(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
Anubrata Mandal Arrested: ‘গরুচোরের মেয়ে, কিছু বলার মুখ আছে!’ আদালতে তীব্র কটাক্ষের মুখে পড়লেন অনুব্রত কন্যা সুকন্যা
Cattle Smuggling Case: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো বৃহস্পতিবার দুপুরে, কলকাতা হাইকোর্টে পৌঁছন সুকন্যা।
কলকাতা: বাবার পাপে মেয়ে শাস্তি পাচ্ছেন বলে একদিন আগেই মন্তব্য করেছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) পৌঁছতে তার আঁচ পেলেন গরুপাচার মামলায় গ্রেফতার অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল (Sukanya Mandal)। আদালত চত্বরে তাঁকে লক্ষ্য করে উড়ে এল ‘গরুচোরের মেয়ে’ কটাক্ষ (Cattle Smuggling Case)। অনুব্রত কন্যাকে দেখে ক্ষোভ উগরে দিলেন এক নাগরিক।
টেট পাসের নথি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে অনুব্রত-কন্যা
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো বৃহস্পতিবার দুপুরে, কলকাতা হাইকোর্টে পৌঁছন সুকন্যা। তাঁকে দেখে ভিড় উপচে পড়ে আদালত চত্বরে। তার মধ্যে দিয়ে পুলিশি ঘেরাটোপে আদালতে ঢোকেন সুকন্যা। সেই সময়ই তাঁকে লক্ষ্য করে উড়ে আসে একের পর এক কটাক্ষ। পেশায় প্রাথমিক শিক্ষিকা সুকন্যা টেট উত্তীর্ণ কিনা, তা নিয়ে প্রশঅন উঠতে শুরু করেছে। সেই নথি জমা দিতেই আদালতে সুকন্যা। আর সেখানেই কটাক্ষ শুনতে হল তাঁকে।
চিনার পার্কের বাড়ি থেকে এ দিন আদালতে পৌঁছন সুকন্যা। সেখানে তাঁকে ঘিরে ধরে সংবাদমাধ্যম। তিনি আদৌ টেট উত্তীর্ণ কিনা জানতে চাওয়া হয়। কিছু বলতে চান কিনা, জানতে চায় সংবাদমাধ্যম। কিন্তু কোনও মন্তব্য করেননি সুকন্যা। বরং ভিড় কাটিয়ে সটান আদালতে ঢুকে যান তিনি। আর তখনই তাঁকে লক্ষ্য করে কটাক্ষ উড়ে আসে। সুকন্যার নীরব কেন প্রশ্ন করলে, পাশ থেকে এক মালতী মিত্র নামের মহিলাকে বলতে শোনা যায়, ‘কিছু বলতে পারবে না। বলার মতো মুখ নেই। কী করেছে জানেন ন না! জানেন না কী অন্যায় করেছে!’’ তার মধ্যেও নীরবেই এগোতে থাকেন সুকন্যা। মুখে ছিল মাস্ক। তাতে মালতী বলেন, ‘‘মুখটা দেখান, একটা ছবি তুলি!’’
এর পর সরাসরি অনুব্রতকে নিয়ে সুকন্যাকে বিঁধতে শুরু করেন মালতী। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘বাবা গরু চোর, তাঁর মেয়ে। এঁদের এত গার্ড করে নিয়ে যাচ্ছেন!’’ কেমন সুকন্যাকে আক্রমণ করছে জানতে চাইলে মালতী বলেন, ‘‘বাবার কুকীর্তি জানেন না! বাবা কী করেছে! একটা এইট পাস লোক। মাছের ব্যবসায়ী ছিল। কোটি কোটি টাকা আয় করেছেন। সমস্ত টাকার হিসেব দিতে পারবেন! আমরা গরিব মানুষ না কেয়ে মরছি।’’
আরও পড়ুন: Anubrata Mondal: 'মেয়ে পাস করেছে, সার্টিফিকেট আছে', মুখ খুললেন অনুব্রত
নিয়োগের দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে শহরের বুকে আন্দোলন করছেন টেট উত্তীর্ণরা। তাঁর পরিবারের কোনও সদস্যও কি পাস করে চাকরি পাননি! জানতে চাওয়া হয়, মালতীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমার বাড়িক কেউ পরীক্ষা দেয়নি। তৈরি করব কী করে! তৈরি করব, আর তার পর রাস্তায় পড়ে থাকবে ছ’মাস, ন’মাস ধরে। কেউ বিচার করবে না! এদের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। আমরা ন্যায় চাই।’’
সুকন্যা বোলপুরের বাড়ির কাছেরই একটি স্কুলের শিক্ষিকা। কিন্তু স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তিনি স্কুলে যান না। বাডি়তে বসেই বেতন নেন। এমনকি হাজিরার খাতা পর্যন্ত তাঁর বাড়িতে আসে। সুকন্যা টেট পাস করেননি বলে অভিযোগ উঠে আসে। অনুব্রতর আরও পাঁচ ঘনিষ্ঠ এবং আত্মীয়ও পরীক্ষায় পাস না করেই চাকরি পেয়েছেন বলে অভিযোগ। সেই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এই মামলা ওঠে। তারই প্রেক্ষিতে,বিচারপতি নির্দেশ দেন, বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টের মধ্যে অনুব্রত কন্যা সহ এই ৬ জনকে টেট পাসের সার্টিফিকেট এবং চাকরির নিয়োগপত্র নিয়ে আদালতে হাজির হতে হবে।
আদালত চত্বরে তীব্র কটাক্ষের মুখে সুকন্যা
সেই মতোই এ দিন নথিপত্র নিয়ে আদালতে পৌঁছন সুকন্যা। কিন্তু সেখানে তীব্র কটাক্ষের মুখে পড়তে হয় তাঁকে। তাঁকে কটাক্ষ করে মালতী বলেন, ‘‘একশো বার বলব গরু চোর। মেয়ের নামে কোটি কোটি টাকা। সাধারণ মানুষের টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। জজসাহেবরা বোকা নন। আদালত আছে বলে বেঁচে রয়েছি আমরা।’’ মেয়ের চাকরি নিয়ে প্রশ্নের মুখে অনুব্রত যদিও আত্মবিশ্বাসীই। এ দিন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যাওয়ার সময় তিনি জানিয়ে দেন, মেয়ে টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তাই কোনও চিন্তা কারণ নেই।