(Source: ECI | ABP NEWS)
Mumbai News: ভেতরে ছাত্রদের আর্ত চিৎকার, প্রাণভয়ে কান্না,বাথরুমের কাচ ভাঙল পুলিশ, কীভাবে উদ্ধার পণবন্দিদের?
প্রতিদিনের মতোই অভিনয়ের ক্লাস করতে এসেছিলেন বহু শিশু। সেখানেই তাঁদের পণবন্দি করে দেওয়া হল প্রাণনাশের হুমকি। আগুন লাগিয়ে সবাইকে মেরে ফেলার ভয় দেখানোও হল।

রুদ্ধশ্বাস কয়েক ঘণ্টা। এ যেন চোখের সামনে মৃত্যুকে দেখা। ছোটদের পণবন্দি করে রেখে একের পর এক হুমকি অপহরণকারীর । পুলিশের সঙ্গে গুলি বিনিময় । রক্তক্ষয়। বিনোদনের প্রাণকেন্দ্র মুম্বইতে বৃহস্পতিবার বার যা ঘটল , তা কার্যত সিনেমার স্ক্রিপ্টকেও হার মানায়। অবশেষে পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় অপহরণকারী যুবকের।
মুম্বইয়ের পওয়াইের একটি স্টুডিয়োয় প্রতিদিনের মতোই অভিনয়ের ক্লাস করতে এসেছিলেন বহু শিশু। সেখানেই তাঁদের পণবন্দি করে দেওয়া হল প্রাণনাশের হুমকি। আগুন লাগিয়ে সবাইকে মেরে ফেলার ভয় দেখানোও হল। এখনও সে-কথা ভাবলে শিরদাঁড়ায় শীতল স্রোত বয়ে যাচ্ছে অভিভাবকদের। বৃহস্পতিবার ১৭ শিশুকে পণবন্দি করে রেখেছিল রোহিত আর্য নামে এক যুবক। তার হাত থেকে শিশুদের বাঁচাতে শেষমেষ বাণিজ্যনগরীতে চলল গুলির লড়াই। মারাও গেল সেই যুবক। কিন্তু কে সেই আর্য?
বলা হয়েছিল একটি সিনেমার জন্য অডিশন হবে। সেই মতো বৃহস্পতিবার বিকেলে অভিনয় ক্লাসে জড়ো হয়েছিল অনেক অল্পবয়সী ছেলেমেয়ে। ১৭ জন শিশু, একজন বয়স্ক নাগরিক এবং আরও কিছু প্রাপ্তবয়স্ককে আটকে রাখে রোহিত আর্য। ৩৮ বছর বয়সী রোহিত ওই ঘরটিতে সেন্সর লাগিয়ে দেয়। তারপর বলে চালাকি করলে, আগুন ধরিয়ে দেব!
এদিন ১৫ বছর বয়সী সতেরো জন এসেছিল চলচ্চিত্রের অডিশনের জন্য। কিন্তু ভেতরে ঢুকে পড়ার পর, আর্য হলটি ভেতর থেকে তালাবদ্ধ করে সবাইকে পণবন্দি করে নেয়। কিছুক্ষণ পরেই, বন্দিরা কাচের প্যানেল দিয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে শুরু করলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আলোচনা শুরু হয়। পরবর্তী দুই ঘন্টা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আর্যকে শান্ত করার চেষ্টা করেন, কিন্তু তাতে লাভ হয়নি। আত্মসমর্পণ করতে চায়নি সে। উল্টে সে অফিসারদের সতর্ক করে দেয়, যদি তার শর্তগুলি মেনে না নেওয়া হয়, তাহলে তিনি পণবন্দিদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারবে। এরপর পুলিশ সাহায্যের জন্য দমকল বাহিনীকে ডাকে। দমকলকর্মীরা এসে একটি ছোট বাথরুমের জানালা ভেঙে ফেলে। আটজন কমান্ডোর একটি কুইক রিঅ্যাকশন টিম (QRT) সেই পথ দিয়ে হলের ভেতরে প্রবেশ করে, শুরু করে চূড়ান্ত উদ্ধার কমান্ডোদের দেখা মাত্রই আর্য আগ্নেয়াস্ত্রের মতো দেখতে কিছু একটা তুলে গুলি চালায়। পুলিশ সেটাকে আসল অস্ত্র বলে মনে করে পাল্টা গুলি চালায়। আর্যর বুকে গুলি লাগে। তাকে আটক করে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কিছুক্ষণ পরেই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
জানা গিয়েছে, আর্য দাবি করেছিল, সে সন্ত্রাসবাদী নয়। তার নির্দিষ্ট কিছু দাবি মেনে নিলে সে পণবন্দিদের ছাড়বে। ইন্ডিয়া টুডে সূত্রে খবর, ঘটনার পর তার ফোন থেকে উদ্ধার করা একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, আর্য বলছে, সে অর্থের চেয়ে "নৈতিক ও নৈতিক প্রতিকার" চায়। সে ওও দাবি করে যে, "আমি সন্ত্রাসী নই"। পণবন্দিকারী পুণের বাসিন্দা আর্য, আরএ স্টুডিওতে কাজ করত বলে জানা গিয়েছে। সে একটি ইউটিউব চ্যানেলও চালাত। তবে বে কয়েকদিন ধরে কোনও কারণে সিনেমার অডিশন নিচ্ছিল। নানাভাবে তরুণ প্রার্থী এবং তাদের পরিবারকে আকর্ষণ করার চেষ্টা করছিল । তবে কী সেই সিনেমা, কেউ জানে না। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী দীপক কেশরকরের আমলে তাকে একটি সরকারি টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করে আর্য। আর্য অভিযোগ করেন যে, এই প্রকল্পের জন্য তাকে কখনও অর্থ দেওয়া হয়নি । আগে কেশরকরের বাসভবনের বাইরে সে নাকি একবার বিক্ষোভও দেখিয়েছিল। তবে মহারাষ্ট্র সরকার জানিয়েছে , আর্যের উপস্থাপিত ব্যয়ের বিবরণ "অস্পষ্ট এবং অতিরঞ্জিত" ছিল। তাছাড়া তার প্রস্তাবিত প্রকল্পগুলিতে প্রযুক্তিগত স্পষ্টতা ছিল না বলেই সরকার জানায়। এছাড়া সঠিক নথিপত্রের অভাব ছিল।























