West Bengal Governor: ‘খুব খারাপ পরিস্থিতি, এভাবে চলতে পারে না’, দ্রৌপদী মুর্মুকে রিপোর্ট রাজ্যপালের, তাহলে কি রাষ্ট্রপতি শাসন?
CV Ananda Bose: রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল বোস।

কলকাতা: বছর ঘুরলেই বিধানসভা নির্বাচন পশ্চিমবঙ্গে। তার আগে রাজ্যকে নিয়ে রিপোর্ট দিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাষ্ট্রপিত দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের পরিস্থিতি তুলে ধরলেন। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে বার বার সওয়াল করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। সেই আবহে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজ্যপালের এই সাক্ষাৎ ঘিরে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, রাজ্যের পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ বলে রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছেন তিনি। (CV Ananda Bose)
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের পর এদিন সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল বোস। তিনি বলেন, "বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আমার মনে হয়েছে, পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ। এভাবে চলতে পারে না।" তাহলে কি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মতো রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষে সওয়াল করলেন তিনি? রাজ্যপাল বোস বলেন, "গণতন্ত্রে ভিন্নমত থাকে। রাজ্যপাল হিসেবে সবকিছু বিবেচনা করে দেখা উচিত, মাঠে গিয়ে পরিস্থিতি দেখে তবেই কিছু সুপারিশ করা উচিত আমার। রাজ্যপাল হিসেবে কী সুপারিশ করব, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। কিন্তু কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।" (West Bengal Governor)
ত্রাণ দিতে গিয়ে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গে আক্রান্ত হন বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। সেই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান রাজ্যপাল বোস। তিনি বলেন, "ব্যক্তিগত এবং পেশাগত সম্পর্ক আলাদা। মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা আছে আমার। ওঁর সঙ্গে পেশাদার যোগাযোগ বন্ধ হয়নি। কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে, আমার নিজের দৃষ্টিভঙ্গি আছে, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ওঁরও আছে।" রাজ্যের পুলিশ ঠিক মতো কাজ করছে না বলেও জানান তিনি। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানান। অভিযুক্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার না করা হলে, সংবিধান মেনে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, এমনটাও জানান তিনি।
বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। অন্য বারের মতো এবারও হিংসাত্মক ঘটনা দেখা দিলে কী হবে, তাও জানতে চাওয়া হয় রাজ্যপালের কাছে। তিনি বলেন, "গ্রাউন্ড জিরোর পরিস্থিতি আমি জানি। সব রিপোর্ট পাঠানো হয়। মুখ্য়মন্ত্রী বলছেন, গুরুতর কিছু ঘটেনি। আমি জানি গুরুতর ঘটনা ঘটেছে। আমি নিজে এলাকায় গিয়ে কথা বলি মানুষের সঙ্গে, তাঁদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করি। বাংলায় যা ঘটছে, তা হওয়া উচিত নয়। না বলার সময় এসেছে। উপযুক্ত পদক্ষেপ করার সময় এসেছে।" কিন্তু রাষ্ট্রপতির কাছে কী পদক্ষেপ সুপারিশ করেছেন তিনি, ঠিক কী কথা হয়েছে রাজ্যকে নিয়ে, তা খোলসা করেননি রাজ্যপাল বোস।
আগামী দিনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক-সহ আর যেখানে যেখানে যাওয়ার প্রয়োজন যাবেন বলেও জানিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। উত্তরবঙ্গের বিপর্যয় পরিস্থিতি নিয়েও নিজের মতামত তুলে ধরেন তিনি। রাজনৈতিক দোষারোপ, পাল্টা দোষারোপে না গিয়ে, পরিস্থিতি মোকাবিলার রাস্তা খুঁজতে হবে বলে জানালেও, বিপর্যয় নিয়েও রাষ্ট্রপতিকে যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তা জানাতে ভোলেননি।
তবে রাজ্যপালের মন্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। দলের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্য়ায় বলেন, "এসব বলে উনি রাজনীতিতে গা গরম করছেন।" কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জনের মতে, সমস্যা দেখলে রাজ্যের উপর চাপ সৃষ্টি করা উচিত রাজ্যপালের। তা না করে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এসব বলে নিজের পদমর্যাদা খর্ব করছেন তিনি।






















