Winter Skin Care: শীতের মরশুমে ত্বকের সঙ্গে সঙ্গে মারাত্মক রুক্ষ হয়ে যায় ঠোঁট এবং চুলও, বাড়ি বসেই কীভাবে যত্ন করবেন? রইল কসমেটোলজিস্টের টিপস
Winter Skin Care Tips: ত্বকের মোলায়েম ভাব এবং উজ্জ্বলতা শীতের মরশুমেও বজায় রাখার মূল চাবিকাঠি হল ত্বক ডিহাইড্রেটেড হতে দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ ত্বকের মধ্যে জলের ঘাটতি হতে দেওয়া যাবে না একেবারেই।
Winter Skin Care: জাঁকিয়ে শীত এখনও পড়েনি ঠিকই। তবে বাতাসে শিরশিরানি ভালভাবেই অনুভব করা যাচ্ছে। আর তাই এখন থেকেই ত্বকের যত্ন (Winter SKin Care Tips) নেওয়া শুরু করা সরকার। বছরের সব মরশুমেই ত্বকের সঠিক পরিচর্যা (Skin Care Tips) প্রয়োজন। তবে। শীতকালে একটু বেশিই যত্নের দরকার। বিশেষ করে যাঁদের ত্বক রুক্ষ এবং শুষ্ক (Dry Skin) প্রকৃতির তাঁদের ক্ষেত্রে ত্বকের পরিচর্যার দিকে শীতের মরশুমের শুরু থেকেই মন দেওয়া প্রয়োজন। বাড়ি বসে সহজে কীভাবে এই শীতের আপনার ত্বকের মোলায়েম এবং উজ্জ্বল ভাব বজায় রাখবেন সেই প্রসঙ্গেই কিছু টিপস দিয়েছেন কসমেটোলজিস্ট (Cosmetologist) সায়ন্তন দাস। তাঁর কথায় শীতের দিনে আমাদের ত্বক অত্যন্ত সেনসিটিভ এবং ডিহাইড্রেটেড হয়ে যায়। ত্বকের জেল্লাভাব কমে যায়। তাই দরকার সঠিক যত্নের।
স্কিন ময়শ্চারাইজড এবং হাইড্রেটেড রাখতে হবে
ত্বকের মোলায়েম ভাব এবং উজ্জ্বলতা শীতের মরশুমেও বজায় রাখার মূল চাবিকাঠি হল ত্বক ডিহাইড্রেটেড হতে দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ ত্বকের মধ্যে জলের ঘাটতি হতে দেওয়া যাবে না একেবারেই। এই জন্যই প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়া প্রয়োজন। এছাড়াও নিয়ম করে ময়শ্চারাইজার লোশন এবং ক্রিম ম্যাসাজ করতে হবে ত্বকে। বাড়ির বাইরে বেরোলে অবশ্যই ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা প্রয়োজন। এছাড়াও স্নানের পর এবং রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে, এই দু'বার অবশ্যই ত্বকে ক্রিমের ব্যবহার দরকার। জলের সঙ্গে সঙ্গে ত্বকের হাইড্রেশন বজায় রাখার জন্য খেতে পারেন ফলের রস, ডাবের জল এইসব পানীয়। এছাড়াও ক্রিম এবং ময়শ্চারাইজার লোশন ছাড়া বাকি যে উপকরণগুলি ত্বকের মোলায়েম ভাব বজায় রাখবে সেগুলিও জেনে রাখা দরকার। নারকেল কিংবা ডাবের জল, ক্যাস্টর অয়েল, অলিভ অয়েল, শসার রস, দুধের সর, টকদই- এইসব উপকরণ আপনি ত্বকে হাইড্রেশন অর্থাৎ জলের পরিমাণ সঠিকভাবে বজায় রাখার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। ক্রিম ম্যাসাজের মতোই শীতের মরশুমে ত্বকে অয়েল ম্যাসাজও খুব দরকার। এছাড়াও পানীয় হিসেবে মেনুতে রাখতে পারেন আখের রস। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণ গ্লাইকোলিক অ্যাসিড থাকে যা আপনার ত্বকের কালচে ভাব দূর করে উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সাহায্য করবে।
শীতের মরশুমে আলাদা করে যত্ন প্রয়োজন ঠোঁটের
অনেকের ক্ষেত্রেই শীতের দিনে মারাত্মক ঠোঁট ফাটার প্রবণতা দেখা যায়। এর একটা কারণ অবশ্যই ডিহাইড্রেশন। তাই জল খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। এছাড়াও গোলাপের পাপড়ি বেটে নিয়ে দুধের সরের সঙ্গে মিশিয়ে সেই মিশ্রণ ঠোঁটে ব্যবহার করতে পারলে রুক্ষ এবং শুষ্ক ভাব দূর হবে অল্প সময়ের মধ্যেই।
ত্বক এবং ঠোঁটের মতো শীতের মরশুমে ভীষণভাবে রুক্ষ হয়ে যায় চুল
চুলের শাইন অর্থাৎ চকচকে ভাব বজায় রাখার জন্য টক দই, সামান্য মধু এবং জোজোবা অয়েল, রোজমেরি অয়েল, অলিভ অয়েল মিশিয়ে একটি হেয়ার প্যাক তৈরি করে তা মিনিট ১৫ চুলে লাগিয়ে রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। পার্থক্যটা নিজেই বুঝতে পারবেন। উল্লিখিত উপকরণের সবকিছুই আজকাল বাজারে বিভিন্ন দোকানে কিংবা অনলাইনে কিনতে পাওয়া যায়। তাই খুব একটা অসুবিধা হবে না এই হেয়ার প্যাক তৈরি করতে।
শীতের দিনে ফেসিয়াল কিংবা ফেস ম্যাসাজ কতটা জরুরি
সায়ন্তন জানিয়েছেন, ১৫ দিনে একবার ফেস ম্যাসাজ করতে পারেন। এর ফলে আমাদের ফেসিয়াল মাসল বা পেশীগুলি টোনড অর্থাৎ টানটান থাকে। এছাড়াও ফ্রেশ ক্রিমের সঙ্গে অল্প একটু হলুদ এবং সামান্য তেল মিশিয়ে সেই মিশ্রণ দিয়ে মুখে ম্যাসাজ করতে পারলে ভাল। কস্তুরী হলুদ এবং অরেঞ্জ অয়েল ব্যবহার করতে পারলে সবচেয়ে ভাল। নাহলে বাড়িতে যা উপলব্ধ রয়েছে তা দিয়েই তৈরি করুন মিশ্রণ। এই ফেসপ্যাক আপনার ট্যানের কালচে দাগছোপ দূর করবে নিমেষে।
আজকাল আমরা সকলেই ব্যস্ত। তাই দৈনন্দিন জীবনের ত্বকের পরিচর্যা কিংবা চুলের যত্ন করার সময় খুব কমই পাওয়া যায়। তবে সায়ন্তনের এই সহজ টিপসগুলো মেনে চলতে পারলে আপনার সময় এবং পরিশ্রম দুটোই কম লাগবে। অথচ আপনি অল্প সময়েই উপকার পাবেন। খালি নিজের ত্বক এবং চুলে যেসব প্রোডাক্ট ব্যবহার করছেন তার ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিন। ত্বক এবং চুলের ধরন অনুসারে প্রোডাক্ট বা ঘরোয়া সামগ্রী যা আপনি পরিচর্যায় ব্যবহার করবেন তা বেছে নেওয়া প্রয়োজন। আপনি বুঝতে না পারলে অতি অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নিতে হবে। আর শীতের মরশুম মানে যেহেতু বিয়ের সময়, সঙ্গে অনেক অনুষ্ঠান-উৎসব, তাই চাইলে আপনি হাইড্রা ফেসিয়াল, ল্যাকটিক স্কিন ট্রিটমেন্ট (এক্ষত্রে ত্বকে ময়শ্চার বা আর্দ্র ভাব লক থাকে), ফায়ার অ্যান্ড আইস ফেসিয়াল করাতে পারেন। এই জাতীয় ট্রিটমেন্টের জন্য কলকাতার বিভিন্ন ক্লিনিকগুলিতে খরচ মোটামুটি ১৮০০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন- হিমোগ্লোবিন মানবদেহের জন্য কেন প্রয়োজনীয়? কীভাবে বুঝবেন এই উপকরণের ঘাটতি হয়েছে?