ঘুষকাণ্ড: কেজরীবালের পদত্যাগ, সিবিআই তদন্তের দাবি নিয়ে সোচ্চার কংগ্রেস, বিজেপি
নয়াদিল্লি: ঘুষকাণ্ডের প্রেক্ষিতে দিল্লির মু্খ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার বিরোধীরা।
দিল্লি পুরভোটে ভরাডুবির পর এবার মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবালের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় নতুন বিতর্কে আম আদমি পার্টি। যা নিয়ে শুরু রাজনৈতিক চাপানউতোর।
রবিবার কেজরীবালের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন গতকাল দল থেকে বহিষ্কৃত মন্ত্রী কপিল মিশ্র। তাঁর দাবি, তাঁর চোখের সামনে দিল্লির স্বাস্থ্য ও পুরমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন মুখ্যমন্ত্রীকে ২ কোটি টাকা দিয়েছিলেন।
শুধু তাই নয়, কপিলের আরও অভিযোগ, জৈন তাঁকে জানিয়েছেন যে, মুখ্যমন্ত্রীর এক আত্মীয়ের নামে তিনি ৫০ কোটি টাকা মূল্যের একটি জমি হস্তান্তর করে ‘রফা’ করেছেন।
অভিযোগ ওঠার পর থেকেই এদিন সরগরম ছিল কেন্দ্রীয় রাজনীতি। কেজরীবালের অপসারণ ও সিবিআই তদন্তের দাবি নিয়ে সোচ্চার হয় কংগ্রেস, বিজেপি সহ বিরোধীরা। যদিও, কপিলের অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করে কেজরীবালের সমর্থনে দাঁড়িয়েছে তাঁর দল।
দিল্লি বিজেপির তরফে কেজরীর পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে। পাশাপাশি, অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিবিআই, আয়কর ও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তদন্তের দাবিও তুলেছে তারা। এদিন দিল্লির উপ-রাজ্যপাল অনিল বৈজালের সঙ্গে দেখা করেন দিল্লি বিজেপির প্রধান মনোজ তিওয়ারি।
তিনি দাবি করেন, যদি কেজরীবালের মধ্যে সামান্যতম নৈতিকতা অবশিষ্ট থেকে থাকে, তাহলে অবিলম্বে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। তিনি এ-ও জানান, মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ না করলে, উপ-রাজ্যপালের উচিত এই ইস্যুতে হস্তক্ষেপ করা। আরেক বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী বলেন, যে অভিযোগ উঠেছে, তা সিবিআইকে দিয়ে তদন্ত করানো উচিত।
কেজরীবালের পদত্যাগ চেয়ে সোচ্চার হয়েছে কংগ্রেসও। দিল্লি কংগ্রেস প্রধান অজয় মাকেন দাবি করন, যে অভিযোগ উঠেছে, তার পর মুখ্যমন্ত্রী থাকার কোনও অধিকার নেই কেজরীবালের। তিনি যোগ করেন, যে দুর্নীতিবিরোধী ভাবমূর্তি নিয়ে আম আদমি পার্টি গঠিত হয়েছিল, আজ তা ভূলুণ্ঠিত। কেজরীবালকে 'ডাকাত' বলে কটাক্ষ করে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা অমরিন্দর সিংহ বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর 'দুর্নীতিগ্রস্ত মুখ প্রকাশ্যে চলে এসেছে।'
প্রাক্তন সহযোগীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ঘুষে অভিযোগ ওঠায় বিষণ্ণ প্রবীণ সমাজকর্মী অণ্ণা হজারেও। তিনি বলেন, দিল্লি সরকারে যা যা ঘটে চলেছে, তা দেখে আমি মর্মাহত। এটা ভীষণই দুঃখের যে আমার এক প্রাক্তন সহযোগীর বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্তের দাবি তুলেছেন দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ে কেজরীবালের একদা সঙ্গী তথা বর্তমান পুদুচেরির উপ-রাজ্যপাল কিরণ বেদীও।
যদিও, এই ইস্যুতে কেজরীবালের পাশে দাঁড়িয়েছে তাঁর দল। এদিন কপিলের তোলা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দেন মণীশ সিসোদিয়া ও কুমার বিশ্বাস। সিসোদিয়ার দাবি, গোটা অভিযোগটাই ভিত্তিহীন। তিন যোগ করেন, খারাপ পারফরম্যান্সের জন্য কপিলকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাই তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই অভিযোগ করছেন।