Malda: প্রশাসনিক নির্দেশ অমান্য করে মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে 'তোলা' নেওয়ার অভিযোগ মালদায়
Malda News: গঙ্গার তীরে লাগানো হয়েছে হোর্ডিং। লেখা রয়েছে, কোন জালে মাছ ধরলে কত কর দিতে হবে। হোর্ডিংয়ের নিচে লেখা পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মালদার মোথাবাড়িতে এই হোর্ডিং ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
করুণাময় সিংহ, মালদা: প্রশাসনিক নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মৎস্যজীবীদের (fishermen) কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে কর (extortion)। মালদার 'মোথাবাড়ি ধীবর সমবায় সমিতি লিমিটেড'-এর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে তুললেন মৎস্যজীবীরা। যদিও সমবায় সমিতির দাবি, তাঁদের কাছে বৈধ কাগজ রয়েছে জলকর নেওয়ার। জেলাশাসক অবশ্য জানিয়েছেন, নদী কাউকে লিজ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্য়বস্থা নেওয়া হবে।
মাছ ধরলেও 'তোলা'? মালদায় চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
গঙ্গার তীরে লাগানো হয়েছে হোর্ডিং। লেখা রয়েছে, কোন জালে মাছ ধরলে কত কর দিতে হবে। হোর্ডিংয়ের নিচে লেখা পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মালদার মোথাবাড়িতে এই হোর্ডিং ঘিরেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রশাসন সূত্রে খবর, গঙ্গায় মাছ ধরতে মৎস্যজীবীদের কোনওরকম কর দিতে হয় না। অভিযোগ, সেই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মৎস্যজীবীদের ওপর বসানো হয়েছে কর। বোর্ডে লেখা আছে, যত টাকার মাছ ধরা হবে তার ২০ শতাংশ কর দিতে হবে। 'মোথাবাড়ি ধীবর সমবায় সমিতি লিমিটেড'-এর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে সরব হয়েছে স্থানীয় মৎস্যজীবীদের একাংশ।
মানিকচকের মৎস্যজীবী বুলবুল চৌধুরীর কথায়, 'গঙ্গা নদীতে প্রায় সাত হাজার টাকার মাছ ধরেছিলাম। মাছ নিয়ে ঘাটে আসতেই তোলাবাজরা আমাদের কাছ থেকে টাকা চায়। টাকা দিতে অস্বীকার করলেই আমাদের সমস্ত মাছ ও জাল আমাদের কাছ থেকে কেড়ে নেয়। ১৪০০ টাকা দাবি করে। শেষমেশ ১২০০ টাকা দিয়ে ওদের কাছ থেকে মাছ ও জাল ছাড়াই।'
নদী থেকে মাছ ধরে সংসার চলে এই এলাকার প্রায় ২০০ মৎস্যজীবীর। তাঁদের অভিযোগ, তোলাবাজদের দাপটে তাঁদের জীবিকা বিপন্ন। মানিকচকের মৎস্যজীবী সতীশ চৌধুরীরর দাবি, 'তোলাবাজদের মস্তানদের ভয়ে গঙ্গা নদীতে মাছ ধরতে পারছি না। ফলে বিপন্ন হয়ে পড়েছে জীবিকা।'
এনিয়ে মানিকচক থানায় ও জেলাশাসককে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। মোথাবাড়ি ধীবর সমবায় লিমিটেডের অবশ্য দাবি, তাদের কাছে জলকর নেওয়ার বৈধ কাগজ রয়েছে। মোথাবাড়ি ধীবর সমবায় লিমিটেডের কর্ণধার পঞ্চানন মাহাতো ফোনে বলেন, 'সরকারি নিলামে আমি ১১ লক্ষ ৫১ হাজার ৯৯৯ টাকায় লিজ নিয়েছি। আমার কাছে জলকর আদায়ের বৈধ কাগজ আছে। ৫ শতাংশ হারে মৎস্যজীবীদের কাছ থেকে জলকর নেওয়া হচ্ছে। যদি আমাদের জলকর বাতিল হয় তবে বাতিলের শংসাপত্র দিক প্রশাসন এবং লিজের সমস্ত টাকা ফেরত দিক সরকার।'
এই ইস্যুতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে তৃণমূলকে নিশানা করতে ছাড়েনি বিজেপি। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। মালদা দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার বিজেপির সাধারণ সম্পাদক গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, 'তৃণমূলের বড় সারির নেতাদের তোলাবাজদের মাথায় হাত রয়েছে বলেই সরকারি নির্দেশকে অমান্য করে তোলা আদায় হচ্ছে।' অন্যদিকে, মানিকচকের তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র বলেন, 'এমন কোনও সিদ্ধান্ত প্রশাসন থেকে নেওয়া হয়নি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও গঙ্গা নদীতে মাছ ধরার ক্ষেত্রে মৎসব্যজীবিদের জলকর মকুব করেছেন। তবে কেন এমন হচ্ছে তা প্রশাসনকে জানাব।'
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari:'পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় ও কুণাল ঘোষের চিত্রনাট্য দুর্বল', পাল্টা হুঙ্কার শুভেন্দু অধিকারীর
মালদার জেলাশাসক জানিয়েছেন, নদী কাউকে লিজ দেওয়া হয়নি। কারণ, নদী থেকে মাছ ধরলে কর নেওয়া যায় না বলে সরকারি নির্দেশ রয়েছে। বেআইনিভাবে টাকা তোলার অভিযোগ পেয়েছি। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর ও মৎস্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কারও বিরুদ্ধে টাকা তোলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।