Japan Elderly Population: টাকা দিয়ে হলেও আপত্তি নেই, অপরাধ ঘটাতেও কুণ্ঠিত নন, জাপানের জেলে জায়গা চাইছেন বয়স্করা
Japan News: জাপানের রাজধানী টোকিওর উত্তরে রয়েছে তোচিগি উইমেন্স প্রিজন।

নয়াদিল্লি: আইন-আদালত, জেলের নাম শুনলে এতদিন আঁতকে উঠতেন সকলে। কিন্তু এখন স্বেচ্ছায় জেলে যেতে চাইছেন জাপানের বয়স্ক নাগরিকরা। জেলের জীবনের স্বাদ পেতে এতই আগ্রহী তাঁরা যে অপরাধ ঘটাতেও কসুর করছেন না। এমনকি টাকা দিয়েও জেলে থাকতে উদগ্রীব কেউ কেউ। পেনশনের টাকায় কুলোতে না পেরে, শেষ জীবনে কাউকে পাশে না পেয়ে, একাকীত্বের দংশনে বিদ্ধ হয়েই তাঁর জেলে যেতে চাইছেন বলে জানা গেল। (Japan Elderly Population)
জাপানের রাজধানী টোকিওর উত্তরে রয়েছে তোচিগি উইমেন্স প্রিজন। সেটি মহিলা কয়েদিদের জন্য তৈরি বৃহত্তম জেল। সম্প্রতি দ্বিতীয় বার সেখানে ঠাঁই হয় ৮১ বছর বয়সি, আকিও নামের এক মহিলার। জানা গিয়েছে, পরিবারের কাছ থেকে প্রত্যাখ্যান পেয়েছেন আকিও। তিনি নিজেও আর পরিবারের কাছে ফিরতে আগ্রহী নন। তাই বিনামূল্যে জীবনধারণ করতে ইচ্ছাকৃত ভাবে অপরাধ ঘটান তিনি, যাতে নিশ্চিন্তে জেলে বার্ধক্য কাটাতে পারেন। (Japan News)
South China Morning Post-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগেও একবার গ্রেফতার হন আকিও। তখন তাঁর বয়স ছিল ৬০-এর কোটায়। সেবার খাবার চুরি করে গ্রেফতার হন আকিও। ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে জেল থেকে ছাড়া পান আকিও। কিন্তু বাইরের জীবন দুর্বিসহ ঠেকে তাঁর। জেলে ফিরতে মরিয়া হয়ে ওঠেন। তাই ইচ্ছাকৃত ভাবে ফের অপরাধ ঘটান, যাতে আবারও জেলে ঠাঁই হয়। তোচিগি উইমেন্স প্রিজনে প্রায় ৫০০ মহিলা কয়েদি রয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশই প্রবীণা। তাঁদের মাঝেই ফিরে যেতে চেয়েছিলেন আকিও।
সংবাদমাধ্যমে আকিও বলেন, “(প্রথম বার) খাবার চুরি করে ভুল করেছিলাম। অর্থনৈতিক ভাবে স্বচ্ছল হলে, জীবন আরামদায়ক হলে, একেবারেই করতাম না। কিন্তু জেলে প্রচুর ভাল মানুষ রয়েছেন। আমার জন্য হয়ত এখানকার জীবনই আদর্শ।”
জেলযাত্রার আগে ছেলের সঙ্গে থাকতেন আকিও। কিন্তু ছেলে মাকে চাইতেন না, অনেক বার বেরিয়ে যেতেও বলেন বলে অভিযোগ। গতবছর মুক্তি পাওয়ার পর তাই ছেলের কাছে যেতে পারেননি আকিও। ছেলের মুখোমুখি হতে পারেননি।
আকিওর বক্তব্য, “ও আমাকে কী চোখে দেখবে, ভেবেই ভয় পেয়ে যাই। একা থাকা খুব কষ্টকর। আমি লজ্জিত যে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মনের জোর থাকলে হয়ত জীবন অন্য রকম হতো। কিন্তু এখন বয়স হয়েছে, কিছু করার ক্ষমতা নেই আর।”
জেলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, একাকী জীবন কাটানোর চেয়ে জেল-জীবন অনেকেরই পছন্দ। এমনিক জেলে জায়গা পেতে মাসে মাসে টাকা খরচেও আপত্তি নেই তাঁদের। মাসে ১১ হাজার থেকে ১৭ হাজার টাকা খরচ করতে রাজি বয়স্কদের অনেকেই।
জাপান সরকারের পরিসংখ্যান বলছে, দেশে বার্ধক্য জনসংখ্যার হার তরতর করে বেড়েই চলেছে। ২০২৪ সালে জাপানের মোট জনসংখ্যার ২৯.৩ শতাংশই প্রবীণ নাগরিক। ৬৫-র উপর বয়স এমন নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ৬২ লক্ষ। ১ লক্ষের বেশি জনসংখ্যা এমন দেশের তালিকায়, প্রবীণ জনসংখ্যার নিরিখে একেবারে শীর্ষস্থানে রয়েছে জাপান।
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
