হাওয়ালা কারবারের বিরুদ্ধে সিবিআই হানা, রাঁচির আয়কর দফতরের প্রিন্সিপাল কমিশনার তাপস কুমার দত্তকে গ্রেফতার
রাঁচি ও কলকাতা: রাঁচি ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টের প্রিন্সিপাল কমিশনার তাপসকুমার দত্তর সল্টলেকের বাড়িতে সিবিআই অভিযানে মিলল কোটি কোটি টাকা!!! আয় বহির্ভূত সম্পত্তি, ঘুষ নেওয়া, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র-সহ একাধিক অভিযোগে জালে আয়কর কর্তা। তাপসকুমার দত্ত, রাঁচির আয়কর দফতরের শীর্ষ কর্তা। আয়কর ফাঁকি রোখা তাঁর কাজ। আর তাঁর বাড়ি থেকেই উদ্ধার হল কোটি কোটি টাকা!!! বুধবার, সাত সকালে, সল্টলেকের এইচবি ব্লকে, এই আয়কর কর্তার বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। বাড়ির ভিতর ঢুকে তো তাদের চক্ষু চড়কগাছ। চারিদিকে টাকা লোকানো। রান্নাঘরে চালের বস্তার মধ্যে, বাথরুমে এমনকি জুতো রাখার র্যাকের মধ্যেও টাকা। এত টাকা গোনার জন্য শেষমেশ এসবিআইকে খবর দিতে। তারা মেশিন নিয়ে এসে টাকা গোনে। সিবিআই সূত্রে দাবি, আয়কর কর্তার বাড়ি থেকে প্রায় চার কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। এর পুরোটাই নতুন পাঁচশো এবং ২ হাজার টাকার নোট। অভিযোগ, মূলত দুটি উপায়ে তাপস কুমার দত্ত নামে এই আয়কর কর্তা বাড়ি ভর্তি টাকা করেছেন। কখনও অভিযান চালাতে গিয়ে টাকা উদ্ধার হলে সেখান থেকে টাকা সরানো হয়েছে। আবার কোথাও মোটা টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সিবিআই সূত্রে দাবি, তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই চক্রের মাথা হচ্ছেন রাঁচি ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টের এই প্রিন্সিপাল কমিশনার তাপসকুমার দত্ত। যিনি কলকাতা ও রাঁচিতে একাধিক ভুয়ো কোম্পানি খুলে কোটি কোটি টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে পাচার করেছেন এবং নোট বাতিলের পর কালো টাকা সাদাও করেছেন বলে অভিযোগ। এমনই একটি ভুয়ো সংস্থার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আলিপুরে এক ব্যক্তির বাড়িতেও এ দিন তল্লাশি চালায় সিবিআই। আয়কর কর্তার এই সহযোগীর বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে সিবিআই সূত্রে দাবি। মঙ্গলবার রাতেই দিল্লি থেকে সিবিআইয়ের একটি বড় দল কলকাতায় আসে। এখানকার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপর, এ দিন সকাল ৬টা নাগাদ, পঞ্চাশ-ষাটজন সিবিআই অফিসার নিজাম প্যালেসে জড়ো হন। সেখান থেকে একাধিক দলে ভাগ হয়ে সল্টলেক, আলিপুর, পোস্তা, ডালহৌসি-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান শুরু করে। একই ভাবে অভিযান চলে ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচিতেও। মোটি তিরিশটি জায়গায় এ দিন অভিযান চালানো হয়। সিবিআই সূত্রে খবর, ঝাড়খণ্ডের আয়কর কর্তা ছাড়াও, আয়কর দফতরেরই আরও তিন আধিকারিকের বাড়িতেও এ দিন তল্লাশি চালানো হয়। বছর দু’য়েক আগে বালি পুরসভার সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়রের বাড়ি থেকেও একই ভাবে মিলেছিল কোটি কোটি টাকা। আর এবার এবার টাকার খনি মিলল সল্টলেকে আয়কর কর্তার বাড়িতে।