Tarun Majumdar Death: শহর ছেড়ে উত্তম-সমিতদের দেশে পাড়ি তরুণ মজুমদারের, ফিরে দেখুন প্রিয় পরিচালকের ফ্রেমটা
Tarun Majumdar Death : শহর ছেড়ে চিরতরে উত্তম-সমিত ভঞ্জের দেশে পাড়ি দিলেন তরুণ মজুমদার।
কলকাতাঃ শহর ছেড়ে চিরতরে উত্তম-সমিত ভঞ্জের দেশে পাড়ি দিলেন তরুণ মজুমদার (Tarun Mazumdar)। নেই কোনও আর 'চাওয়া-পাওয়া', শুধুই এশহরের হৃদয়ের গভীরে রয়ে গেলেন বাঙালির প্রথম 'ভালোবাসা ভালোবাসা'-র পরিচালক (Film Maker)।
মহানায়ক ও মহানায়িকাকে ফ্রেমবন্দি করলেন তরুণ মজুমদার
সাল ১৯৫৯। তখন কলকাতার দোতালা বাসের ছড়াছড়ি। কালো অ্যাম্বাসেডর থেকে মাঝেসাঝে নেমে আসতে দেখা যায় কালো মোটা ফ্রেমের স্টাইলিশ চশমা পরা বাবুদেরকে। ট্রামের জানলা সিটে তখন ময়দানের তাজা হাওয়া। সাদা ধুতি পরা, ব্যাকব্রাশ করা চুলে অফিস পাড়া তখন যেমন ব্যস্ত, তেমন স্মার্ট। আর ঠিক তেমন একটা সময়ে মহানায়ক ও মহানায়িকাকে ফ্রেমবন্দি করলেন তরুণ মজুমদার। ১৯৫৯ সালেই উত্তম-সূচিত্রা জুটিকে নিয়ে বানালেন 'চাওয়া-পাওয়া'। এদিকে তখনও ঘুমের দেশে মুরগী বিক্রেতার প্রেমিকা ( 'ভালোবাসা ভালোবাসা' ছবিতে তাপস পাল)। আজ্ঞে হ্যাঁ। 'চাওয়া-পাওয়া' ছবির মুক্তির ঠিক দুই বছর পরেই এ শহরে জন্ম নিলেন 'ভালোবাসা ভালোবাসা'-র নায়িকা দেবশ্রী রায়। ১৯৮৫ সালে এই ছবি বানিয়ে বাঙালির হৃদয় ছুঁয়ে ফেললেন তরুণ মজুমদার। চলুন এবার একটু ফ্ল্যাশব্যাকে যাওয়া যাক।
বাঙালি সিনেমা হলে বারবার ফিরেছে, তরুণ মজুমদারের ছবি দেখবে বলে
১৯৫৯ থেকে ১৯৮৫ সালের মাঝের সময়টায় বাঙালি সিনেমা হলে বারবার ফিরেছে, তরুণ মজুমদারের ছবি দেখবে বলে। কারণ ততদিনে তিনি উপহার দিয়ে ফেলেছেন তাঁর প্রথম জাতীয় পুরষ্কার প্রাপ্ত ছবি কাঁচের স্বর্গ (১৯৬২)। এরপরে পলাতক, নিমন্ত্রণ, সংসার সীমান্তে (১৯৭৫), গণদেবতা এই সব ছবি গুলিই বাঙালির মন টানে। ষাটের শেষের দিকে তৈরি করেন বালিকা বধু। এরপর ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে বাঙালি যা পেয়েছে তরুণ মজুমদারের থেকে, তা কোনও দিনও ভূলবে না।
বাঙালির শয়নে-স্বপনে শুধুই তরুণ মজুমদার
তখনও ভূল চিকিৎসার শিকার হননি সমিত ভঞ্জ। তরুণের ফ্রেমে, তখন তিনি সন্ধ্যা রায়ের কথা ভেবে, হেমন্তের কণ্ঠে লিপ দিচ্ছেন, তুমি শতদল হয়ে ফুটলে সরোবরে, আমি ভ্রমর হইতে পারিলাম না। মনের মণিকোঠায় পৌছে গেলেন তরুণ মজুমদার। এশহর তাঁর জন্য চিরকালিন জায়গা করে দিল, দিল সম্মান,আর অনেক ভালোবাসা। ১৯৭৪ সালে তিনি বানিয়েছিলেন 'ফুলেশ্বরী।' এবং ঠিক ওই বছরের শুরুতেই কুহেলী (১৯৭১), শ্রীমান পৃথ্বীরাজ (১৯৭৩), দাদার কীর্তি (১৯৮০), বাঙালির শয়নে-স্বপনে শুধুই তরুণ।
প্রতিভাবান এই বাঙালি পরিচালকের ঝুলিতে রয়েছে ৪ টি জাতীয় পুরষ্কার
১৯৩১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের বগুড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন তরুণ মজুমদার। রসায়ন নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে পরবর্তীকালে চলচ্চিত্র পরিচালনাই পেশা হিসেবে বেছে নেন স্কটিশচার্চ কলেজের এই প্রাক্তনী। প্রতিভাবান এই বাঙালি পরিচালকের ঝুলিতে রয়েছে ৪ টি জাতীয় পুরষ্কার, ৭ টি বিএফজেএ সম্মান, ৫ টি ফিল্ম ফেয়ার পুরষ্কার, একটি আনন্দলোক পুরষ্কার। ১৯৯০ সালে তরুণ মজুমদারকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়। যদিও এ শহরের থেকে সবথেকে বড় পুরষ্কার তিনি পেয়েছেন যেটা, তা হল মানুষের ভালোবাসা। তাই তরুণকে নিয়েই যে যেতে চায়, এ শহর আরও এক আলোকবর্ষ।