কলকাতা : মুর্শিদাবাদে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করলে, ৩টি আসনেই জয় সম্ভব। লোকসভার প্রস্তুতি বৈঠকে মুর্শিদাবাদের নেতাদের গতকাল এমনই বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। আর এবার সেই সুরেই ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের আস্ফালন, "দিদি যদি আমার প্রতি বহরমপুরে আস্থা রাখেন, আমি ২০২৪ সালে অধীর চৌধুরীকে ২ লক্ষ ভোটে হারিয়ে প্রমাণ করব যে, হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে কতটা জনসংযোগ আছে। মানুষ হুমায়ুন কবীরকে কতটা নেতা হিসাবে মান্যতা দেন।"


রাজ্যের ৪২ লোকসভা আসনেই জয়ের লক্ষে দলকে ঝাঁপিয়ে পড়ার বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনটাই সূত্রের খবর। দিল্লিতে কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক থাকলেও, এ রাজ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে তৃণমূল-কে চড়া সুরে আক্রমণ করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। যিনি বহরমপুরের ৫ বারের সাংসদ। আর শুক্রবার অধীরের জেলা মুর্শিদাবাদের নেতাদের নিয়েই বৈঠকে বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, তৃণমূল নেত্রী বৈঠকে বলেন, মুর্শিদাবাদে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করলে, ৩টি আসনেই জয় সম্ভব। ঝগড়াঝাটি না করে, জেলা, মহকুমা এবং বুথস্তরের নেতাদের মধ্যে সমন্বয় বাড়ান।


এই মুহূর্তে বহরমপুর বাদে, জঙ্গিপুর আর মুর্শিদাবাদ - এই দুটি লোকসভা কেন্দ্র তৃণমূলের দখলে। সূত্রের খবর, এই প্রসঙ্গে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, বহরমপুরে অধীর চৌধুরী একটা বড় চ্যালেঞ্জ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন - ধুর, কেউ কোনও চ্যালেঞ্জ নয়! কোনও কেউ ফ্যাক্টর নয়। ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিন। ৩টি আসনেই জয় সম্ভব! পরে হুমায়ুন কবীর বলেন, "৩টি আসনই আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উপহার দেব।" আর আজ সেই আত্মবিশ্বাসের সুরে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বসলেন অধীর চৌধুরীকে।


এর পাশাপাশি তিনি বলেন, "দিদি আমাকে স্নেহ করেন, তাই কোনও সময় কোনও ভুল করলে বা ফাউল করলে আমাকে বকাও দেন। এটাকে আমি কিছু মনে করি না। আমি মনে করি, আমাকে গুরুজনের কাছে শিক্ষা নিতে হবে। রাজনীতির ময়দানে তিনি আমার নেত্রী, গুরুজন। তাঁকে নিয়ে আমার বলারই কিছু নেই। তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু, তাঁকে সামনে রেখে মুর্শিদাবাদ জেলায় কিছু ব্যক্তি দলের পাট্টা নিয়ে বসে আছেন। তাঁদের অঙুলিহেলনে আমাদের চলতে হবে। মুর্শিদাবাদে মানুষকে যেন কেউ রং ট্রিটমেন্ট না করে। আমি সবসময় বলি, মুর্শিদাবাদ জেলা একসময় বাংলা-বিহার-ওড়িশাকে নেতৃত্ব দিত। সেই জেলা বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী রাখবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, ২৬-২৮-৩০ বছরের ছেলেরা প্রবীণ রাজনীতিকদের অবহেলা করবেন, এটা মন থেকে মেনে নেওয়া যায় না। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সত্যিই যোগ্য নেতৃত্ব হয়ে উঠেছেন। কিন্তু, তিনি তো শুধু ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ নন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরেই আমরা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেতৃত্ব হিসাবে মানি। সেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমার আবেদন, উনি যেন কারও কথা শুনে প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে কোনও কিছু না করেন। তাহলে আমাদের দুঃখ হয়। দল ছাঁটাই করলে পরোয়া করি না। মুর্শিদাবাদে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে হুমায়ুন কবীর বিরল নাম।"