জীবদ্দশায় ট্রেন দুর্ঘটনা রুখে শতাধিক প্রাণ রক্ষা করেছিলেন, মৃত্যুর পরও অঙ্গদান করে ৮ জনকে বাঁচিয়ে গেলেন কেরলের যুবক
কারও মস্তিষ্কে তো কারও হৃদয়ে বেঁচে রইলেন তিনি!
তিরুঅনন্তপুরম: বছর দশেক আগে কেরলের কোল্লম জেলায় একটা খবর সকলের নজর কেড়েছিল। সামনের রেললাইনে ফাটল আছে সেটা খেয়াল করে ট্রেন থামিয়ে দিয়ে বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে ট্রেনকে রক্ষা করেছিলেন দুই কিশোর। কয়েক'শ মানুষের প্রাণ রক্ষা পেয়েছিল।
সম্প্রতি সেই দুই কিশোরেরই একজন অঙ্গদান করে প্রাণ বাঁচালেন ৮ জনের। তিনি কোট্টারাক্কা এলাকার বাসিন্দা অনুজিৎ (২৭)। গত ১৪ জুলাই এক মারাত্মক পথ দুর্ঘটনার পর তিরুঅনন্তপুরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। সেখানেই তিনি মারা যান।
আর তাঁরই ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে তাঁর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দান করা হয়েছে ৮ ব্যক্তিকে। দান করা হয়েছে দুটি চোখ, দুটি হাত, দুটি কিডনি, ক্ষুদ্রান্ত, ও হৃদপিণ্ড। আট জন রোগীকে এই অঙ্গগুলি দান করা হচ্ছে।
অনুজিতের ইচ্ছা অনুসারে তাঁর মস্তিষ্কও কোনও রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন কার যায় কি না সে চেষ্টা চলছে। মস্তিষ্ক এয়ার-লিফ্ট করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কারণ এক্ষেত্রে প্রতিস্থাপন করতে হয় অত্যন্ত দ্রুত। শেষ খবর, সময়ের মধ্যেই মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপন করা গিয়েছে।
২০১০ সালে অনুজিৎ আর তাঁর বন্ধু রেললাইনে ফাটল দেখে প্রায় ৫০০ মাইল পথ লাইনের উপর দিয়ে দৌড়ে গিয়েছিলেন এবং নিজেদের লাল রঙের স্কুলব্যাগ নাড়িয়ে রেলগাড়িকে থামতে ইঙ্গিত করেছিলেন।
আর এবার মৃত্যুকালেও দান করে গেলেন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ।অনুজিতের বাড়ির অবস্থা ভালো নয়। তাঁর বাবা শশীধরণ পিল্লাই কৃষক। স্ত্রী প্রিন্সি গয়নার দোকানে কাজ করেন।
রয়েছে তিন বছরের একটি ছেলে এবং বোন। অনুজিত নিজে ড্রাইভারি করতেন। কিন্তু মহামারীতে সেই কাজ যাওয়ায় সেলসম্যানের কাজ শুরু করেছিলেন।পথ-দুর্ঘটনায় চলে গেলেন। প্রাণ দিয়ে গেলেন অনেকগুলো মানুষকে। কারও মস্তিষ্কে তো কারও হৃদয়ে বেঁচে রইলেন তিনি!