Cyclone Yaas in Sundarban: ইয়াসের ধাক্কায় সুন্দরবনে পর্যটন, মাছের ভেড়ির সর্বনাশ, লোকালয়ে বনের হরিণ
গোসাবার দয়াপুরে পীরখালির জঙ্গল থেকে জলের তোড়ে লোকালয়ে চলে আসে একটি হরিণ। গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে তাকে বন দফতরের হাতে তুলে দেয়।
শান্তনু নস্কর, , দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে সুন্দরবনের পর্যটনশিল্পের ব্যাপক ক্ষতি। গোসাবায় একের পর এক হোটেলে ঢুকছে জল। নোনা জল ঢুকে বারোটা বেজেছে মাছ চাষের। বাঁধ ভেঙে প্লাবিত গোসবার একাধিক গ্রাম।
সেকেন্ডের ভগ্নাংশের মধ্যে সব তছনছ। প্রকৃতি কতটা ভয়ঙ্কর, সর্বগ্রাসী হতে পারে তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে ওড়িশার বালেশ্বর। ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ে বনের হরিণও চলে এল লোকালয়ে!
ইয়াসের ধাক্কায় কার্যত পথে বসেছে সুন্দরবন পর্যটন ব্যবসা। গোমর নদীর বাঁধ ভেঙে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার একের পর হোটেল জলের তলায় চলে গিয়েছে।
আমফানের ক্ষত সামলানোর পর করোনা। হোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে শেষ পেরেকটা পুঁতে দিল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস।
জানা গেছে, প্রায় দেড়শোর উপর হোটেল জলের তলায়, হোটেলের সামনে এক গলা জল, ভিতরেও জল।
গোসাবার এক বাসিন্দা রাকেশ মণ্ডল বলেছেন, হোটেলের বারান্দার হাঁটু সমান জল, মাছের ভেড়িতে জল ঢুকেছে, পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ক্ষতি হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের ধাক্কায় প্রায় বারোটা বেজেছে পর্যটনের। একের পর ভেড়িতে নোনা জল ঢোকায় মাছ চাষের ক্ষতি কীভাবে সামলাবেন বুঝতে পারছেন না অনেকেই। গোসাবার বাসিন্দাদের মুখে শোনা গিয়েছে উদ্বেগের সুর। তাঁরা বলেছেন, বাঁধ ছাপিয়ে জল ঢুকেছে গ্রামে, খুব আতঙ্কে আছি।
গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অচিন পাইক বলেছেন, জল কমে গেলে বাঁধ মেরামতি হবে, নদীবাঁধ আরও চওড়া করতে হবে।
গোসাবা ব্লকের পাখিরালয়, রাঙাবেলিয়া এখন আক্ষরিক অর্থেই এক একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ। গ্রামে ঢুকেছে জল।
প্রলয়ের প্রভাব পড়েছে সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্রে। গোসাবার দয়াপুরে পীরখালির জঙ্গল থেকে জলের তোড়ে লোকালয়ে চলে আসে একটি হরিণ। গ্রামবাসীরা উদ্ধার করে তাকে বন দফতরের হাতে তুলে দেয়।
উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড ওড়িশার বালেশ্বর। সকাল সোয়া ৯টা নাগাদ ল্যান্ড ফল হয় ধামড়ার কাছে। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে চলে ল্যান্ড ফল প্রক্রিয়া। দুপুর ১টা ৯ মিনিটে এই প্রক্রিয়া শেষ হয়। সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ল্যান্ড ফলের সময় কলকাতায় ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার।ঘূর্ণিঝড়ের সবথেকে বেশি প্রভাব পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। দিঘায় সকাল সাড়ে ৯টায় ইয়াসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৮ কিলোমিটার। ওই সময়ে ফ্রেজারগঞ্জে ঝড়ের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬৮ কিলোমিটার।আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ৯ ঘণ্টা ধরে ধীরে ধীরে শক্তিক্ষয় করে কমবে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা। ইয়াসের প্রভাবে আগামীকাল রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় ভারী বৃষ্টির সতর্কতা।