স্বাস্থ্যসাথী কার্ডই হয়ে উঠল সঞ্জীবনী, অস্ত্রোপচারের পর মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন বীরভূমের চা বিক্রেতা
অবস্থার অবনতি হওয়ায় বর্ধমানে রেফার করা হয়। কিন্তু আর্থিক অনটনের জেরে সেই সামর্থটুকুও ছিল না সাউ পরিবারের। এগিয়ে আসে সিউড়ি পুরসভা।
গোপাল চট্টোপাধ্যায়, বীরভূম: ভোটের আগে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে তুঙ্গে উঠেছে শাসক-বিরোধী চাপানউতোর। কিন্তু সেই ‘স্বাস্থ্যসাথী কার্ড’ই সঞ্জীবনী হয়ে দাঁড়াল সিউড়ির চা বিক্রেতা বছর ৪০-এর টিঙ্কু সাউয়ের কাছে। দুটো ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে, আর স্ত্রী। নুন আনতে পান্তা ফুরনোর সংসারে একমাত্র আয় বলতে ছোট্ট চায়ের দোকান! রবিবার সেই দোকান থেকে ফেরার পথেই একটি স্কুটারের ধাক্কায় গুরুতর জখম হন চা বিক্রেতা। তড়িঘড়ি ভর্তি করা হয় সিউড়ি সদর হাসপাতালে।
অবস্থার অবনতি হওয়ায় বর্ধমানে রেফার করা হয়। কিন্তু আর্থিক অনটনের জেরে সেই সামর্থটুকুও ছিল না সাউ পরিবারের। এগিয়ে আসে সিউড়ি পুরসভা। তৃণমূল নেতা তথা সিউড়ি পুরসভার প্রশাসক অঞ্জন করের তত্পরতায় মঙ্গলবার স্বাস্থ্যসাথী কার্ড করে দেওয়া হয় টিঙ্কুর। আর সেই কার্ড নিয়ে এদিনই সিউড়ির এক বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার হয় তাঁর। স্ত্রী তপসী সাউ এবিপি আনন্দকে জানান, ‘‘খুব সমস্যায় পড়েছিলাম ৷ আমার স্বামীকে সিউড়ি থেকে বর্ধমান হাসপাতালে রেফার করা হয় ৷ আমি দাদাদের কাছে যাই ৷ সবাই সহযোগীতা করায় একদিনের মধ্যে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে পাই ৷ এরপর আমার স্বামীর অস্ত্রোপচার হয় ৷ আমাদের ছোট চায়ের দোকান ৷ আমাদের পক্ষে চিকিৎসার খরচ দেওয়া সম্ভব নয় ৷ দরখাস্ত করার সঙ্গে সঙ্গেই স্বাস্থ্যসাথী কার্ড হাতে পাই ৷ আমার স্বামী এখন সুস্থ ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনেক অনেক ধন্যবাদ ৷’’
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, জেলা সদর হাসপাতালেই কেন অস্ত্রোপচার করা গেল না! সমালোচনার সুর বিজেপির গলায়। বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো বলেন, ‘‘জেলায় কোনও হাসপাতালে ডাক্তার নেই। স্বাস্থ্যসাথীর নামে ভাওতাবাজি চলছে।’’ অস্ত্রোপচারের পর আপাতত সুস্থ রয়েছেন ওই ব্যক্তি।