একাধিক ভারতীয় পাসপোর্ট রাখার অভিযোগ, নীরব মোদীর বিরুদ্ধে পৃথক এফআইআরের প্রস্তুতি
নয়াদিল্লি: ১২ হাজার কোটি টাকা ব্যাঙ্ক-প্রতারণা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত নীরব মোদীর কাছে অন্ততপক্ষে আধ-ডজন ভারতীয় পাসপোর্ট রয়েছে। এমনটাই জানাল তদন্তকারী সংস্থাগুলি। পলাতক হিরে-ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এই মর্মে পৃথক এফআইআর দায়ের করার ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।
পাসপোর্ট নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও নীরব মোদী একের পর এক দেশে যাচ্ছেন। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, কিছুদিন আগে পর্যন্ত নীরব ব্রিটেনে ছিলেন। এখন, সম্প্রতি তিনি বেলজিয়াম গিয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। এরপরই, গোয়েন্দারা খোঁজখবর শুরু করেন। জানা গিয়েছে, তাঁর নামে ৬টি পাসপোর্ট ইস্যু করা হয়েছে। এর মধ্যে ২টি চালু রয়েছে। বাকিগুলি নিষ্ক্রিয়।
গোয়েন্দাদের দাবি, যে দুটি পাসপোর্ট সক্রিয় রয়েছে, তার মধ্যে একটিতে নীরবের পুরো নাম রয়েছে। অন্যদিকে, আরেকটি পাসপোর্টে শুধু তাঁর নাম রয়েছে (পদবী নয়)। ওই পাসপোর্টে ৪০-সপ্তাহের ব্রিটেনে থাকার ভিসা মঞ্জুরি দেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দাদের দাবি, তা দিয়েই ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন পিএনবি-প্রতারণা মামলার অভিযুক্ত।
পিএনবি-কাণ্ডে তাঁর নাম উঠে আসার আগেই, দেশ থেকে পালিয়ে যান নীরব। তাঁর নামে ওয়ারেন্ট জারি হওয়ার পরই, প্রথম পাসপোর্টটি নিষিদ্ধ করে ভারত। এখন দ্বিতীয়টিও নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। কেন্দ্রীয় সূত্রের খবর, বিদেশমন্ত্রকের মাধ্যমে ইন্টারপোলকে এই দুই পাসপোর্ট প্রত্যাহারের বিষয়টি জানানো হয়েছে।
কিন্তু, গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, অভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া না থাকার দরুন বিভিন্ন দেশে সেগুলি নিষিদ্ধ করার কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। আর আইনের সেই ফাঁক দিয়েই বিভিন্ন দেশে পালিয়ে যান নীরব। এই পরিস্থিতিতে নীরব মোদীর বিরুদ্ধে একাধিক পাসপোর্ট রাখার অভিযোগে এফআইআর দায়ের করার ভাবনাচিন্তা চালাচ্ছে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা – সিবিআই ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
সূত্রের খবর, কয়েকদিন আগেই নীরব মোদীর বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করার আর্জি নিয়ে ইন্টারপোলের দ্বারস্থ হয়েছে দুই সংস্থা। এবার সেখানে, একাধিক পাসপোর্ট রাখা এবং সরকারের তা প্রত্যাহার করার বিষয়টিও উল্লেখ করা হবে। পাশাপাশি, এ-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে যে, হিরে ব্যবসায়ীর কাছে অন্য দেশের পাসপোর্ট আছে কি না।
কেন্দ্রীয় সূত্রের খবর, নীরব মোদীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোল একবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করলে এবং অভিযুক্ত কোথায় আছে তা জানতে পারলেই, তাঁর প্রত্যর্পণের দাবি জানাবে ভারত। পাশাপাশি, দেশের আদালতেও, মোদীকে সরকারিভাবে ‘পলাতক’ ঘোষণা করার জন্য বিশেষ আবেদন জানানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানা গিয়েছে।