'আমি আবার জীবনকে উপভোগ করতে চাই', আত্মজীবনীতে লিখেছিলেন পার্থ দে, দাবি ঘনিষ্ঠদের
কলকাতা: আগুনে পুড়েই মৃত্যু হয়েছে রবিনসন স্ট্রিটের পার্থ দে’র। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ। তদন্তে ক্রমশ জোরাল হচ্ছে আত্মহত্যার তত্ত্ব। পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, দেহে আঘাতের চিহ্ন নেই। আগুনে পুড়েই মৃত্যু হয়েছে পার্থ দে’র। কিন্তু কীভাবে আত্মঘাতী হলেন পার্থ দে? পুলিশের অনুমান, সোমবার রাতে প্রথমে নিজের মাথায় পেট্রোল ঢালেন তিনি। তারপর আগুন ধরিয়ে দেন । সেইজন্যই পার্থর মাথার ওপরের অংশ ও মুখ সবেচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কখনও পিকনিকে গিয়ে জমিয়ে ক্রিকেট। কখনও অনুষ্ঠানে গান গাওয়া। ক্রমশই স্বাভাবিক জীবনে ফিরছিলেন পার্থ দে। সম্প্রতি হাত দিয়েছিলেন, আত্মজীবনী লেখায়। পার্থর ঘনিষ্ঠদের সূত্রে খবর, তিনি লিখেছেন, আমি আবার পার্থ হতে চাই। জীবনকে উপভোগ করতে চাই। মানুষের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি করতে চাই। কিন্তু হঠাৎ কেন আত্মহত্যা করলেন, জীবনকে উপভোগ করতে চাওয়া পার্থ? উত্তর নেই কারও কাছে। পার্থ আত্মঘাতী হয়েছেন, মানতে নারাজ বন্ধুরা। এমনই এক বন্ধু অনির্বাণ ভদ্র জানান, ও একা ছিল। সংসার করতে চেয়েছিল। দিদিকে খুব ভালবাসত। ঘনিষ্ঠদের সূত্রে খবর, আত্মজীবনীতে বাবা-মা-পরিবারের কথাও লিখেছেন পার্থ। আমার মা অর্থনীতিতে স্নাতক। বাবার সঙ্গে বিয়ের পর ইংল্যান্ডে চলে যান। ভারতে ফেরার পর শ্বশুরবাড়ির পরিবারের সঙ্গে মায়ের বেশ ঝামেলা হয়। পরে প্রোমোশন পেয়ে বাবা দিল্লি চলে যান। আমার জন্ম দিল্লিতেই। সম্প্রতি যাদবপুরের কাছে একটি সংস্থায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিতে যোগ দেন পার্থ। প্রশিক্ষণ নিতে এসে হয়ে উঠেছিলেন প্রশিক্ষক। আত্মজীবনীতে সেই প্রসঙ্গেরও উল্লেখ করেছেন তিনি। পার্থর প্রশিক্ষক জয়া দাসের দাবি, ভীষণ ভাল ছিল, হাসিমুখে কাজ করত। পার্থ দে’র আত্মহত্যার কারণ খুজতে বুধবার সেই সংস্থায় যান তদন্তকারী অফিসাররা। মৃত্যুর দিন কেয়ারটেকারকে এই সংস্থাতেই পাঠিয়েছিলেন পার্থ দে। কম্পিউটার প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে পার্থর একটি পেনড্রাইভ পান তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, সেই পেনড্রাইভে উত্তম কুমারের একাধিক ছবি ও ছবির গান রয়েছে। আত্মহত্যার কারণ খুঁজতে বুধবার পার্থর ওয়াটগঞ্জের ফ্ল্যাটেও যায় ফরেন্সিক অফিসারদের একটি দল। অন্যদিকে, পার্থ দে’র দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য তাঁর কাকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় পুলিশের তরফে। কিন্তু তিনি দেহ নিতে অস্বীকার করেন। ফলে, মর্গের একরাশ দেহের মাঝেই ঠাঁই হল দিদি ও পোষ্যদের দেহ আগলে রাখা পার্থ দে-র।