এক্সপ্লোর
Advertisement
একের সাজা অন্যকে! ভাইয়ের অপরাধের দায়ে জেলে বরবাদ জীবনের ১০ বছর
বিজনোর: এক জনের অপরাধের সাজা ভুগতে হল অন্যজনকে। দীর্ঘ ১০ বছর কারান্তরালে থাকার পর মুক্তি পেয়েছেন বিজনোরের ৪৩ বছরের বালা সিংহ। গতকাল জেল থেকে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় আক্ষেপ, হাহুতাশ ঝরে পড়েছে তাঁর গলায়। বলেছেন, আমার যৌবনের দশ-দশটা বছর আমারে কারাগারে নষ্ট হয়ে গেল।
যে অপরাধে বালার জেব হয়েছিল আদতে তা করেছিল তাঁরই ভাই পাপ্পু। বালা বলেছেন, আমি যে পাপ্পু নই, তা প্রমাণ করার মতো কিছু আমার কাছে ছিল না। শুধুমাত্র এই কারণেই জীবনের এতগুলো বছর বরবাদ হয়ে গেল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০১-এ সাবুদালা গ্রামে ধর্মপাল নামে এক ব্যক্তি খুন হন। এই ঘটনায় পাপ্পু সহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। তিন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারলেও পাপ্পু অধরাই থেকে যায়। এই মামলায় বারবার আদালতের তিরস্কারের মুখে পড়ে পুলিশ ২০০৬-এর ৩০ এপ্রিল বালাকে গ্রেফতার করে আদালতে পেশ করে। বালাকে পাপ্পু বলে পরিচয় দেয় পুলিশ। সেই থেকেই বালা জেলে ছিলেন।
বালার সুবিচার পেতে এত দেরী হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করে জেলা পুলিশ সুপার বলেছেন, আগের অন্য একটি মামলায় পাপ্পুর ফিঙ্গারপ্রিন্ট পুলিশের কাছে ছিল। সেই ফিঙ্গারপ্রিন্টের সঙ্গে বালার ফিঙ্গারপ্রিন্টও গত বছর লখনউতে ফরেনসিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছিল। বালা ও পাপ্পু আলাদা ব্যক্তি কিনা, তা জানতেই এই পরীক্ষা। পরে পরীক্ষার ফলে জানা যায়, দুটি ফিঙ্গারপ্রিন্ট আলাদা।
তবে এই ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাঠাতে নয় বছর লেগে গেল কেন, সেই প্রশ্নের জবাব অবশ্য কারুর কাছ থেকে পাওয়া যায়নি।
বালা বলেছেন, শেষপর্যন্ত তিনি সুবিচার পেলেন। কিন্তু জীবনের যে সময়টা চলে গিয়েছে তার জন্য আক্ষেপ যাচ্ছে না তাঁর। কান্না ভেজা গলায় বলেছেন, দশ বছর আগে আমি পূর্ণ যুবক ছিলাম। তখন আমার চোখে অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন জেলের অন্ধকারে ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে।
রায়পুর সাদাত থানা এলাকার বাসিন্দা বালার পরিবার একটি কুঁড়ে ঘরে থাকে। হত দরিদ্র পরিবারের সদস্যদের খাবার জোগাড় করতে বালার বৃ্দ্ধা মাকে উদয়াস্ত পরিশ্রম করতে হয়। এভাবেই তিনি ছেলের মুক্তির জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন।
পাপ্পু খুনের ঘটনার পরই নেপালে পালিয়ে যায়। সেখানে সে খুন হয়। তার মৃত্যু সার্টিফিকেট পুলিশের কাছে জমা দিয়েছিলেন বালার মা। কিন্তু পুলিশ কার্যত ভাগিয়ে দিয়েছিল তাঁকে। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে পুলিশ বালার মায়ের মুখ বন্ধ রাখে।
অবশেষে কোমল সিংহ নামে এই আইনজীবী বদন্যতায় ছেলেকে মুক্ত করতে পারলেন বালার মা।
খবর (News) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে
আরও দেখুন
Advertisement
ট্রেন্ডিং
Advertisement
Advertisement
সেরা শিরোনাম
জেলার
জেলার
জেলার
জেলার
Advertisement