Bengal Doctor : ১০ দিনের "রুদ্ধশ্বাস" লড়াইয়ে করোনামুক্ত, সদ্যোজাতকে হাতে তুলে নিলেন চিকিৎসক
করোনাকে পরাস্ত করে প্রথমবার নিজের সদ্যোজাত সন্তানকে হাতে তুলে নিলেন ২৫ বছরের মহিলা চিকিৎসক।
কলকাতা : ১০ দিনের "রুদ্ধশ্বাস" লড়াই। শেষমেশ করোনাকে পরাস্ত করলেন ২৫ বছরের এক মহিলা চিকিৎসক। লড়াই শেষে প্রথমবার হাতে তুলে নিলেন নিজের সদ্যোজাত সন্তানকে।
আরফা সাজাদিন। তিনি যখন ৩৭ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা, সেই সময় করোনায় আক্রান্ত হন। সংক্রমিত অবস্থাতেই এক ফুটফুটে সন্তানের জন্ম দেন। এরপর তাঁকে হাওড়ার ILS হাসপাতালের ভেন্টিলেটরে ভর্তি করা হয়।
ওই হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার কনসালট্যান্ট কৌশিক নাহা বিশ্বাস বলেন, চিকিৎসক আরফার ডিস্সেমিনেটেড ইন্ট্রাভাসকুলার কোয়াগলুশেন ধরা পড়ে। তাই তাঁকে ১০ দিন ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল।
তিনি সংবাদ সংস্থা ANI-কে আরও জানান, "২৫ বছর বয়সি চিকিৎসক আরফা সাজাদিনকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল। উনি যখন ৩৭ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা, সেই সময় করোনায় আক্রান্ত হন। ওঁর গ্লাইকেমিক কন্ট্রোল(ব্লাড সুগারের লেভেল বোঝাতে এই মেডিক্যাল টার্ম ব্যবহার করা হয়) খুব খারাপ অবস্থায় ছিল। ওঁর অবস্থা দেখে সিজার করা হয়। প্রত্যেকেই আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। ভেন্টিলেটরে ১০ দিন মেকানিক্যাল সাপোর্টে ছিলেন। বিভিন্ন জটিলতা এবং ফুসফুসে সংক্রমণ সত্ত্বেও, উনি শেষমেশ ভাইরাসকে পরাস্ত করেন।" তবে, আরফার সদ্যোজাতের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে বলে জানান চিকিৎসক বিশ্বাস।
প্রসঙ্গত, ডিস্সেমিনেটেড ইন্ট্রাভাসকুলার কোয়াগলুশেন এক ধরনের বিরল ও গুরুতর অবস্থা। এর ফলে শরীরে রক্ত জমাট বেঁধে যায়। কোনও ইনফেকশন বা আঘাত থেকে এই রোগ হতে পারে। এর জেরে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার স্বাভাবিক অবস্থা অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে।
২৫ বছরের এই চিকিৎসকের যখন ICU-তে চিকিৎসা চলছিল, সেই সময় তাঁকে সমানে উৎসাহিত করে গিয়েছেন অন্য চিকিৎসকরা। চিকিৎসক বিশ্বাস বলেন, আমরা তাঁর সঙ্গে কথা বলতাম। তাঁকে বোঝাতাম যে তিনি একজন যোদ্ধা। তাই হাল ছাড়া চলবে না। তাঁকে বলা হত যে, তোমার সন্তান তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। শেষমেশ উনি ভাইরাসকে পরাস্ত করতে পেরেছেন।
উল্লেখ্য, বুধবার প্রকাশিত স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, একদিনে রাজ্যে করোনা সংক্রমিত ৫,৩৮৪ জন।