মুখ্যমন্ত্রী-অভিষেকের গড়ে প্রবেশ নাড্ডার, কীসের ইঙ্গিত?
খোদ মুখ্যমন্ত্রী এবং অভিষেকের গড়ে প্রবেশ করেছেন নাড্ডা। আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তবে কি তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি ভাঙাই লক্ষ্য বিজেপির?
কলকাতা: দুদিনের বঙ্গ সফরে এসেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। আর এই দুদিনে পছন্দের জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছেন ভবানীপুর এবং ডায়মন্ডহারবার। খোদ মুখ্যমন্ত্রী এবং অভিষেকের গড়ে প্রবেশ করেছেন নাড্ডা। আর এই নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তবে কি তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি ভাঙাই লক্ষ্য বিজেপির? সর্বভারতীয় সভাপতির কর্মসূচি তেমনই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
আর এতেই চরম ক্ষুব্ধ তৃণমূল। পাল্টা জবাব দিয়েছে বিজেপি। হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, ভবানীপুর-ডায়মন্ডহারবার কি পিসি-ভাইপোর? ভবানীপুর-ডায়মন্ডহারবার দু জায়গাতেই জিতব। এদিকে বুধবার নাড্ডার বঙ্গ সফরের ঠিক আগে বিজেপির বাংলার সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য ট্যুইট করে বলেন, আর নয় অন্যায়ের প্রচারে ভবানীপুর ও ডায়মন্ডহারবারে পিসি-ভাইপোর কেন্দ্রে যাবেন জেপি নাড্ডা। আঘাত সেখানেই করা উচিত যেখানে চোট বেশি দেওয়া সম্ভব।
সূত্রের খবর, বুধবার ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচন সঞ্চালন কমিটির বৈঠকে নাড্ডা বলেছেন মমতার কেন্দ্রে জোর লড়াই দিতে হবে। গৃহসম্পর্ক অভিযান নিয়ে বাড়ি বাড়ি যেতে হবে। জিতে গেল সারা ভারতের নজরে পড়ে যাবেন। হেরে গেলেও এমন লড়াই করবেন, যে উনি যাতে শুধু নিজের কেন্দ্রেই ব্যস্ত থাকেন। তোমার বিরোধীকে পরাজিত করার জন্য ঠিক যতদূর যেতে হয়, ঠিক ততদূর যেতে হবে। আর এদিন অভিষেকের গড়ে দাঁড়িয়েই, সেখানে পদ্ম ফোটানোর হুঁশিয়ারি দিলেন নাড্ডা। যদিও তাতে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল। তাঁর কথায়, বাংলায় বিজেপির সরকার হতে চলেছে। ডায়মন্ডহারবারেও পদ্ম ফুটবে।
ভবানীপুর বিধানসভাটি কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। অর্থাৎ তৃণমূলের গড়। কিন্তু গত কয়েক বছরে এখানে বিজেপির ভোট অনেকটাই বেড়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১১-র বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি পেয়েছিল মাত্র ৫ হাজার ৭৮টি ভোট। কিন্তু, ২০১৬-য় তা একলাফে বেড়ে হয় ২৬ হাজার ২৪৯। আর ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের বিধানসভাওয়াড়ি ফল অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রীর কেন্দ্রে এক্কেবারে তৃণমূলের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলে বিজেপির ভোট বেড়ে হয়েছে ৫৭ হাজার ৯৬৯।
২০১৯-এর লোকসভা ভোটের প্রেক্ষাপটে ৬০ শতাংশ অবাঙালি অধ্যুষিত ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির ভোট উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ে। লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে মুখ্যমন্ত্রীর ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রে, বিজেপির থেকে মাত্র ৩ হাজার ১৬৮ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে তৃণমূল। ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত আটটি ওয়ার্ডের মধ্যে ছ’টিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।
উল্টোদিকে ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্র কিন্তু এখনও তৃণমূলের শক্তঘাঁটি। ২০১৪-র লোকসভা নির্বাচনে ডায়মন্ডহারবার লোকসভা আসনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ের ব্যবধান ছিল ৭১ হাজার ২৯৮। কিন্তু, ২০১৯-এ এক ধাক্কায় তা বেড়ে হয়েছে ৩ লক্ষ ২০ হাজার ৫৯৪। এদিন নাড্ডার হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দিবাস্বপ্ন দেখেছে, ডায়মন্ডহারবার দখল করতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার জে পি নাড্ডা বলেন, ডায়মন্ডহারবারের সাংসদকে সংসদে দেখাই যায় না। এই বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়ছে তৃণমূল। বিধায়ক তথা পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, শীর্ষ নেতাই লোকসভায় উপস্থিত থাকতে পারে না। অভিষেক অনেক বক্তৃতা দিয়েছেন সংসদে। লোকসভায় প্রধানমন্ত্রীকেই তো দেখা যায় না।