সিএমআরআই: হামলাকারীদের ভয়ে হাসপাতাল ছেড়ে পালালেন চিকিৎসক, কর্মী, রোগীর পরিবার ও নিরাপত্তারক্ষী
কলকাতা: এক রোগীর মৃত্যু ঘিরে হাসপাতালে তাণ্ডবলীলা। আর তার জেরে চরম ভোগান্তিতে অন্য রোগী ও তাদের পরিবার। এক বৃদ্ধ দম্পতি বুধবার সিএমআরআইতে এসেছিলেন ডাক্তার দেখাতে। কিন্তু, আরোগ্য প্রতিষ্ঠানে এই তাণ্ডবলীলা দেখে তাঁরাই আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। মনে হচ্ছিল প্রাণে বেঁচে কোনওমতে হাসপাতাল থেকে বেরোতে পারলে বাঁচেন। আরেক মহিলা তাঁর শাশুড়ির সঙ্গে সিএমআরআইতে আসেন দেড় বছরের মেয়েকে ডাক্তার দেখাতে। ফিরলেন আরও দুঃসহ অভিজ্ঞতা নিয়ে। হাসপাতালের কর্মীদের তো আরও বেগতিক দশা। বিক্ষোভকারীরা যখন হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে জিনিসপত্র আছড়ে ফেলছে, তখন প্রাণভয়ে সেখানে ছুটোছুটি শুরু করে দেন। কেউ কেউ আবার প্রাণভয়ে হাসাপাতালেরই বিভিন্ন ঘরে লুকিয়ে পড়েন। এই পরিস্থিতি দেখে বিক্ষোভকারীদের নিরস্ত করতে এগিয়ে যান হাসপাতালের এক নিরাপত্তারক্ষী।কিন্তু, যারা পুলিশকে তোয়াক্কা করছে না, তারা কি হাসপাতালের কর্মীকে দেখে পিছু হঠার বান্দা! উল্টে ওই নিরাপত্তারক্ষীকেই মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। চড়, ঘুষি, লাথি...কিছুই বাদ যায়নি! সকাল থেকেই টিভির পর্দায় এসব ছবি দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন সিএমআরআইতে ভর্তি রোগীদের পরিবার। নিজের লোকের খবর নিতে তাঁরা ঘন ঘন ফোন করতে শুরু করেন এনকোয়ারিতে। কিন্তু, হামলাকারীরা ততক্ষণে এনকোয়ারি বিভাগ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ফলে ফোনে সাড়া মেলেনি। পড়িমড়ি করে হাসপাতালে ছুটে আসেন রোগীর পরিবারের সদস্যরা। তাঁরাও ১৬ বছরের কিশোরীর মৃত্যুতে ব্যথিত। কিন্তু, এই মানুষগুলির প্রশ্ন, এভাবে ভাঙচুর করে কী লাভ? তাতে তো আর মৃত ব্যক্তি ফিরে আসবে না! হাসপাতালের তরফে গাফিলতি থাকলে সেটা যদি অপরাধ হয়, তাহলে আইন হাতে তুলে নেওয়াও তো তাই। যে নিরাপত্তারক্ষী কয়েকটা হাজার টাকার জন্য চাকরি করেন, তাকে পিটিয়ে তো হাসপাতালকে শিক্ষা দেওয়া যাবে না। তার জন্য দরকার আইনানুগ তদন্ত।