SSC Recruitment Scam : ২৬ হাজারের চাকরি বাতিল, এবার স্কুলে স্কুলে 'সিভিক-টিচার' মডেল!
সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্য়মন্ত্রীর বৈঠকের পর, ক্ষুব্ধ চাকরিহারাদের মুখে উঠে এসেছিল সিভিক-প্রসঙ্গ! একদিন পরই মুর্শিদাবাদের স্কুলে দেখা গেল কার্যত শিক্ষকদের সিভিক-মডেল!

কলকাতা : সিভিক পুলিশের পর এবার সিভিক টিচার ! সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি হারিয়েছেন হাজার হাজার শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী। জেলায় জেলায় কার্যত ভেঙে পড়েছে শিক্ষা ব্যবস্থা। কীভাবে চলবে স্কুল, কীভাবে পরিচালনা করা হবে শিক্ষাব্যবস্থা, মাথায় হাত পড়ে যাচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষের। কোথাও পরীক্ষার হলে গার্ড দিচ্ছে উঁচু ক্লাসের পড়ুয়ারা। কোথাও স্কুলের একমাত্র শিক্ষকের চাকরি চলে যেতে পড়াচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। শিক্ষাকর্মীর চাকরি চলে যাওয়ার হেড মাস্টারমশাই বাজাচ্ছেন স্কুলের ঘণ্টা।
স্কুলে এবার সিভিক টিচার?
সোমবার নেতাজি ইন্ডোরের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,'আপনারা স্কুলে যান। ক্লাস করান। ভলান্টারি সার্ভিস কিন্তু সবাই দিতে পারে।' কিন্তু সেদিন মুখ্যমন্ত্রীর কথায় আশ্বস্ত হতে পারেনি চাকরিহারা শিক্ষকদের বড় একটা অংশ । তাঁরা পরিষ্কার জানিয়ে দেন, স্বেচ্ছাশ্রমের জন্য তো তাঁরা লড়ছেন না। সসম্মানে, নিজের বেতন ফেরত চাইছেন তাঁরা। সেদিনই এক চাকরিহারা হতাশার সুরে এবিপি আনন্দ-কে জানিয়েছিলেন, সিভিক টিচার হিসেবে হয়তো মাইনে দিতে পারেন। এবার সেই সিভিক টিচার-ই বাস্তব হয়ে গেল পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থায়। সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্য়মন্ত্রীর বৈঠকের পর, ক্ষুব্ধ চাকরিহারাদের মুখে উঠে এসেছিল যে সিভিক-প্রসঙ্গ, একদিন পরই মুর্শিদাবাদের স্কুলে দেখা গেল কার্যত শিক্ষকদের সিভিক-মডেল!
মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান বালিকা বিদ্যালয়। স্কুলের ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৫ হাজার। শিক্ষিকা ছিলেন ২৭ জন। তার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ১৮ জনেরই চাকরি গেছে। রাতারাতি শিক্ষকের ঘাটতি সামাল দিতে স্কুলের ৬ জন প্রাক্তনীকে শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, সপ্তাহে ৬ দিন ক্লাস নিলে, মাস গেলে মিলবে ৬ হাজার টাকা। অস্থায়ী শিক্ষিকা জানালেন, '৪ তারিখ জমা দিয়েছিলাম, সন্ধের সময় জানানো হয়...৫ তারিখ থেকে জয়েন করেছি'
এরকম একটা স্কুল নয়। তালিকায় বহু। রাশি রাশি। মুর্শিদাবাদেরই লালগোলা মহেশনারায়ণ অ্যাকাডেমি থেকে সাঁকরাইলের বহড়াদাঁড়ি জুনিয়র হাইস্কুল। শিক্ষকদের চাকরি বাতিল হতেই দেখা গেল শুধুই হাহাকার চিত্র। কোথাও হাল ধরছেন অস্থায়ী শিক্ষক, কোথাও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। কোথাও আবার হেড মাস্টার মশাই করছেন ক্লার্কের কাজ। রানাঘাটের রথতলা কলোনি হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষকই স্কুলের তালা খুলছেন, স্কুলের ঘণ্টা বাজাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, Group D স্টাফের ভূমিকাও পালন করছেন।
একটা দুর্নীতির জেরে রাতারাতি চাকরি গেছে ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর। আর তার জেরে এখন জেলায় জেলায় সরকারি এবং সরকার-পোষিত স্কুলগুলির কঙ্কালসার চেহারা বেরিয়ে পড়েছে। কাজ চালাতে হচ্ছে অস্থায়ী শিক্ষক দিয়ে। কেউ কেউ কটাক্ষ করে বলছেন, সিভিক টিচার। এই কোনওক্রমে ঠেকনা দিয়ে কতদিন চলবে, স্থায়ী সমাধান আসবে ? রাজ্যের আবেদনে কী করবে সুপ্রিম কোর্ট ? আলোর দিশা কি পাবেন যোগ্য-শিক্ষকরা ? উত্তরের অপেক্ষায় সবাই।























