ভারত সফরে এলেন হাসিনা, বিমানবন্দরে প্রোটোকল ভেঙে স্বাগত জানালেন মোদী
নয়াদিল্লি: চারদিনের ভারত সফরে দিল্লি পৌঁছলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রোটোকল ভেঙেই তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এদিন নয়াদিল্লি পৌঁছে রাষ্ট্রপতি ভবনে যান হাসিনা। তিনি সেখানেই থাকছেন। এদিন ইন্দিরা গাঁধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী। পরে, টুইটারে তিনি লেখেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সফরে স্বাগত। মোদী বলেন, দুজনে মিলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
[embed]https://twitter.com/narendramodi/status/850253526877970433[/embed] [embed]https://twitter.com/narendramodi/status/850253657811566592[/embed]২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী পদে মোদীর আসীন হওয়ার পর থেকে এই প্রথম ভারত সফরে এলেন শেখ হাসিনা। সূত্রের খবর, এই সফরে প্রায় ২৫টি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে দুই দেশের মধ্যে। এরমধ্যে রয়েছে অসামরিক পরমাণু সহযোগিতা এবং প্রতিরক্ষা।
তবে, তিস্তা জলবণ্টন নিয়ে কোনও চুক্তি হবে না বলেই জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের জলের সমস্যা তৈরি হবে বলে দীর্ঘদিন ধরেই এই চুক্তির বিরোধিতা করে আসছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রীয় আধিকারিকরা জানান, মমতার সঙ্গে আলোচনা না করে তিস্তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না কেন্দ্র।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের অক্টোবর মাসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বাংলাদেশ সফরের সময়ই তিস্তা চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তিতে শেষ মুহূর্তে পিছিয়ে আসে ইউপিএ সরকার। পালাবদলের পর কেন্দ্রে শাসক দল বদলালেও, মনোভাবের কোনও পরিবর্তন যে হয়নি, তা পরিষ্কার।
বিদেশমন্ত্রকের যুগ্ম সচিব (বাংলাদেশ ও মায়ানমার) শ্রীপ্রিয়া রঙ্গনাথন আশা প্রকাশ করেন, হাসিনার এই সফর বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এর ফলে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে। তবে তিস্তা নিয়ে তিনি জানান, কাজ চলছে, তবে সিদ্ধান্ত হয়নি।
আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে বৈঠক করবেন হাসিনা। বিভিন্ন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হবে। সেখানে সন্ত্রাস মোকাবিলা, মৌলবাদ নিয়ন্ত্রণ, এবং নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি উঠে আসবে বলে খবর। জানা গিয়েছে, সামরাস্ত্র কেনার জন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রকে ভারত ৫০ কোটি ডলার ঋণ-সাহায্য দিতে চলেছে। পাশাপাশি, বাণিজ্য থেকে শুরু করে বিনিয়োগ ও যোগাযোগের উন্নতির ওপরও জোর দেওয়া হবে।
আগামীকাল, ঠাসা সূচি রয়েছে হাসিনার। জানা গিয়েছে, নতুন যাত্রী পরিষেবার উদ্বোধন হবে। ঢাকা ও কলকাতার মধ্য চলা মৈত্রী এক্সপ্রেসকে সম্পূর্ণ বাতানুকূল করা হবে। যাত্রী পরিষেবাও উন্নীত হবে।
১লা বৈশাখ থেকেই নতুন রূপে মৈত্রী এক্সপ্রেস চালু হবে। পেট্রাপোল ও বেনাপোল সীমান্তের মধ্য দিয়ে কলকাতা-খুলনা নতুন ট্রেনের সূচনা হবে। পেট্রাপোলে নতুন স্টেশন গড়তে ইতিমধ্যেই ১০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে ভারতীয় রেল।
এছাড়া, রাদিকাপুর ও বিরলের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের জন্য নতুন লাইন ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে সূচনা করা হবে। একইসঙ্গে রেলে কন্টেনার পরিষেবারও সূচনা হবে।
আগামীকাল হাসিনার সম্মানে রাষ্ট্রপতি ভবনে এক নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।