West Midanpore: ২ বছর ধরে বন্ধ মেদিনীপুরের হাসপাতালে থ্যালাসেমিয়া কেয়ার ইউনিট, বিপাকে রোগীরা
Medinipur Medical Hospital: অশক্ত শরীর, হাতে রক্ত নেওয়ার জন্য চ্যানেল। সেই অবস্থাতেই কখনও হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেঝে। কখনও বারান্দায় শুয়ে রক্ত নিতে হচ্ছে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের।
সৌমেন চক্রবর্তী, মেদিনীপুর: ২ বছর ধরে বন্ধ মেদিনীপুর মেডিক্যাল হাসপাতালের (Medinipur Medical Hospital) থ্যালাসেমিয়া কেয়ার ইউনিট। ফলে বেডের অভাবে হাসপাতালের মেঝেতে শুয়েই রক্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক ও রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান।
বন্ধ থ্যালাসেমিয়া কেয়ার ইউনিট: অশক্ত শরীর, হাতে রক্ত নেওয়ার জন্য চ্যানেল। সেই অবস্থাতেই কখনও হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেঝে। কখনও বারান্দায় শুয়ে রক্ত নিতে হচ্ছে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের। উপায় না থাকায়, অসহায়ভাবে তা দেখতে হচ্ছে রোগীর পরিজনদের।এই ছবি, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার প্রায় ৭০০ থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত এবং ঝাড়গ্রাম জেলার প্রায় ৪০০ জন আক্রান্তের, রক্ত নেওয়ার জন্য ভরসা এই হাসপাতালটি। অথচ বেডের অভাবে এভাবেই মেঝেতে শুয়ে রক্ত নিতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা।
এক থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তের মা জানাচ্ছেন, “বাচ্চাকে নিয়ে মাসে ৩ বার করে ব্লাড দিতে আসি এখানে। এখানের পরিষেবা খুবই খারাপ। বাচ্চাদের সঙ্গে ব্যবহারও ঠিকঠাকভাবে করা হয় না। মাটিতে শুইয়ে ব্লাড দেওয়া হয়। ডাক্তারবাবুরা বলেন, থ্যালাসেমিয়া কোন এমার্জেন্সি পেশেন্ট নয়, কোন গুরুত্ব দেয় না।’’ হাসপাতাল সূত্রে খবর, ২০২০ সালে হাসপাতালের থ্যালাসেমিয়ার ডে কেয়ার ইউনিটটিকে কোভিড ইউনিট হিসাবে ব্যবহার করা হয়।যার জেরে বর্তমানে থ্যালাসেমিয়া আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নির্দিষ্ট কোন ইউনিট নেই। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল ওয়ার্ড মাস্টার সঞ্জীবকুমার গোস্বামী বলেন, “পেশেন্ট বেশি আসলে তো উপায় নেই। আমরা ব্যবস্থা করব যাতে পেশেন্টের অসুবিধা না হয়। আমাদের তো স্পেস কম আছে।’’
এব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থার আবেদন জানিয়ে শুক্রবার হাসপাতালে কিছুক্ষণ ধর্না দেন রোগীর পরিজনরা। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা জেলাশাসক আয়েশা রানি বলেন, “ইতিমধ্যেই সুপারকে বলা হয়েছে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের ভালো জায়গা দেওয়ার জন্য। আর এই ইউনিট আগে কোভিডের জন্য ব্যবহার হচ্ছিল বলে শুনেছিলাম। সেই জায়গাটা রিপেয়ারের কাজ বাকি আছে। সেটা রিপেয়ার করে আগে যেখানে ছিল, সেই জায়গাটাতে নতুন করে ব্যবস্থা করা হবে।’’
বিজেপির মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি সমিতকুমার মণ্ডল বলেন, এখান থেকেই বোঝা যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যব্যবস্থা কোন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে? থ্যালাসেমিয়ার রোগী, সেখানে শিশুরা আছে, তাদের ব্লাড চেঞ্জ করতে হয়। তাদের আলাদা ইউনিটের প্রয়োজন আছে। এবং এটা আগে ছিল, আমরা দেখেছি কোভিডের পরে এটাকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে চুরে গেছে।
মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, “বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে তো বেহাল চিকিৎসা ব্যবস্থা, পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে বেরোলেই বোঝা যাবে ত্রিপুরাতে কি আছে, উত্তরপ্রদেশে কি আছে। বাস্তবে এরা ভালো চান না। ভালো এরা দেখতে পান না। এদের কথা ধরার মানে নেই। আমিও সুপারকে অনুরোধ করব যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব থ্যালাসেমিয়া পেশেন্টদের জন্য সংরক্ষিত বেডের ব্যবস্থা করুন।’’