Mamata Banerjee: হাসপাতালগুলির নিরাপত্তায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ, ঘোষণা করলেন মমতা
RG Kar Protests: মমতা জানান, স্বাস্থ্য আধিকারিক, হাসপাতালের অধ্যক্ষ, জেলা হাসতালের অধ্যক্ষ, বিভাগীয় প্রধান, স্বাস্থ অধিকর্তা, জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে।
কলকাতা: সরকারি হাসপাতালের নিরাপত্তা সুনিশ্চিতকরণে এবার বড় ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। হাসপাতালের নিরাপত্তা সুনিশ্চিতকরমে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে ঘোষণা করলেন তিনি। বৃহস্পতিবার চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা। এর পরই হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে ১০০ কোটি বরাদ্দের ঘোষণা করেন তিনি। পাশাপাশি, ১২০০০ পুলিশ নিয়োগ করা হবে বলেও জানালেন। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি তাঁরা ডিউটি করবেন বলে জানালেন। (Mamata Banerjee)
মমতা জানান, স্বাস্থ্য আধিকারিক, হাসপাতালের অধ্যক্ষ, জেলা হাসতালের অধ্যক্ষ, বিভাগীয় প্রধান, স্বাস্থ অধিকর্তা, জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। সেখানে 'রাত্তিরের সাথী' প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। একটি অ্যাপ তৈরি হবে, তার সঙ্গে জুড়ে নেওয়া হবে গোটা রাজ্যকে। সুপ্রিম কোর্ট যে দুই অংশ বাদ দিয়েছে, সেগুলি ছাড়া বাকি অংশগুলি করতে বলা হয়েছে বলে জানান। (RG Kar Protests)
মমতা জানিয়েছেন, হাসপাতালগুলিতে বাড়তি শৌচাগার, বিশুদ্ধ জল, বিশ্রামঘর, আলো, সিসিটিভি-র জন্য ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছি আমরা। পূর্ত দফতরের হাতে সব না ছেড়ে, অধ্যক্ষদের দায়িত্ব নিতে বলেছেন মমতা, যাতে দ্রুত কাজ সম্পন্ন হয়। এ নিয়ে মুখ্যসচিব এবং স্বাস্থ্যসচিবকেও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কিছুটা কাজ হয়েছে, এখনও বাকি আছে কিছুটা, বন্যা পরিস্থিতির জন্য অন্য দিকেও নজর দিতে হচ্ছে বলে জানান মমতা।
আর জি কর কাণ্ডের পর নিজেদের দাবি-দাওয়া নিয়ে যখন পথে জুনিয়র চিকিৎসকরা, সেই সময়ই রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা করেন মমতা। আজ তিনি বলেন, "রোগী কল্যাণ সমিতি ভেঙে দিয়েছি। অধ্যক্ষরা এখন সমিতির চেয়ারম্যান। সদস্য হিসেবে থাকবেন MSVP, একজন করে জুনিয়র, একজন করে সিনিয়র ডাক্তার বা বিভাগীয় প্রধান, একজন নার্সদের পক্ষ থেকে এবং একজন জনপ্রতিনিধি। তাঁরাই দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। অধ্যক্ষদের বায়োমেট্রিক সিস্টেম চালু করতে বলেছি। যাঁরা সাফাই কর্মী, তাঁদের তথ্য যাচাই করতে বলা হয়েছে। নির্মাণকার্যে বাইরে থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের ছবি, ঠিকানা, সব নথি রাখতে হবে। বায়োমেট্রিক কার্ডও রাখতে বলা হয়েছে। দেখভাল করতে বলা হয়েছে হস্টেলেরও।"
এদিনের বৈঠকে ৩৩টির মধ্যে ২০-২২টি মেডিক্যাল কলেজ, জেলা হাসপাতাল নিজেদের মতামত জানিয়েছে, বিভাগীয় প্রধানরাও কথা বলেন বলে জানিয়েছেন মমতা। বৈঠক ইতিবাচক বলে জানান তিনি। বাকি সমস্যাগুলি মুখ্যসচিব, স্বাস্থ্যসচিব দেখে নেবেন এবং ডিজি পুলিশ সুরজিৎ পুরকায়স্থ নিরাপত্তা সংক্রান্ত অডিট করবেন বলে জানান।
হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা প্রসঙ্গে মমতা বলেন, "আজ বললেই আজ নিরাপত্তা দিতে পারব না। যা আছে, আপাতত তা থেকে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে। আস্তে আস্তে, অডিট করে দেওয়া হচ্ছে। এই তো পুলিশে ১২ হাজার নিযুক্তি আটকে ছিল। এখনও অর্ডার আসেনি, সম্ভবত সোমবার আসবে। ১২০০০ সংখ্যাটা কম নয়। পুলিশে নিয়োগ করতে সময় লাগে। তাও আমি বলেছি, বেশি সময় না নিয়ে, ডাক্তারদের যেমন আমি অনুমোদন দিয়েছি, PGTরা পড়াশোনাও করবেন, চিকিৎসাও করবেন, তেমনই পুলিশের ডিউটিও করবে, আবা ট্রেনিংও নেবে। তিন মাস-ছ'মাসের ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন নেই, কারণ আমার কাছে অত ম্যানপাওয়ার নেই। তার মধ্যে পুজো আসছে। কেউ কেউ আবার কোর্টে চলে যাচ্ছেন। আমি কোর্টের কাছে আবেদন করতে পারি না। কিন্তু ১১২ ফুট প্রতিমা গড়ে যদি পদপিষ্ট হওয়ার ঘটনা ঘটে, তার দায়িত্ব কে নেবেন?"
পুজো নিয়ে এক মাস আগে এ নিয়ে বৈঠক করেন বলে জানান মমতা। তাঁর বক্তব্য, "আমার আপত্তি নেই, ১১২ কেন ৪১২ ফুট মূর্তি গড়তে পারেন। কিন্তু দেখতে হবে, মানুষ যেন পদপিষ্ট হয়ে মারা না যান। এমনিতেই বন্যায়, বিনা চিকিৎসায় মানুষ মারা গিয়েছেন। যে ক্লাব করছে, তাদের দায়বদ্ধতা থাকে। আদালতে গিয়ে যদি সারাক্ষণ রাজনীতির কচকচানি করেন, সব ব্যাপারে মাথা না ঘামিয়ে... যদি আমি জিজ্ঞেস করি যে, আপনি যখন মেয়র ছিলেন কলকাতায় কেন চার দিন জল জমে থাকত? আন্দোলনকারীদের থেকে এত টাকা নিয়েছেন কেন? কথায় কথায় আদালত। আর কোর্ট মানেই তো...কাল সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ শুনেছেন। বিচার খারাপ হোক চাই না, আমাদের পক্ষেও দেওয়ার দরকার নেই। কিন্তু বিচারের বাণী যেন নীরবে না কাঁদে। মানুষ যেন বিপদে না পড়েন।"