Drug Quality Test: জ্বরের ট্যাবলেট থেকে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম...কী নেই! ৪৪ ওষুধে বিপদ, নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন
Medinipur News: চিকিৎসকরা বলছেন, এসব ওষুধ শরীরে গেলে, রোগীদের কোনও উপকারই হবে না। উল্টে বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা: ওষুধের গুণমান ঠিক না হলে, তার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। কিন্তু, এরকম নিম্নমানের কোনও ওষুধ আমাদের শরীরেও যাচ্ছে না তো? আশঙ্কাটা তৈরি হচ্ছে, কারণ সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে সম্প্রতি বলা হয়, এই মুহূর্তে প্রায় ৪৪ রকমের নিম্নমানের ওষুধ গোটা দেশের বাজারে রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, এসব ওষুধ শরীরে গেলে, রোগীদের কোনও উপকারই হবে না। উল্টে বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (Drug Quality Test)
রাজ্য়ে উৎপাদনে ও ব্য়বহারের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই ওষুধ দেওয়াতেই, মেদিনীপুর মেডিক্য়াল কলেজে এক প্রসূতির মৃত্য়ুর অভিযোগ উঠছে। একদিনের শিশু মাকে হারাল চিরতরে। অনেকে বলছেন, ওষুধের গুণগত মান ঠিক না হলে, তা যে কী ভয়ঙ্কর হাতে পারে, তার ঠিক নেই! (Medinipur News)
কিন্তু, এরকম কোনও ওষুধ আমার-আপনার বা আমাদের বাড়ির লোকের শরীরে যাচ্ছে না তো? আশঙ্কাটা থেকে যাচ্ছে, কারণ সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে সম্প্রতি বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে প্রায় ৪৪ রকমের নিম্নমানের ওষুধ গোটা দেশের বাজারে রমরমিয়ে বিক্রি হচ্ছে।
চিকিৎসক অজয় সরকার বলেন, "এগুলো হিমশৈলের চূড়া মাত্র। এরকম অসংখ্য আছে। ভেজাল আছে, ওষুধ দিলেও কাজ হচ্ছে না। গুণগত মান খারাপ বলেই। ডাক্তাররাও জানতে পারছেন না। রোগীকে প্রেসক্রাইব করে দিচ্ছেন। কাজ না হলে আবার অন্য ওষুধ। আরও বেশি নজরদারি প্রয়োজন।"
যে ৪৪টি নিম্নমানের ওষুধের কথা জানা গিয়েছে, তার মধ্য়ে কোন কোন ওষুধ আছে শুনলে আপনিও চমকে উঠবেন! অ্যান্টি বায়োটিক, হার্টের সমস্য়ার ওষুধ, ডাইরিয়া, প্য়ারাসিটামল! এসব ওষুধ যে কোনও বাড়িতে খুঁজলেই পাওয়া যাবে। এমনকি জ্বর, পেট খারাপের মতো সমস্য়ায় অনেকে নিজে থেকেই খেয়ে নেন।
সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, এই ওষুধগুলির উপাদানের মধ্য়ে ভেজাল মেশানো রয়েছে। ড্রাগ কন্ট্রোল সূত্রে খবর, নভেম্বরে যে নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল, তার রিপোর্টের ভিত্তিতে এই সতর্কতা জারি করা হয়েছে। একথা শোনার পর অনেকেই একরাশ আশঙ্কা নিয়ে বলছেন, তাহলে এতদিন যে ওষুধ খেয়েছি, তার মধ্য়েও কি ভেজাল ওষুধ ছিল? ভবিষ্য়তে তার প্রতিক্রিয়া কি ভয়ঙ্কর হতে পারে?
রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগের প্রাক্তন ডিরেক্টর কৃষ্ণাংশু রায় বলেন, "নট অফ স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি কী? নির্দিষ্ট গুণমানের নীচে হলে সেটিকে নট অফ স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি বলে হয়। তার মানে এর মধ্যে ভেজাল জিনিসও থাকতে পারে। এই ওষুধ ব্যবহার করলে কী কী ক্ষতি হতে পারে? রোগীদের কোনও উপকারই হবে না। বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি হতে পারে। ড্রাগ রেজিসস্ট্যান্স তৈরি হতে পারে কিছু ক্ষেত্রে।"
সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে নিম্নমানের যে ৪৪টি ওষুধের তালিকা দেওয়া হয়েছে, তাতে রয়েছে প্রোমেথাজিন, গ্লেমেপ্রাইড, অ্যাসপিরিন গ্যাস্ট্রো রেজিসস্ট্যান্স ট্যাবলেট, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন D3 ট্যাবলেট, প্যারাসিটামলের মতো ওষুধ। আরও মারাত্মক বিষয় হল, এই ৪৪ রকমের ওষুধের মধ্যে রয়েছে সিজারের পর রক্তক্ষরণ ঠেকানোর মতো ওষুধও। 'কমপাউন্ড সোডিয়াম ল্য়াকটেট ইনজেকশন' নামক যে ওষুধ ব্যবহার করা হয়, তাতে জীবাণুর উপস্থিতি মিলেছে বলে সেন্ট্রাল ড্রাগ কন্ট্রোলের তরফে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু, এই ধরনের নিম্নমানের ওষুধ এতদিন ধরে বাজারে চলছে কী করে? কোথায় নজরদারি? চিকিৎসক কাজলকৃষ্ণ বণিক বলেন, "এই যে ওষুধের বিষয়...ভবানীপুরের বিষয়ে প্রভাবশালী থাকতে পারে। কারা আছে দেখতে হবে। স্টেট ড্রাগ কন্ট্রোলের আরও ভাল ভাবে নজরদারি চালানো উচিত। কেন করছে না?"
অ্য়াসোসিয়েশন অফ হেলফ সার্ভিস ডক্টরসের সদস্য মানস গুমটা বলেন, "ফেয়ার প্রাইস শপে বিনামূল্যে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। তার গুণগত মান কি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে নিয়মিত? তার ফলাফল কী? কিছুই জানানো হচ্ছে না।"
রোগভোগ থেকে মুক্তি পেতে খেতে ওষুধ খাওয়া। কিন্তু সেই ওষুধেই যদি মেশানো থাকে, ভেজালের বিষ, তাহলে সাঘারণ মানুষ যাবেন কোথায়?
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
