Operation Sindoor: কর্নেল সোফিয়া কুরেশি, উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ, Operation Sindoor-এর ঘোষণায় ভারতের দুই নারী
India Strikes in Pakistan: নারীশক্তিকে এগিয়ে রাখার পাশাপাশি, এই দুই অফিসারকে সামনে রেখে নাগরিকদের ঐক্য এবং সম্প্রীতির বার্তাও দিল ভারতীয় সেনা।

নয়াদিল্লি: পহেলগাঁওয়ে স্বামীহারাদের সম্মান দিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে 'Operation Sindoor' চালিয়েছে ভারত। পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের যে নয়টি জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, তার খুঁটিনাটি দেশবাসী তুলে ধরার সময়ও নারীশক্তিকেই এগিয়ে রাখল ভারতীয় সেনা। গোয়েন্দাদের তথ্য়ের ভিত্তিতে, কী ভাবে জঙ্গিঘাঁটিগুলিকে শনাক্ত করা হল, কী ভাবে আঘাত হানা হল, দেশবাসীকে খুঁটিনাটি বোঝালেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ। নারীশক্তিকে এগিয়ে রাখার পাশাপাশি, এই দুই অফিসারকে সামনে রেখে নাগরিকদের ঐক্য এবং সম্প্রীতির বার্তাও দিল ভারতীয় সেনা।
ভারতীয় সেনার Corps of Signals বিভাগে কর্মরত ৩৫ বছর বয়সি কর্নেল সোফিয়া। ১৯১১ সালে Corps of Signals-এর সূচনা ঘটে। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে এবং যুদ্ধের সময় সামরিক যোগাযোগ সংক্রান্ত সবকিছু এদের তত্ত্বাবধানেই পরিচালিত হয়। জরুরি পরিস্থিতিতে অভিযানের সময় বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ রক্ষার পাশাপাশি, তথ্য়প্রযুক্তির দিকটিও সামলায় Corps of Signals. দেশের প্রথম মহিলা অফিসার হিসেবে বহুদেশীয় সামরিক মহড়ায় নেতৃত্ব দেন সোফিয়া।
বিভিন্ন দেশকে নিয়ে Exercise Force 18-মহড়ার আয়োজন করেছিল ভারত, সেখানে অগ্রভাগে ছিলেন সোফিয়া। ASEAN দেশগুলি যেমন, জাপান, চিন, রাশিয়া, আমেরিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া ছিল অংশগ্রহণকারী দেশ। ২০০৬ সালে কঙ্গোয় রাষ্ট্রপুঞ্জের পিসকিপিং অপারেশনেও যুক্ত ছিলেন কর্নেল সোফিয়া। ২০১০ সাল থেকে পিসকিপিং অপারেশনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত তিনি। সেখানে প্রশিক্ষকের ভূমিকা পালন করেন।
সোফিয়ার রক্তেই দেশসেবা রয়েছে। তাঁর দাদু ভারতীয় সেনায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর স্বামীও মেকানাইসড ইনফ্যান্ট্রিতে কর্মরত। ভারতীয় সেনায় যোগদানে মেয়েদের শুধু অনুপ্রেরণায় জোগাননি, সেনায় মেয়েদের ভূমিকা নিয়ে যে প্রচলিত ধারণা ছিল, তাও পাল্টে দিয়েছেন। ভারতীয় মেয়েদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা ছিল, "সম্ভব হলে অবশ্য়ই ভারতীয় সেনায় যোগ দিন।" ২০১৬ সালে কর্নেল সোফিয়ার ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট জেনারেল বিপিন রাওয়াত।
অন্য দিকে, উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ কেরিয়ার শুরু করেন ভারতীয় বায়ুসেনার হাত ধরে। স্কুলজীবনেই বায়ুসেনায় যোগ দেওয়ার স্বপ্ন দেখতেন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা। তিনি এক সন্তানের মা-ও। নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে NCC-র সদস্যতা গ্রহণ করেন তিনি। পরে ভর্তি হন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে। তাঁর পরিবার থেকে তিনিই ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীতে যোগদানকারী একমাত্র সদস্য। ভারতীয় বায়ুসেনার হেলিকপ্টার পাইলট হিসেবে প্রথমে জায়গা করে নেন। ২০১৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর ফ্লাইং ব্রাঞ্চে পাকাপাকি জায়গা পান।
২৫০০ ঘণ্টার বেশি ওড়ার রেকর্ড রয়েছে উইং কমান্ডার ব্যোমিকার। দুর্গম এলাকায় চেতক, চিতার মতো হেলিকপ্টার উড়িয়েছেন। জম্মু ও কাশ্মীর এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের আকাশ তাঁর একেবারে চেনা। একাধিক উদ্ধারকার্য চালিয়েছেন উইং কমান্ডার ব্যোমিকা। ২০২০ সালে অরুণাচলপ্রদেশ উদ্ধারকার্যেও অগ্রভাগে ছিলেন।
২০২১ সালে তিন বাহিনীর মহিলাদের সঙ্গে মিলে পর্বত অভিযানে বেরোব। ২১ হাজার ৬৬০ ফুট উঁচু মাউন্ট মানিরাংয়ে আরোহণ করেন। ভারতীয় সেনায় মেয়েরা যে নামভূমিকায় উঠে আসছেন, তার জলজ্যান্ত উদাহরণ উইং কমান্ডার ব্যোমিকা। আজ গোটা দেশের সামনে কর্নেল সোফিয়া এবং উইং কমান্ডার ব্যোমিকা আবারও দৃষ্টান্ত গড়লেন।























