Weather Update Cyclone Mocha : গভীর নিম্নচাপ থেকে আজই পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় মোকা ! কোন দিকে ধেয়ে যাবে ?
বাংলায় ঘূর্ণিঝড় মোকা-র উল্টো প্রভাব পড়েছে। ঝড়-বৃষ্টি দূর অস্ত, দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে লু বইবার হাল !
সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা : ঝড়-বৃষ্টি দূর অস্ত, দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে লু-এর ( Heatwave ) পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এদিকে গভীর নিম্নচাপ ( Deep Depression ) বুধবারই পরিণত হবে ঘূর্ণিঝড় মোকা-য়( Mocha ) । বৃহস্পতিবার তা আরও শক্তিশালী হবে। কিন্তু বাংলায় ঘূর্ণিঝড় মোকা-র উল্টো প্রভাব পড়েছে। ঝড়-বৃষ্টি দূর অস্ত, দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে লু বইবার হাল !
কবে ল্যান্ডফল
ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবার সময় এটি ক্রমশ উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। কিছুটা তামিলনাডু উপকূলের দিকে এগিয়ে একটি পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করবে। বৃহস্পতিবার ১১ই মে এটি আরো শক্তি সঞ্চয় করে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি আবার বাঁক নেবে। গতিপথ পরিবর্তন করে এটি ক্রমশ উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে।
আবহবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন ১৪ই মে সকাল থেকে ১৫ ই মে সকালের মধ্যে এটি বাংলাদেশ অথবা মায়ানমার উপকূল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করবে। স্থলভাগে প্রবেশ করার সময় এর গতিবেগ হতে পারে ১৫০ কিলোমিটার বা তারও বেশি।
আবহাওয়াবিদদের অনুমান সঠিক হলে ঘূর্ণিঝড় মোকার উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করার সম্ভাবনা অনেকটাই কম। শেষ পর্যন্ত উত্তর বঙ্গোপসাগরে এই সিস্টেম প্রবেশ না করলে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে মেঘলা আকাশ, হালকা বৃষ্টি ও সামান্য ঝড়ো বাতাস ছাড়া আর কোন প্রভাব সেভাবে পড়বে না বলেই অনুমান আবহাওয়াবিদদের। ঘূর্ণিঝড় মোকা কতটা এলাকা নিয়ে বিস্তৃত হয় বা কতটা সময় নিয়ে শক্তিশালী হয় তার ওপরই এখন নির্ভর করছে আমাদের রাজ্যের উপকূলে কতটা প্রভাব পড়বে।
বঙ্গোপসাগর উত্তাল হওয়ার আশঙ্কা
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল হওয়ার আশঙ্কা। বাংলার মৎস্যজীবীদের সমুদ্র যেতে নিষেধাজ্ঞা। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত বাংলা ওড়িশা উপকূলে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। যারা সমুদ্রে রয়েছেন তাদের বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে উপকূলে ফিরতে নির্দেশ আবহাওয়া দফতরের।
বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহ
বুধবার পূর্ব মেদিনীপুর ও কলকাতা ছাড়া দক্ষিণবঙ্গের ( South Bengal ) বাকি জেলাগুলিতে তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাপপ্রবাহ চলবে। উত্তরবঙ্গের মালদা ও দক্ষিণ দিনাজপুরেও তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি হয়েছে।
উত্তরবঙ্গেরও রেহাই নেই
উত্তরবঙ্গের মালদা ও দক্ষিণ দিনাজপুরেও তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি হয়েছে। যদিও আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, শুক্র-শনিবারে উপকূলবর্তী দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে। রবিবার বৃষ্টি বাড়বে। দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়িতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হবে।
মঙ্গলবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল, সল্টলেকে ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আলিপুর ও দমদমে ছিল ৩৮.৯ ডিগ্রি। অন্যদিকে, জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল বাঁকুড়ায়, ৪২ ডিগ্রি। শান্তিনিকেতন, পানাগড় ৪১.৯, পুরুলিয়ায় ৪১.৭, আসানসোল ৪১.৫, কলাইকুণ্ডা ৪১.২, ঝাড়গ্রাম ও বর্ধমান ৪১, মালদা ৪০.৮, মাড়গ্রাম ৪০.৫, বালুরঘাটে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
লু বইবে কোথায় কোথায়
১০ মে বুধবার তাপপ্রবাহের সতর্কতা দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতে। কলকাতা সহ উপকূল এবং পশ্চিমের সব জেলাতেই তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা। বুধবার তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি থাকবে উত্তরবঙ্গের মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে।
১১ মে বৃহস্পতিবার তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা থাকছে দক্ষিণবঙ্গের ৬ জেলার জন্য। বাঁকুড়া পুরুলিয়া পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান বীরভূম পশ্চিম মেদিনীপুর সহ পশ্চিমের জেলাগুলিতে।
কলকাতায় মূলত পরিষ্কার আকাশ। আরো বাড়বে দিনের তাপমাত্রা। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ২৫ শতাংশের কম। বুধবারের মধ্যে শহরের পারদ প্রায় ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি হতে পারে বলে অনুমান আবহাওয়াবিদদের। বেলা বাড়লে লু বইবে।
সমুদ্রে নিম্নচাপ ঘনীভূত হওয়ায় তার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে আন্দামান, নিকোবরে। শুরু হয়েছে ঝড়-বৃষ্টি। বইছে ঝোড়ো হাওয়া। মোকার সতর্কতায় বৃহস্পতিবার বিকেলের মধ্যে মৎস্যজীবীদের পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ফিরে আসতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে বারণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন :