Uttarakhand Glacier Disaster: দুর্গম এলাকায় রাতভর উদ্ধারকার্য, এখনও নিখোঁজ বহু -
পরিবেশ অগ্রাহ্য করে যথেচ্ছ নির্মাণ। বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নদীর স্বাভাবিক গতিপথ রুদ্ধ হওয়া। উত্তরাখণ্ডের চামোলিতে বিপর্যয়ের জন্য এই সমস্ত কারণকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ঠিক এই তত্ত্বই উঠে এসেছিল ৮ বছর আগে, কেদারনাথ বিপর্যয়ের সময়েও।

চামোলি: পরিবেশ অগ্রাহ্য করে যথেচ্ছ নির্মাণ। বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নদীর স্বাভাবিক গতিপথ রুদ্ধ হওয়া। উত্তরাখণ্ডের চামোলিতে বিপর্যয়ের জন্য এই সমস্ত কারণকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। ঠিক এই তত্ত্বই উঠে এসেছিল ৮ বছর আগে, কেদারনাথ বিপর্যয়ের সময়েও।
চারপাশে ধ্বংসের মধ্যেও আশা জাগানো দৃশ্য! উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে তুষার-বিপর্যয়ে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত তপোবন বিদ্যুৎ প্রকল্প! সেখানকার বেশ কিছু শ্রমিক আটকে পড়েন একটি টানেলের মধ্যে। রুদ্ধশ্বাস কয়েক ঘণ্টা পরে সেই অন্ধকূপ থেকে ২৫ জনকে উদ্ধার করেন ITBP-র জওয়ানরা! এখনও শতাধিক মানুষ নিখোঁজ। দুর্গম পার্বত্য এলাকায় তাঁদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করে চলেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
এই ধরনের বিপর্যয়ের পর উদ্ধারকাজে সবচেয়ে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় দুর্গম এলাকা। তার ওপর জোশীমঠের কাছে বানের জলের তোড়ে একাধিক সেতু ভেঙে গিয়েছে। তা দ্রুত মেরামত করার চেষ্টা চালাচ্ছে বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন। কিন্তু, উত্তরাখণ্ডের ওপর বারবার এই বিপর্যয় নেমে আসছে কেন? সেটাই ভাবাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের।
এই বিষয়ে আইআইটি খড়গপুরের ভূতত্ত্ববিদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘হিমালয় এলাকায় কাজ করতে গিয়ে দেখেছি, পরিবেশকে অগ্রাহ্য করে, বিজ্ঞানকে অগ্রাহ্য করে নির্মাণকাজ হচ্ছে, বসতি হচ্ছে। যাকে আমরা ভৌগলিক পরিভাষায় বলি নিও টেকটনিক সিস্টেম। পরিবেশের সঙ্গে হিমালয়ের সামঞ্জস্য মানা হচ্ছে না। এই ধরণের ঘটনার জন্য আমরাই দায়ী।’
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের অধ্যাপিকা ও রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু বলছেন, ‘ভাঙা-গড়ার খেলা ওখানে চলে। বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নদীর স্বাভাবিক গতিপথ নষ্ট হচ্ছে। পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরিবেশ পরিবর্তন হচ্ছে। হিমাবাহের উপর বরফ পড়ায় হিমবাহ ভেঙে যায়। বহু গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
এই প্রেক্ষাপটে রবিবার পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায়, উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। আজ হলিদয়ার সভা থেকে মোদি বলেন, ‘মা গঙ্গার যেখানে উৎপত্তি সেই উত্তরাখণ্ড এখন বিপর্যয়ের মুখে, হিমবাহ বিপর্যয়ে নদীর জল বেড়েছে, ক্ষতির খবর আসছে, উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী রাওয়াত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, এনডিআরএফের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছি, মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, মানুষের পাশে থাকতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
উত্তরাখণ্ডবাসীর পাশে থাকার বার্তা দিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ট্যুইট, ‘চামোলিতে হিমবাহ বিপর্যয় অত্যন্ত দুঃখজনক। উত্তরাখণ্ডবাসীর পাশে আছি। ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম সহায়তা করুক রাজ্য সরকার। উদ্ধারকাজে সহযোগিতার জন্য কংগ্রেস কর্মীরা উদ্যোগ নিন।’
সমবেদনা জানিয়ে ট্যুইটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, “উত্তরাখণ্ডে বিপর্যয়ে মৃত্যুর খবরে অত্যন্ত ব্যথিত। স্বজনহারাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা। যাঁরা আহত, তাঁদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি।’
পাশে দাঁড়িয়েছে গোটা দেশ। কিন্তু স্বজনহারানোর কান্নায় ভারাক্রান্ত চামোলির আকাশ। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে চলছে উদ্ধারকার্য।






















