শিল্পপতিদের ঋণ মকুব করলেও, কৃষির ক্ষেত্রে কেন নয়, কেন্দ্রকে তোপ রাহুলের
সিন্ধানুর (কর্নাটক): কৃষি-ঋণ নিয়ে ফের কেন্দ্রকে বিঁধলেন রাহুল গাঁধী। তাঁর অভিযোগ, গত এক বছরে মোদী সরকার গুটিকয়েক শিল্পপতির ১.৩ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ মকুব করলেও, কৃষকদের নেওয়া কয়েক হাজার কোটি টাকার ঋণে ছাড় দিতে রাজি নয়।
কৃষক সংগঠনের সঙ্গে প্রায় ৩০-মিনিটের বৈঠকে রাহুল প্রশ্ন করেন, যখন সরকার শিল্পপতিদের এত ঋণ মকুব করছে, তখন কৃষক-ঋণের ক্ষেত্রে তা কার্যকর করতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আটকাচ্ছে কোথায়? তাঁর দাবি, তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দফতরে গিয়ে এই বিষয়ে কথা বলেছিলেন। কিন্তু, মোদী কোনও উত্তর দেননি।
রাহুল যোগ করেন, এরপর তিনি কর্নাটক ও পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী—সিদ্দারামাইয়া ও অমরিন্দর সিংহকে এই মর্মে অনুরোধ করেন। রাহুলের দাবি, সময় অপচয় না করে এই দুই মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে কৃষক ঋণ মকুব করে দেন। রাহুল বলেন, এটাই কৃষকদের প্রতি কংগ্রেসের দায়বদ্ধতা।
কংগ্রেস সভাপতির প্রতিশ্রুতি, কেন্দ্রে ক্ষমতায় এলে, কংগ্রেস কৃষকদের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করবে। তিনি জানান, কৃষককূলকে দেশের মেরুদণ্ড হিসেবে মনে করে কংগ্রেস। তাই এটা সরকারের কর্তব্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ফলে বিপদে পড়া কৃষকদের পাশে থাকা। তিনি মনে করিয়ে দেন, মনমোহন সিংহের নেতৃত্বাধীন পূর্বতন ইউপিএ সরকার ৭০ হাজার কোটি টাকার কৃষক ঋণ মকুব করেছিল।
রাহুলের মতে, কৃষকরা বিচার চাইছে। তাঁরা শুধু ঋণ মকুব চান, অন্য কিছু নয়। সরকারের সাহায্য ছাড়া কৃষকরা বেঁচে বা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন না। রাহুলের দাবি, কেন্দ্রের ভুল নীতি ও সিদ্ধান্তের ফলে কৃষকরা আজ পীড়িত। কংগ্রেস সভাপতি বলেন, দেশের গরিব ও কৃষকদের মোদী দুটি বড় ধাক্কা দিয়েছে—নোট বাতিল ও জিএসটি। কারণ, দুটিই শিল্পপতিদের সাহায্য করার জন্য রূপায়িত। উনি গরিব ও কৃষকদের টাকা নিজের বন্ধুদের দিতে চান।
যদিও, বৈঠকে উপস্থিত এক মহিলার প্রশ্নে কিছুটা তাল কাটে রাহুলের। ওই মহিলা জানান, গ্রামের মানুষ মদে আসক্ত হয়ে পড়ছে। ঠিকমতো কাজও মিলছে না। তিনি বলেন, আমরা কোনও ঋণ-মকুব চাই না। জীবিকা অর্জন ঠিক করতে পারব। শুধু চাই মদের ওপর পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা।
এর উত্তরে বৈঠকে উপস্থিত মু্খ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেন, ভাবনা ভাল হলেও বাস্তবসম্মত নয়। মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ ও তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলি নিষেধাজ্ঞা জারি করেও পরে প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছিল। তাঁর দাবি, নিষেধাজ্ঞার ফলে উল্টে চোরাচালান বৃদ্ধি পাবে। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, নিষেধাজ্ঞা করতে হলে কেন্দ্রকে করতে হবে।
তবে, রাহুল কিছুটা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। বলেন, আমি পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার পক্ষে। তবে এর জন্য আলোচনার প্রয়োজন। তাঁর দাবি, নিষেধাজ্ঞার জারি করেও, মদের চোরাচালান রুখতে ব্যর্থ বিহার প্রশাসন।