(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
SSC: শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীর পুরনো ফেসবুক পোস্ট ঘিরে চাঞ্চল্য!
SSC Scam in West Bengal: রাজ্যের প্রাক্তন অনগ্রসর ও শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী ও সিবিআইয়ের প্রাক্তন যুগ্ম অধিকর্তার ফেসবুকে পোস্ট করা একটি পুরনো ভিডিও ঘিরে চাঞ্চল্য পড়ে গিয়েছে।
অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা: টাকার বিনিময়ে স্কুলে চাকরি দেওয়া নিয়ে রাজ্যের (West Bengal) প্রাক্তন মন্ত্রীর পুরনো ফেসবুক (Facebook) পোস্ট ঘিরে চাঞ্চল্য! ভিডিওয় অভিযুক্তকে রঞ্জন বলে উল্লেখ করলেও, তাঁর আসল পরিচয় বলতে নারাজ উপেন বিশ্বাস (Upen Biswas)। তবে SSC নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের আবহে তাঁর সঙ্গে কথা বলা হলে সাহায্য করতে প্রস্তুত সিবিআইয়ের (CBI) প্রাক্তন যুগ্ম অধিকর্তা।
SSC নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে একের পর এক মামলার তদন্ত করছে CBI। এ নিয়ে যখন তোলপাড় শুরু হয়েছে, তখন রাজ্যের প্রাক্তন অনগ্রসর ও শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী ও সিবিআইয়ের প্রাক্তন যুগ্ম অধিকর্তার ফেসবুকে পোস্ট করা একটি পুরনো ভিডিও ঘিরে চাঞ্চল্য পড়ে গিয়েছে।
প্রাক্তন অনগ্রসর ও শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস বলেন, "প্রাক্তন সেনাকর্মী বলেন, স্যর আপনার বিধানসভা কেন্দ্রে চাকরি বিক্রি হচ্ছে। এখানে রঞ্জন (নাম পরিবর্তিত) প্রাইমারি ও আপার প্রাইমারির চাকরি বিক্রি করেন। প্রাইমারির জন্য ১০ লক্ষ, আপার প্রাইমারির জন্য ১৫-২০ লক্ষ, এখন প্রাইমারির জন্য ১৫ লক্ষ ও মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিকের জন্য ২৫ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা দর উঠেছে।"
নিজের ফেসবুক ওয়ালে ২০২১-এর ২১ এপ্রিল ভিডিওটি পোস্ট করেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তাঁর দাবি, রঞ্জন নামে যে অভিযুক্তের কথা বলা হচ্ছে, সেটি তাঁর আসল নাম নয়। মোট ৮ মিনিট ১৩ সেকেন্ডের এই ভিডিওয় ছত্রে ছত্রে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রঞ্জনের কুকীর্তির কথা বলা হয়েছে।
কিন্তু কে এই রঞ্জন?
সে বিষয়ে তিনি অবশ্য কিছু বলেননি। তবে অভিযুক্ত যে কতটা প্রভাবশালী, তা বোঝা যায় ভিডিওর এই অংশটি দেখেই। মন্ত্রী ফেসবুকে লেখেন, "যখন কাটমানি নেওয়ার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের বাড়ি ঘেরাও হচ্ছিল, তখন রঞ্জনের বাড়ি ঘেরাও দুরের কথা, তাঁর প্রশংসা করেছে সব পার্টির লোক। রঞ্জন খুব জনপ্রিয়। শোনা যায় একজন মন্ত্রীর মৃত্যু হলে, সেই উপলক্ষ্যে যেদিন স্বজন ভোজন হয়, সেদিন সব মাছ রঞ্জন দিয়ে এসেছিল এবং একথা রঞ্জন মাঝে মাঝে বলে থাকে। ওর বাড়ির পাশ দিয়ে যখন কেউ হেঁটে যায়, তখন সে বলে পবিত্র স্থানের পাশ দিয়ে হাঁটছি।"
কিন্তু এই রঞ্জনের রাজনৈতিক পরিচয় কী? সবকিছু জেনেও কেন সেইসময় পদক্ষেপ করেননি সিবিআইয়ের প্রাক্তন যুগ্ম অধিকর্তা? মন্ত্রীর কথায়, "ওর নামে তো কোথাও অভিযোগ নেই। সবার প্রাইভেসি আছে। অভিযোগ থাকলে বা কেস হলে বলা যেত। আমার কিছু রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার কারণে তখন যাওয়া সম্ভব ছিল না।"
আরও পড়ুন, নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম শিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর, এবার বামেদের প্যারোডিতে পরেশ
নিয়োগ-দুর্নীতি নিয়ে একাধিক মামলার তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। একসময় যে কেন্দ্রীয় সংস্থার যুগ্ম অধিকর্তার পদ সামলেছেন তিনি! বিহারে পশুখাদ্য মামলায় অভিযুক্ত তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদবকে গ্রেফতার করেছিলেন এই উপেন বিশ্বাসই। তাহলে কি বর্তমানে এই মামলায় সিবিআইকে সাহায্য করবেন তিনি? প্রাক্তন অনগ্রসর ও শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, "নিজে থেকে যাব না। সবকিছুর একটা প্রোটোকল আছে। নিজে গিয়ে হেল্প করব, এটা হয় না। আমার থেকে সাহায্য চাইলে আমি অবশ্যই হেল্প করব।
এই পরিস্থিতিতে প্রাক্তন আরেক আইপিএস নজরুল ইসলামের দাবি, এখন সিবিআইয়েরই উচিত উপেন বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে কথা বলা। প্রাক্তন আইপিএস নজরুল ইসলাম বলেন, "উনি তো ডেঞ্জারেস তথ্য দিলেন। উনি সিবিআইয়ে যান বা না যান, সিবিআইয়ের উচিত ওনার সঙ্গে কথা বলা। উনি যেটা সত্ ভাবে বলছেন মানছি। কিন্তু যে সময়ের কথা বলছেন, তখন তিনি মন্ত্রিসভায় ছিলেন। তার এই প্রচেষ্টা করে।
২০১১ সালে বাগদা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে ভোটে লড়ে জয়ী হন উপেন বিশ্বাস। তাঁকে অনগ্রসর ও শ্রেণিকল্যাণ মন্ত্রী করা হয়। কিন্তু ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাগদা থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও, হেরে যান তিনি। প্রাক্তন মন্ত্রীর দাবি, ২০১৮ সালের পর থেকে তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর আর কোনও সম্পর্ক নেই।