'Maharaj': জয়দীপ নন, 'মহারাজ' সিনেমার খলনায়কের চরিত্রে পরিচালকের প্রথম পছন্দ ছিলেন ইরফান খান
Irrfan Khan: সম্প্রতি 'মহারাজ' ছবির জন্য আয়োজিত এক সাংবাদিত বৈঠকে পরিচালক সিদ্ধার্থ পি মলহোত্র বলেন, এই ছবির খলনায়কের চরিত্রের জন্য প্রথম ভাবা হয়েছিল প্রয়াত অভিনেতা ইরফান খানের কথা।
নয়াদিল্লি: সদ্য মুক্তি পেয়েছে আমির খানের (Aamir Khan) ছেলে জুনেইদ খান (Junaid Khan) অভিনীত প্রথম ছবি 'মহারাজ' (Maharaj)। ছবিতে অপর প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারকা অভিনেতা জয়দীপ অহলাওয়াত (Jaideep Ahlawat)। ছবির গল্প ও শিল্পীদের দারুণ অভিনয় ওটিটিতে এই বছরের অন্যতম দেখা সিনেমা হতে সাহায্য করেছে। জুনেইদ, জয়দীপ ছাড়াও অভিনয় করেছেন শর্বরী ওয়াঘ, শালিনী পাণ্ড্যে। খলনায়কের চরিত্রে দেখা গিয়েছে জয়দীপকে, এবং এবারেও তাঁর অভিনয় ক্ষমতা তাক লাগিয়েছে দর্শককে। তবে জানেন কি এই চরিত্রের জন্য পরিচালকের প্রথম পছন্দ জয়দীপ নয়, বরং ছিলেন ইরফান খান (Irrfan Khan)।
জয়দীপ নন, 'মহারাজ' ছবির জন্য পরিচালকের প্রথম পছন্দ ছিলেন ইরফান খান
সম্প্রতি 'মহারাজ' ছবির জন্য আয়োজিত এক সাংবাদিত বৈঠকে পরিচালক সিদ্ধার্থ পি মলহোত্র বলেন, এই ছবির খলনায়কের চরিত্রের জন্য প্রথম ভাবা হয়েছিল প্রয়াত অভিনেতা ইরফান খানের কথা। তিনি বলেন, 'ঈশ্বর ওঁর আত্মাকে শান্তি দিন। আমাদের মতে, এই চরিত্রে ইরফান খান ছাড়া আর কেউ অভিনয় করতে পারতেন না।'
পরিচালকের মতে, জয়দীপ বেশ চাপেই ছিলেন, এবং বারবার বলতে থাকেন যে কেউ ইরফানের মতো করতে পারবেন না। পরিচালক বলেন, 'উনি (জয়দীপ অহলাওয়াত) অনিশ্চিত ছিলেন যে কীভাবে এটা করবেন। আমরা কৃতজ্ঞ যে স্যর রাজি হন এবং আমাদের সঙ্গে যোগ দেন। প্রতিটি চলচ্চিত্রের জন্য তিনি যতটা ভালবাসা পান সেটা তাঁর প্রাপ্য।'
'মহারাজ' ছবির প্রসঙ্গে
১৮৬২ সালের মহারাজ লিবেল মামলার উপর নির্ভর করে 'মহারাজ' ছবির গল্প বুনেছেন পরিচালক সিদ্ধার্থ পি মালহোত্র। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখে বোনা ছবির গল্পের দুই মূল চরিত্র, সাংবাদিক তথা সমাজ সংস্কারক করসনদাস মুলজির চরিত্রে অভিনয় করছেন জুনেইদ। বল্লভাচার্য গোষ্ঠীর প্রধান, ধর্মগুরু যদুনাথ ব্রিজরতন মহারাজের চরিত্রে রয়েছেন জয়দীপ অহলাওয়াত। (Maharaj Libel Case) যে ঘটনাকে ছবির বিষয়বস্তু করে তুলেছেন সিদ্ধার্থ, সেটি পরাধীন ভারতের ঘটনা। ১৮৬২ সালে বম্বে হাইকোর্টে মহারাজ লিবেল মামলাটি ওঠে। ধর্মাচারের নামে যদুনাথ মহারাজের বিরুদ্ধে মহিলা শিষ্যদের যৌন উৎপীড়নের অভিযোগ তোলেন মুলজী। তাঁর নির্ভীক সাংবাদিকতা, তদন্তমূলক রিপোর্ট, শুধুমাত্র অপরাধচক্রেরই পর্দাফাঁস করেনি, সমাজে ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের গুরুত্বও বাড়িয়ে তোলে। কিন্তু অজস্র মানহানির মামলার মুখে পড়তে হয় মুলজীকে। হেনস্থা হতে হয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে।
১৮৩২ সালে গুজরাতের ভাবনগরে বৈষ্ণব পরিবারে জন্ম মুলজীর। তাঁর পরিবার বল্লভাচার্যের অনুগামী ছিল। পুশতিমার্গ গোষ্ঠী নামেও পরিচিত তাঁর পরিবার,যাদের ধর্মগুরুকে মহারাজ বলেসম্বোধন করা হতো। ২৩ বছর বয়সে নিজের পত্রিকা 'সত্যপ্রকাশ'-এর প্রতিষ্ঠা করেন মুলজী। ১৮৫৫ সালে নিজের পত্রিকায় 'হিন্দুও নো আসলি ধর্ম আনে অত্যার্ন পাখন্ডি মাতো' শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন মুলজী, বাংলায় যার অর্থ 'হিন্দুদের প্রকৃত ধর্ম এবং এখনকার দ্বিচারিতা'।
ওই প্রতিবেদনে মুম্বইয়ে মহারাজদের ধর্মাচরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়ার পর বল্লভাচার্য গোষ্ঠীর অন্য মহারাজরা সুরতের যদুনাথ মহারাজের দ্বারস্থ হন। মুলজীর মোকাবিলা করতে আহ্বান জানান তাঁকে। এর পর যদুনাথ মহারাজের তরফে মানহানি মামলা ঠোকা হয় মুলজী এবং নানাভাই রানিনা নামের একজনের বিরুদ্ধে।
সেই মামলার শুনানি চলাকালীন মোট ৩১ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করেন যদুমাথ মহারাজ। মুলজী খামোকা মহারাজদের বদনাম করছেন বলে সাক্ষ্য দেন তাঁরা। এর পাল্টা মুলজী ৩৩ জন সাক্ষীকে আদালতে হাজির করেন, যাঁরা ধর্মচগুরু এবং তাঁদের আচরণের বিরুদ্ধে বম্বের তদানীন্তন সুপ্রিম কোর্টে সাক্ষ্য দেন। দীর্ঘ শুনানিপর্ব চলে সেই সময়। শেষ পর্যন্ত তদানীন্তন বিচারপতি জোসেফ আর্নল্ড মুলজীর যে রায় দেন, তা মুলজীর পক্ষেই যায়।
আরও পড়ুন: Mukesh Ambani: বউমা রাধিকার 'বিদাই' অনুষ্ঠানে চোখ ছলছল ধনকুবের মুকেশ আম্বানির, ভাইরাল ভিডিও
ওই মামলা নিয়ে সেই সময় প্রচুর লেখালেখি হয় দেশ-বিদেশের পত্র-পত্রিকায়। রায় দিতে গিয়ে সেই সময় বিচারপতি আর্নল্ড বলেন, "একজন সাংবাদিক আসলে সমাজের শিক্ষক। আধুনিক সমাজের অন্যতম স্তম্ভ সংবাদমাধ্যম, যার আসল কাজ হল, সমাজকে শিক্ষিত করা, সমাজকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং বুজরুকির খপ্পর থেকে সমাজকে জ্ঞানের আলোয় উৎসারিত করা।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।