২০২১ গোড়াতেই চন্দ্রযান-৩ উৎক্ষেপণ, এবার থাকছে না অরবিটার
স্রেফ ল্যান্ডার ও রোভার নিয়ে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দেবে চন্দ্রযান-৩
নয়াদিল্লি: সব ঠিকঠাক চললে আগামী বছর প্রথমার্ধে উৎক্ষেপণ হতে চলেছে চন্দ্রযান-৩ মহাকাশযানের। তবে, ইসরোর চন্দ্রাভিযানের তৃতীয় সংস্করণে থাকবে না কোনও অরবিটার। স্রেফ ল্যান্ডার ও রোভার পাঠানো হবে।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে চাঁদের বুকে অবতরণ করার সময় চন্দ্রযান-২ এর 'হার্ড ল্যান্ডিং'-এর কয়েকদিন পরই ইসরোর তরফে জানানো হয়েছিল, ২০২০ সালে তৃতীয় যান পাঠানো হবে।
কিন্তু, তারপর করোনাভাইরাস অতিমারী ও লকডাউনের ফলে সব প্রকল্পের কাজ পিছিয়ে যায়। বাদ পড়েনি চন্দ্রযান-৩। পরে, সিদ্ধান্ত হয়, ২০২১ সালের গোড়ায় পাঠানো হবে এই মহাকাশযান।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, চন্দ্রযান-২ এর মতোই হবে চন্দ্রযান-৩। তবে তফাত একটাই। এবার কোনও অরবিটার থাকছে না। স্রেফ ল্যান্ডার ও রোভার নিয়ে চাঁদের উদ্দেশে পাড়ি দেবে চন্দ্রযান-৩।
গত বছর ২২ জুলাই উৎক্ষেপিত হয়েছিল চন্দ্রযান-২। গন্তব্য ছিল চাঁদের দক্ষিণ মেরু। সেখানেই অবতরণ করার কথা ছিল ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞানের। কিন্তু, ৭ সেপ্টেম্বর হার্ড ল্যান্ডিং হওয়ায় ভেঙে পড়ে বিক্রম। সেইসঙ্গে ভেঙে যায় প্রথম চেষ্টায় ভারতের চাঁদে সফল অবতরণের স্বপ্ন।
তবে, ওই অভিযানে যে অরবিটার পাঠানো হয়েছিল, তা দিব্যি কাজ করে চলেছে। নিয়মিত ছবি ও তথ্য পাঠাচ্ছে। এর আগে, চন্দ্রযান-১ মহাকাশযানেও ছিল অরবিটার ছিল। সেও ছবি পাঠিয়েছে। যে কারণে, আগামী অভিযানে অর্বাইটার না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জিতেন্দ্র সিংহ জানান, ২০০৮ সালে চন্দ্রযান-১ অরবিটারের পাঠানো ছবি দেখে বিজ্ঞানীরা আন্দাজ করেছেন, চাঁদের মরু অঞ্চলে 'জং' ধরছে। চাঁদের মাটি ও পাথর যে আকরিক লোহায় ভরপুর, তা সকলেরই জানা। কিন্তু, লোহায় জং ধরার জন্য দুটি জিনিসের প্রয়োজন। একটি জল ও দ্বিতীয় অক্সিজেন। তবেই লোহায় জং ধরবে।
এখনও খাতায় কলমে চাঁদে জল ও অক্সিজেনের অস্তিত্বের প্রমাণ মেলেনি। চন্দ্রযান-১ এর পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, চাঁদের মরুঅঞ্চলে জল থাকলেও থাকতে পারে। যে কারণে, চন্দ্রযান-২ এই মরু অঞ্চলেই অবতরণ করার প্রচেষ্টা করে। সফট-ল্যান্ডিং হলে, সম্ভবত যাবতীয় প্রমাণ এতদিনে স্পষ্ট হয়ে যেত।
এদিকে, ভারতের প্রথম মানব-মহাকাশাভিযান 'গগনযান'-এর কাজও দ্রুততার সঙ্গে এগোচ্ছে। অভিযাত্রীদের প্রশিক্ষণ ও যাবতীয় প্রক্রিয়া নির্দিষ্ট গতিতে এগোচ্ছে। করোনার জন্য কাজ সাময়িকভাবে থমকে গেলেও এখন তা দ্রুততার সঙ্গে শেষ করার চেষ্টা চলছে।