Families Face Social Boycott: সালিশি সভা বসিয়ে সামাজিক বয়কট গ্রামের মাতব্বরদের, প্রশাসনের দ্বারস্থ অসহায় ১৫টি পরিবার
Nandakumar News: গ্রামের মাতব্বরদের কথা না মানায় নন্দকুমারের সন্দলপুর গ্রামের ১৫টি পরিবারকে সামাজিক বয়কট করে রাখার অভিযোগ উঠল। কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে ব্লক প্রশাসন।
বিটন চক্রবর্তী, নন্দকুমার: গ্রামে সালিশি সভা বসিয়ে জরিমানা করা হয়েছিল ১৫টি পরিবারকে। আর সেই জরিমানার টাকা দিতে না পারায় তাদের সামাজিক বয়কট (social boycott) করে,একঘরে করে রাখার অভিযোগ উঠল গ্রামের মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর (East Medinipur) জেলার নন্দকুমারের (Nandakumar) সন্দলপুর গ্রামে। বর্তমানে এই অবিচারের প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে ওই ভুক্তভোগী পরিবারগুলি। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে কমিটি গঠন তদন্ত শুরু করেছে নন্দকুমার ব্লক প্রশাসন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সন্দলপুর গ্রামের গ্রাম কমিটিই সেখানকার থানা-পুলিশ, আইন -আদালত সবকিছুই। এখানে দেশের সংবিধানের থেকেও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় গ্রামের মাতব্বরদের সিদ্ধান্তকে। গ্রাম কমিটির অলিখিত নিয়ম, গ্রামের কোনও বাসিন্দা মাছের ভেড়ি করলে বছরে বিঘাপ্রতি দিতে হবে ৩ হাজার টাকা। গ্রাম কমিটির ছাপানো রসিদেই চলে এই লেনদেন। সেই টাকা কেউ দিতে না পারলে গ্রামে সালিশি সভা বসিয়ে তাঁকে সামাজিক বয়কট করা হয়। এছাড়া কারও জমি নিয়ে শরিকি বিবাদ হলে সেখানেও ঢুকে গ্রামের মাতব্বররা ঢুকে সালিশি সভা বসিয়ে জরিমানা থেকে বয়কট সবই করে থাকে। একটা বা দুটো পরিবার নয়, এই গ্রামে এমনই নানান অজুহাতে অন্তত ১৫টি পরিবারকে সামাজিকভাবে বয়কট করে রাখার অভিযোগ উঠেছে গ্রাম কমিটির বিরুদ্ধে।
এই গ্রামের বাসিন্দা গৌরহরি দাসের দাবি, তিনি ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে নিজের ৮ বিঘা জমিতে মাছের ভেড়ি গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু একবছর মাছের চাষে ক্ষতি হওয়ায় তিনি গ্রাম কমিটির নির্ধারণ করে দেওয়া টাকা দিতে পারেননি। অভিযোগ, তারপর গ্রাম কমিটির মাতব্বররা গ্রামে সালিশি সভা বসিয়ে তাঁর মাছের ভেড়ি বন্ধ করে দেয়। রুটি-রোজগার বন্ধ হয়ে ঋণখেলাপি হয়ে যাওয়ায় ব্যাঙ্ক বাড়ি নিলামের নোটিশও তাঁকে দিয়েছে। ফলে সমস্যায় পড়েছেন ওই ব্যক্তি।
বৃন্দাবন অধিকারী নামে আরও একজন জানান, একই ধরনের জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিষয়ে গ্রাম কমিটি হস্তক্ষেপ করে সালিশি সভার মাধ্যমে তাঁদের সামাজিক বয়কট করে রেখেছে। এই সামাজিক বয়কটের ফলে গ্রামের কোনও সামাজিক বা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে তাঁরা কেউ যোগ দিতে পারেন না। গ্রামের অন্যান্য বাসিন্দারাও আসতে পারেন না তাঁদের বাড়িতে।
যদিও এপ্রসঙ্গে গ্রাম কমিটির সভাপতি রঞ্জিত কুমার হাজরা জানান, কাউকে সামাজিক বয়কট করা হয়নি। যা হয়েছে সেই নিয়ম আগে থেকেই চলে আসছে।
অভিযোগ পাওয়া পরেই প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। নন্দকুমারের বিডিও দীনেশ দে জানান, বিষয়টি জানার পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের রিপোর্ট এলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।