Sandip Roy Birthday: সত্যজিৎ রায় পর্দায় আনতে পারেননি 'এলিয়েন'-কে, স্বপ্নপূরণ করেছিলেন পুত্র সন্দীপ
Director Sandip Roy's Birthday: প্রফেসর শঙ্কু প্রধানত কল্পবিজ্ঞানের গল্প। কিন্তু সেই গল্পকে ফুটিয়ে তোলার জন্য যে প্রযুক্তির প্রয়োজন ছিল, টলিউডে তখন না পাননি সত্যজিৎ রায়, স্বপ্নপূরণ করেছিলেন সন্দীপ।
কলকাতা: তিনি হেঁটেছেন বাবার পথেই.. তবে নিজের ছন্দে। পুরোদমে পরিচালনায় আসার আগে, বাবার সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে শ্যুটিংয়ে গিয়েছেন তিনি। সংগ্রহ করেছেন অমূল্য সব অভিজ্ঞতা। তাকেই কাজে লাগিয়ে তিনি পর্দায় একের পর এক গল্প বুনেছেন। তবে পর্দায় যে চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে পারেননি খোদ সত্যজিৎ রায় (Satyajit Roy), সেই স্বপ্নপূরণ করেছিলেন ছেলে। সন্দীপ রায় (Sandip Roy)। কিংবদন্তি এই পরিচালকের আজ জন্মদিন।
সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্ট 'ফেলুদা' সকলের মধ্যে জনপ্রিয় শুধু উপন্যাসের জন্য নয়, রুপোলি পর্দার জন্যও। দীর্ঘ সময় পেরিয়েও, এখন চোখ বুঁজলে বাঙালির ফেলুদা হিসেবে মনে পড়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chatterjee)-কেই। সেই 'ফেলুদা'-কে দর্শকদের সামনে প্রথম এনেছিলেন সত্যজিৎই। পরবর্তীতে সন্দীপ রায়ের হাত ধরে পর্দায় একাধিক অভিনেতা ফেলুদা হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ফেলুদার চরিত্রে অভিনয় করেছেন সব্যসাচী চক্রবর্তী (Sabyasachi Chakraborty)। কিন্তু সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্ট আরও এক কিংবদন্তি চরিত্র, তাঁর সময় আবদ্ধ রয়ে গিয়েছিল গল্পের বইতেই। চেষ্টা করেও তাকে পর্দায় আনতে পারেননি সত্যজিৎ। সেই চরিত্র ছিল প্রফেসর শঙ্কু। বাবার অপূর্ণ সেই স্বপ্নপূরণ করেছিলেন সন্দীপ রায়। আজ, পরিচালকের জন্মদিনে শোনা যাক সেই গল্প।
প্রফেসর শঙ্কু প্রধানত কল্পবিজ্ঞানের গল্প। কিন্তু সেই গল্পকে ফুটিয়ে তোলার জন্য যে প্রযুক্তির প্রয়োজন ছিল, টলিউডে তখন না পাননি সত্যজিৎ রায়। এবিপি লাইভকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এ নিয়ে সন্দীপ রায় বলেছিলেন, 'বাবা ভীষণ শঙ্কুর ছবি করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু পারেননি। সেইসময় টেকনোলজির এত উন্নতি ছিল না। বাবার আমেরিকান প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে কাজ করার একটা কথা হয়েছিল। 'এলিয়েন' বলে একটি চিত্রনাট্যও লিখেছিলেন সেজন্য। গিয়েছিলেন হলিউডেও। কিন্তু সেখানে ওঁর একটা তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়। হলিউডের ছবি দেখতে ভালবাসতেন, কিন্তু হলিউডের সঙ্গে কাজ করাটা ওঁর পোষাল না।'
সেই শঙ্কুকে পর্দায় আনার সাহস দেখিয়েছিলেন সন্দীপ রায়। অনেকেই নাকি তাঁর কাছে অনুরোধ করতেন, ফেলুদার পরে, শঙ্কুকে নিয়ে একটা ছবি করার জন্য। সন্দীপ রায় শঙ্কুর ছবি তৈরি নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে এবিপি লাইভকে বলেছিলেন, 'একটা সময় আমার মনে হয়েছিল, শঙ্কুকে পর্দায় আনা যায়, তবে গল্পটা সঠিকভাবে বাছতে হবে। আমি 'এল ডোরাডো' গল্পটা নিলাম কারণ তখন আমার মনে হয়েছিল ওটাই সবচেয়ে সোজা। শুধু শঙ্কু নয়, নকুড়বাবুকেও আমার খুব পছন্দ। নকুড়বাবু রয়েছেন মানেই বাংলা ভাষার ছোঁয়া থাকবে। আমি চেয়েছিলাম পুরো কাজটা কলকাতায় করতে। শ্যুটিং বাইরে হলেও, এডিটিংয়ের যাবতীয় কাজ হয়েছিল কলকাতায়। মনে হয়েছিল, দেখিয়ে দেওয়া উচিত আমরাও পারি। যতটুকু স্পেশাল এফেক্টসের কাজ ছিল, সব কলকাতাতেই হয়েছে। বুক ফুলিয়ে আমি বলতে পারি, শঙ্কু এক্কেবারে বাংলাতেই তৈরি।'
বাবা যে শঙ্কুতে পর্দায় আনতে পারেননি, সেটাই করে দেখিয়েছিলেন ছেলে। সেই ছবির সাফল্যে বাবার কথা মনে পড়েছিল? সন্দীপ রায় জানিয়েছিলেন, তিনি অনুভব করেন বাবা সবসময় বাড়িতেই রয়েছেন। তবে শ্যুটিংয়ের পরে ছবির রাফ কাট বাবাকে না দেখাতে পারার আফশোস হয় এখনও। তবে রয়ে গিয়েছে তৃপ্তি.. বাবা চেয়েছিলেন শঙ্কু হোক বাংলায়, সেটাই করে দেখিয়েছিলেন সন্দীপ রায়।