TET List : যখন জানলেন পাশ করেছেন, তখন পেরিয়েছে বয়স, কেউ জেনারেল হয়েও সংরক্ষিত লিস্টে !
৮ বছর পর সোমবার, তনুশ্রী জানতে পেরেছেন তিনি ইন্টারভিউতে বসার জন্য পর্যাপ্ত নম্বর পেয়েছেন। অথচ, এখন তাঁর বয়স ৪৫!
কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, এবিপি আনন্দ, কলকাতা : ৮ বছর বাদে আদালতের নির্দেশে অবশেষে প্রকাশিত হয়েছে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণদের তালিকা। কিন্তু সেই তালিকা ঘিরেও এখন নানা প্রশ্ন-নানা বিভ্রান্তি! যার জেরে বহু চাকরিপ্রার্থীই হাজির হচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসে হাজির হন।
'বাড়িতে কী বলব? এখন কী করব?'
যেমন, ঠাকুরপুকুরের বাসিন্দা তনুশ্রী সিংহ জানালেন, ২০১৪ সালে টেট দিয়েও ইন্টারভিউতে বসতে পারেননি। ফলে ভেবেছিলেন, তিনি পাস করতে পারেননি। ৮ বছর পর সোমবার, তনুশ্রী জানতে পেরেছেন তিনি ইন্টারভিউতে বসার জন্য পর্যাপ্ত নম্বর পেয়েছেন। অথচ, এখন তাঁর বয়স ৪৫! তাই হিসেব মতো চাকরি পাওয়ার বয়স পেরিয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, ' ৮ বছর লাগল পাস করেছি জানতে। বাড়িতে কী বলব? এখন কী করব? দায় কে নেবে?'
জেনারেল হয়েও তিনি সংরক্ষিত হয়ে গেলেন কীভাবে
বাঁকুড়ার বাসিন্দা অতুল চট্টোপাধ্যায়। ২০১৪ সালে জেনারেল ক্যাটেগরিতে পাস করে ইন্টারভিউতে বসেছিলেন। এখন তিনি দেখছেন, তাঁর নাম সংরক্ষিত তালিকায়। ইন্টারভিউতে বসার মতো পর্যাপ্ত নম্বরও নেই। ফলে অতুলের প্রশ্ন, জেনারেল হয়েও তিনি সংরক্ষিত হয়ে গেলেন কীভাবে? নম্বর না থাকা সত্ত্বেও, ইন্টারভিউ-ই বা দিলেন কী করে?
শুক্রবার ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ, ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৯৫২ জনের নম্বর প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু, সেই তালিকায় দেখা যায়, অনেক পরীক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর, রোল নম্বর আছে কিন্তু নাম নেই!
হাইকোর্টের নির্দেশে, ২০১৪-র টেটে যাঁরা ৮২ পেয়েছেন, সেই ৭ হাজার ৬৬৫ জন পরীক্ষার্থীর নামের তালিকাও শুক্রবার প্রকাশ করে পর্ষদ। কিন্তু, সেখানেও দেখা যায়, কোনও পরীক্ষার্থীরই নাম নেই ।
তালিকা প্রকাশের পরও অব্যাহত বিভ্রান্তি!
সোমবারের তালিকা প্রকাশের পরও অব্যাহত বিভ্রান্তি! ২০১৪ এবং ২০১৭-র টেটে ৮২ নম্বর পাওয়া প্রার্থীদের, এবার আবেদনের সুযোগ পাওয়ার কথা। কিন্তু, তাঁদের অনেকেরই দাবি, তাঁরা আবেদন করতে পারছেন না। এই পরিস্থিতিতে এদিন নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পর্ষদ জানায়, ২০১৪’র টেটে যেসব প্রার্থীরা ৮২ নম্বর পেয়েছেন এবং পর্ষদ যাঁদের টেট উত্তীর্ণ ঘোষণা করেছে, তাঁরা ২১ নভেম্বর পর্যন্ত প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে আবেদন করতে পারবেন। নথি হিসেবে তাঁদের টেটের অ্যাডমিট কার্ড ও মাধ্যমিকের অ্যাডমিট কার্ড বা বয়সের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে।
প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের এই জট ৮ বছর ধরে বজায় রয়েছে। আর কতদিন এই জটিলতার ফাঁসে, অনিশ্চয়তার দোলাচলে ভুগবেন চাকরিপ্রার্থীরা? সেটাই তাঁদের প্রশ্ন।