West Bengal Health Services: সরকারি হাসপাতালে বেসরকারি নার্সিং কলেজ ও স্কুল, রাজ্যের বিজ্ঞপ্তিতে তুঙ্গে বিতর্ক
Private Nursing College & School: রাজ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক নার্স তৈরি করতে, গ্রামীণ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুপারস্পেশালিটি পরিষেবা প্রদান করতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে রাজ্য সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে।
সন্দীপ সরকার, কলকাতা: সরকারি হাসপাতালের জমিতে তৈরি হবে নার্সিং স্কুল এবং কলেজ, তার জন্য আগামী ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে টেন্ডার প্রক্রিয়া। কিন্তু রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। নার্সিং প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের যেখানে চাকরি দিতে পারছে না সরকার, সেখানে আরও নার্স তৈরি করে কী হবে, প্রশ্ন তুলছে নার্সেস ইউনিটি এবং সংগঠন। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বেসরকারিকরণের প্রচেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ চিকিৎসকদের একাংশেরও। যদিও স্বাস্থ্য পরিস্থিতির উন্নতির জন্যই এমন উদ্যোগ বলে মত চিকিৎসকদের অন্য একটি অংশের। (West Bengal Health Services)
রাজ্যে পর্যাপ্ত সংখ্যক নার্স তৈরি করতে, গ্রামীণ এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের মতো পরিষেবা প্রদান করতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে রাজ্য সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছে। সেই জন্যই সরকারি জমিতে নার্সিং খুলতে বেসরকারি সংস্থাগুলির কাছ থেকে টেন্ডার চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিল রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্যভবনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রথম ধাপে ১০ বছরের জন্য সরকারি হাসপাতালের জমিতে নার্সিং কলেজ এবং স্কুল খুলতে পারবে বেসরকারি সংস্থাগুলি। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরে আরও ১০ থেকে সর্বোচ্চ ৩৩ বছরের জন্য জমির ইজারা দেওয়া হবে। (Private Nursing College & School)
রাজ্য সরকার যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক পর্যায়ে একটি মেডিক্যাল কলেজ, একটি জেলা হাসপাতাল এবং ১৪টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে কলকাতার বিসি রায় শিশু হাসপাতাল, শ্রীরামপুর ওয়ালস, বনগাঁ, কালনা, গঙ্গারামপুর, ইসলামপুর, বারুইপুর, মালবাজার, শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল, ফালাকাটা, ছাতনা, বড়জোড়া, গোপীবল্লভপুর, শালবনী, ডেবরা এবং হলদিয়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল।
আরও পড়ুন: Birbhum News: কবে লোকসভা ভোট শুরু ? ক'দফায় নির্বাচন ? বীরভূমের বিজেপি নেতার দাবি ঘিরে শোরগোল
রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৬০ থেকে ১০০ জন পড়ুয়া নিয়ে নার্সিং কলেজ এবং স্কুল চালু করতে যাবে। তাদের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে নার্সেস ইউনিটি সংগঠন। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেন, "প্রশিক্ষণ পেয়ে নার্সরা বসে রয়েছেন। তাঁদের নিয়োগ নেই। প্রশিক্ষিত হয়ে যাঁরা বেরোবেন, তাঁদের কোথায় নিয়োগ করা হবে? যে নার্সিং কলেজ এবং স্কুলগুলি রয়েছে, সেগুলির পরিকাঠামো ঠিক করা হচ্ছে না কেন? আমরা এই বেসরকারিকরণের তীব্র আপত্তি জানাচ্ছি।"
সরকারি হাসপাতালের জমিতে বেসরকারি সংস্থার নার্সিং কলেজ এবং স্কুল নিয়ে আপত্তি তুলছেন চিকিৎসকদের একাংশও। অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস-এর সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, "এভাবে বেসরকারি স্কুল, কলেজ খুলে লাভ কী? আসলে স্বাস্থ্য পরিষেবার বেসরকারিকরণের চেষ্টা চলছে। সরকারের টাকা রোজগারের একটা রাস্তা।" যদিও পশ্চিমবঙ্গ মেডিক্যাল কাউন্সিলের সদস্য, চিকিৎসক কৌশিক বিশ্বাস বলেন, "এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। এতে চিকিৎসা পরিষেবার মান বাড়বে।" ২৪ জানুয়ারি টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে, বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিয়ে আগ্রহী সংস্থাগুলির সঙ্গে স্বাস্থ্যভবনে বৈঠকও ডাকা হয়েছে বলে খবর।