Odisha Train Derail : তীব্র ঝাঁকুনি ! ট্রেন থেকে ভয়ে ঝাঁপিয়ে পড়াটাই কি কাল হল? ওড়িশায় ট্রেন-দুর্ঘটনায় শেষ বাংলার ছেলে
রবিবার, মায়ের চিকিৎসা করিয়ে ফেরার পথেই ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ছেলের। নাম শুভঙ্কর রায়। বয়স মাত্র ২২।

অরিন্দম সেন, অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা : মায়ের হার্টের সমস্যা নিয়ে দুশ্চিন্তার শেষ ছিল না। নিয়ম করে প্রায়ই ব্যাঙ্গালোরে যেতে হত চেকআপ করাতে। রবিবার, মায়ের চিকিৎসা করিয়ে ফেরার পথেই ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ছেলের। নাম শুভঙ্কর রায়। বয়স মাত্র ২২। বাড়ি আলিপুরদুয়ার পুরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের মধ্যপাড়ায়। বাড়ির একমাত্র ছেলের মৃত্যুর খবর পেতেই কার্যত শোকে পাথর গোটা পরিবার।
কীভাবে দুর্ঘটনা
রবিবার সকাল ১১টা ৫৪ নাগাদ কটক পরিয়ে নেরগুন্ডি স্টেশনের কাছেই লাইনচ্যুত হয়ে যায় বেঙ্গালুরু-কামাখ্যা সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের ১১টি বগি। কোনও মতে ট্রেন থেকে নেমে ছেলেকে খুঁজতে পাগলের মতো ছুটে বেড়ান মা। কিন্তু কোথাও পাননি তাঁকে। দুর্ঘটনার খবর মিলতেই সেখানে পৌঁছন ইস্টকোস্ট রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার, খুড়দা রোডের ডিআরএম সহ রেলের একাধিক শীর্ষকর্তা। দুর্ঘটনাস্থলে পাঠান হয় অ্যাক্সিডেন্ট রিলিফ ট্রেন ও মেডিক্যাল রিলিফ ট্রেন। জেলা আধিকারিক জানিয়েছেন, যিনি মারা গিয়েছেন, তিনি আসলে ঝাঁপ দিয়েছিলেন বলেই মারা গিয়েছেন। বেশ কিছুক্ষণ পর, রেলের তরফে, শুভঙ্করের মৃত্যুর খবর যায় আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসনে, সেখান থেকে তাঁর বাড়িতে।
পরিবারে আর কে কে
পরিবারের একমাত্র ছেলে ছিল শুভঙ্কর। মা, দুই পিসি ও কাকার পরিবারকে নিয়ে টানাটানির সংসার তাদের। তাঁর রোজগারেই চলত গোটা পরিবার। স্থানীয় এক স্টিল কোম্পানিই ছিল তাঁর আয়ের একমাত্র উৎস। কাকা থেকে পিসি, সকলেই জানাচ্ছেন, পুরো পরিবারটাই নির্ভর করত ওই যুবকের আয়ের উপর। এখন কী হবে, কী ভাবে জুটবে দুবেলা দুমুঠো, সেটাই ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা।
গত সোমবার মাকে নিয়ে হার্টের চিকিৎসা করাতে বেঙ্গালুরুতে গিয়েছিলেন শুভঙ্কর। সফলভাবে সেই কাজ মিটিয়ে, শনিবার ট্রেনে চাপেন তাঁরা।
রবিবার সকালে, পরিবারের সঙ্গে ফোনেও কথা হয় মা-ছেলের। তারপর সকাল ১১টা ৫৪ নাগাদ এই দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনায় মৃত যুবকের পরিবারের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক থেকে জেলা প্রশাসন। এদিকে, ছেলের মৃতদেহ হাতে পাওয়ার অপেক্ষায় পরিবার।
ইতিমধ্যেই, গোটা ঘটনায় সর্বোচ্চ পর্যায়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটির ওপর।






















