাদ্দ টাকা একসঙ্গে ছাড়া হবে না, জারি নির্দেশিকা
KMC Guidelines: কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা ৬০ শতাংশ টাকা অনুমোদন দিয়েছি।"
অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: আর্থিক সঙ্কট এড়াতে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের খরচে রাশ টানতে চাইছে কলকাতা পুরসভা। ওই সব বিভাগের জন্য বরাদ্দ টাকা একসঙ্গে ছাড়া হবে না বলে নির্দেশিকা জারি করলেন পুর কমিশনার। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, প্রথম ৬০ শতাংশ অর্থ অনুমোদন করা হবে। তার হিসেব খতিয়ে দেখে ছাড়া হবে বাকি ৪০ শতাংশ টাকা। তবে মেয়র জানিয়েছেন, পানীয় জল, স্বাস্থ্য, রাস্তা, নিকাশির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ এর আওতায় পড়ছে না।
ব্যয়সঙ্কোচে বড় পদক্ষেপ নিল কলকাতা পুরসভা। আগামী অর্থবর্ষে পুর সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামতি ও স্থায়ী সম্পদ তৈরির জন্য বাজেটে যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে তার ওপর নিয়ন্ত্রণ জারি করা হল। এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন কলকাতা পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পুর সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ, মেরামতি ও স্থায়ী সম্পদ তৈরির ক্ষেত্রে ২০২২-’২৩-এ বরাদ্দের ৬০ শতাংশ ব্যয়ের প্রাথমিক অনুমোদন কোষাগার থেকে দেওয়া হবে। বাকি ৪০ শতাংশ টাকা আটকে রাখা হবে আপাতত। ৬০ শতাংশ টাকা খরচের হিসেব দাখিলের পরই ছাড়া হবে বাকি টাকা।
কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, "ক্যাপিটাল বিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে আমরা ৬০ শতাংশ টাকা অনুমোদন দিয়েছি। তারপর যদি আবার লাগেস আমরা মার্চে রিভিউ মিটিং করব। রিভিউ করার পর বাদবাকি ৪০ শতাংশ টাকা ছাড়া হবে। সাধারণত বছরের শুরুতে ৬০ শতাংশ টাকা লাগে না। যার যেমন লাগবে, আমরা ৪০ শতাংশ টাকা হাতে রেখে ৬০ শতাংশ টাকা অনুমোদন দিচ্ছি।" তবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে শুধু জরুরি নয়, এমন বিভাগের ক্ষেত্রেই। পানীয় জল, রাস্তা, স্বাস্থ্য, নিকাশির মতো জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে খরচে বিধিনিষেধ জারি করা হচ্ছে না বলে কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর।
পরপর দু’বছর করোনার কারণে রাজস্ব আদায় কিছুটা ধাক্কা খেয়েছে। এখন পরিস্থিতি কিছুটা উন্নত হওয়ায় আগামী অর্থবর্ষে সেই ধাক্কা সামাল দেওয়া যাবে বলে মনে করছেন পুর কর্তারা। কিন্তু রাজস্ব আদায় কোথা থেকে হবে, তা নিয়ে চিন্তিত পুর প্রশাসন। সেই কারণে কম গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে খরচে রাশ টানার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কলকাতার মেয়রের কথায়, "আমরা অনেক রকম ভাবে ওয়ে আউট বের করার চেষ্টা করেছি। যেহেতু অর্থ কমিশনের নির্দেশ মানতে হয়েছে, তাই পেনশনের ক্ষেত্রে খরচ অনেক বেড়ে গেছে। করোনার সময় রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। বাজেট বহির্ভূতভাবে করোনা মোকাবিলায় খরচ অনেক বেশি হয়েছে। সেজন্যই নিয়ন্ত্রণ ও ডিসিপ্লিন অ্যাকাউন্টস করছি। এটা দু’বছর চালাতে পারলে মনে হয় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।"
কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর, ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষের জন্য পুর বাজেটে রাজস্ব আদায় বাবদ ধরা হয়েছে ৪ হাজার ২৩৩ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। ব্যয় ধরা হয়েছে, ৪ হাজার ৪১০ কোটি ১১ লক্ষ টাকা। বাজেট ঘাটতি ১৭৭ কোটি টাকা। সেই ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অর্থবর্ষ শুরুর আগেই সাবধানী কলকাতা পুরসভা।