(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Purulia News: উনুনে একসঙ্গে ২৩ হাঁড়ি চাপিয়ে ভোগরান্না, পুরুলিয়ার এই জগদ্ধাত্রী পুজো ১৫২ বছর পুরনো
Jagadhatri Puja: পুরুলিয়া জেলার কাশীপুর থানার অন্তর্গত শিয়ালডাঙা গ্রামের জগদ্ধাত্রী পুজোই শতাব্দিপ্রাচীন। নয় নয় করে পুজোর বয়স ১৫২ বছর।
হংসরাজ সিংহ, পুরুলিয়া: পুরুষতন্ত্র তখনও গভীরে প্রোথিত সমাজের। পুত্রসন্তানের জন্য মানতের চল ছিল ঘরে ঘরে। সেই পুত্রসন্তানের কামনাতেই দেবীর আরাধনা শুরু প্রায় ১৫০ বছর আগে। সময়ের সঙ্গে এখন পাল্টেছে রীতিনীতি, মানসিকতাও। তবে শতাব্দি প্রাচীন রীতি মেনেই এখনও জগদ্ধাত্রী পুজো (Jagadhatri Puja) হয়ে আসছে পুরুলিয়ার গ্রামে (Purulia News)।
পুরুলিয়ার শিয়ালজাঙার জগদ্ধাত্রী পুজোর বয়স ১৫২ বছর
পুরুলিয়া জেলার কাশীপুর থানার অন্তর্গত শিয়ালডাঙা গ্রামের জগদ্ধাত্রী পুজোই শতাব্দিপ্রাচীন। নয় নয় করে পুজোর বয়স ১৫২ বছর। পুত্রসন্তানের কামনায় শুরু হয়েছিল পুজো। আজও চলছে সেই পুজো। গ্রামের সব লোকজন ভিড় করেন এই পুজোয়। পুজোকে ঘিরে আয়ের সুযোগ তৈরি হয়। আবার শিল্প-সংস্কৃতির চাহিদাও মেটে।
শোনা যায়, একদা গ্রামের বাসিন্দা হারাধন আচার্যের হাতে এই জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা। পুত্রসন্তান কামনা করে জগদ্ধাত্রী পুজোর সূচনা করেন তিনি। আজও রীতি মেনে সেই পুজো চলে আসছে। এই গ্রামে দুর্গাপুজোও হয় যদিও। তবে এখানে দুর্গার প্রতিমা হয় না। তাই জগদ্ধাত্রী পুজোই এখানকার মূল উৎসব। তাই দলবেঁধে তাতে শামিল হন গ্রামের মানুষজন।
একসঙ্গে ২৩টি হাঁড়ি বসিয়ে চলছে ভোগ রান্না।
গোটা গ্রামেরই মূল পুজো, উৎসব এই জগদ্ধাত্রী পুজো। চার দিন ধরে চলে পুজো, আরাধনা। তবে মহা নবমীই এই পুজোর মূল আকর্ষণ। কারণ ওই দিন মাটির উনুনে একসঙ্গে ২৩টি হাঁড়ি বসিয়ে রান্না হয় ভোগ। গোলাকার উনুনে পর পর বসিয়ে রাখা হয় মাটির হাঁড়ি। ধোঁয়া ওঠা হাঁড়িতে মাঝেমধ্যে হাতা-খুন্তি চালান রান্নার ঠাকুররা। সেই ভোগই সকলে মিলে চেটেপুটে খাওয়া হয়।
মহাভোগ রান্না, যাত্রাপালার টানে আজও জনসমুদ্র নামে শিয়ালডাঙায়
এই পুজোয় গ্রামের মানুষজন ছাড়াও, আশেপাশের সব এলাকার মানুষজন এসে ভিড় করেন। বছরের এই চারদি তাই শিয়ালডাঙায় জনসমুদ্র নেমে আসে। শুধুমাত্র মহাপ্রসাদের টানেই ছুটে আসেন কতশত মানুষ। জগদ্ধাত্রী পুজোকে কেন্দ্র করে মিলনমেসা হয়ে ওঠে গোটা শিয়ালডাঙা গ্রাম। এই পুজোর আরও একটি বিশেষত্ব হল, বিগত ৮৮ বছর ধরে পুজো মণ্ডপে যাত্রার আসর চলে আসছে। সিনেমা-থিয়েটার-ওয়েবসিরিজের যুগে, আজও এই যাত্রাপালা দেখতে ভিড় উপচে পড়ে। স্থানীয় মানুষজন অংশগ্রহণও করেন যাত্রাপালায়।