MahaShivratri 2021: ত্রিপত্র বেলপাতায় তুষ্ট হন দেবাদিদেব, ব্রত-মাহাত্ম্য
MahaShivaratri and its Importance in Mythology: শাস্ত্রে বেলগাছকে প্রণাম করার মন্ত্রও উল্লেখ রয়েছে। নমো বিল্বতরবে সদা শঙ্কররুপীণে/সকলানি মমাঙ্গানি কুরুস্ব শিবহর্ষদ। এবার শিবরাত্রির মাহাত্ম্যকথা একবার পড়ে নেওয়া যাক।
বিশ্বাস, শিবরাত্রিতে যথাযথ নিয়ম মেনে বেলপাতা সহযোগে পুজো করলে ভগবান তুষ্ট হন। আরও বিশ্বাস, বেলপাতায় দেবাদিদেব যতটা তুষ্ট হন, ততটা আর কোনও কিছুতে হন না। শিবরাত্রি মাহাত্ম্য পাঠ করতে গিয়ে ব্যাধের গল্প যাঁরা পড়েছেন, তাঁরা জানেন, একটি বেলপাতা ও উপবাসে ভগবান কতটা তুষ্ট হয়েছিলেন। কিন্তু কেন গুরুত্বপূর্ণ এই বেলপাতা ? বিশ্বাস, বেলপাতা ত্রিপত্র অর্থাৎ তিনটি পাতা সমেত হলেই দেবাদিদেব মহাদেব তুষ্ট হন। তিনটি পাতা, পুজো, স্তোত্র ও জ্ঞানের প্রতীক। তিনটি পাতায় ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বরের অধিষ্ঠান। মাঝের পাতাটিতে মহেশ্বর, বাঁ দিকের পাতাটিতে ব্রহ্মা এবং ডানদিকের পাতাটিতে বিষ্ণুর অধিষ্ঠান বলে বিশ্বাস রয়েছে। কেউ কেউ বেলপাতাকে ভগবান শিবের ত্রিশূল ও ত্রিনয়নের আধার বলেও মনে করেন।
শাস্ত্রে বেলগাছকে প্রণাম করার মন্ত্রও উল্লেখ রয়েছে। নমো বিল্বতরবে সদা শঙ্কররুপীণে/সকলানি মমাঙ্গানি কুরুস্ব শিবহর্ষদ। এবার শিবরাত্রির মাহাত্ম্যকথা একবার পড়ে নেওয়া যাক।
কথিত আছে, অতীতে ভয়ংকর এক ব্যাধ বাস করত। চেহারায় যেমন ছিল আক্রমণাত্মক ছাপ তেমনই আচরণ ছিল নিষ্ঠুর। একদিন সে শিকারে গিয়ে অনেক পশু মেরে ফেলে। তারপর বাড়ির দিকে রওনা হয়। পথে ক্লান্তি আসে। বিশ্রাম নেওয়ার জন্য একটি গাছের তলায় বসে সেই ব্যাধ। দিনের ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়ল একসময়ে। রাত হল। ঘুম ভেঙে ঘন অন্ধকার দেখে একটা গাছে ওঠার চেষ্টা করল ব্যাধ। হিংস্র জন্তুর ভয়। তা থেকে বাঁচতেই নিজে একটা বেলগাছে উঠল ব্যাধ। মৃত পশুগুলিও গাছে বেঁধে রাখল। ঠান্ডা ছিল। খিদেও পেয়েছিল প্রচুর। সারারাত গাছেই জেগেই কাটাল ব্যাধ।
সেই গাছের নিচে ছিল শিবলিঙ্গ। ঘটনা চক্রে ওই রাত ছিল শিবচতুর্দশী। অজান্তেই সে রাতে দেবাদিদেবের পুজো করে ফেলেছিল। কীভাবে ? সারারাত উপোস করেছিল ব্যাধ। তার গা থেকে শিশির ঝরে পড়েছিল শিবলিঙ্গের উপর। আর ব্যাধের শরীরের নড়াচড়ায় গাছ থেকে ঝরে পড়েছিল বেলপাতা। এভাবে নিজের অজান্তে শিবরাত্রি পালন করেছিল ব্যাধ। অর্জন করেছিল শিবরাত্রি পূজার পুণ্যও। পরদিন সকালে নিজের বাড়ি ফিরে গিয়েছিল ব্যাধ।
আরও পড়ুন : শিবরাত্রি করবেন বলে ঠিক করেছেন? চারপ্রহরের পুজো-সংক্ষেপ
কথিত আছে, মৃত্যুকালে ব্যাধের আত্মাকে নিতে হাজির হয় যমদূত। আর শিবলোক থেকেও দূত এসে তার আত্মাকে নিয়ে যেতে উদ্যোগী হয়। দু'পক্ষে শুরু হয় ঝামেলা। পরে শিবলোক প্রেরিত দূত ব্যাধের আত্মাকে নিয়ে চলে যায়। সেখানে হাজির হন যমদূত স্বয়ং। দেখা হয় নন্দীর সঙ্গে। প্রশ্ন করেন, সারাজীবন অপরাধ, কুকর্ম করেও কীভাবে শিবলোকে ? নন্দীর উত্তর ছিল, সারাজীবন কুকর্ম করলেও একদিনের শিবরাত্রি ব্রতের পুণ্য ব্যাধ লাভ করেছে এবং সে কারণেই তার শিবলোক প্রাপ্তি। বিশ্বাস, ক্রমে ক্রমে এই মাহাত্ম্য প্রচারিত হয়।
ভক্তিভরে শিবরাত্রি ব্রত পালন করলে মনস্কামনা পূর্ণ হয় বলে ভক্তরা বিশ্বাস করেন।
শিবপ্রণাম মন্ত্র - নম: শিবায় শান্তায় কারণত্রয়হেতবে । নিবেদয়ামি চাত্মানং গতিস্ত্বং পরমেশ্বর। নমস্তুভ্যং বিরুপাক্ষ নমস্তে দিব্যচক্ষুষে। নম পিণাকহস্তায় বজ্রহস্তায় বৈ নম :। নমস্যে ত্বাং মহাদেব লোকানাং গুরুমীশ্বরম। পুংসামপূর্ণকামানাং কামাপূরামরাঙ্ঘ্রিপম।।