পাক জেলে বন্দি ছেলেকে ছাড়াতে ব্যর্থ মুম্বইয়ের দম্পতি
অমৃতসর: বাস্তবের ‘জারা’-র প্রেমের টানে পাকিস্তানে গিয়ে জেলবন্দি হয়ে পড়া ছেলেকে ছাড়াতে ব্যর্থ হলেন মুম্বইয়ের এক প্রবীণ দম্পতি।
পাক জেলে আটক ছেলের মুক্তির দরখাস্ত জানাতে পাকিস্তানের বিদেশ-বিষয়ক উপদেষ্টা সরতাজ আজিজের সঙ্গে অমৃতসরে সাক্ষাতের চেষ্টা করেন হামিদ আনসারির বাবা নেহাল আনসারি এবং মা ফৌজিয়া।
হার্ট অফ এশিয়া সম্মেলনে যোগ দিতে গত ২ দিন ধরে অমৃতসরে ছিলেন সরতাজ আজিজ। কিন্তু, নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে আধিকারিকরা নেহাল-ফৌজিয়ার সেই অনুরোধ খারিজ করে দেন।
ঘটনায় বিধ্বস্ত ফৌজিয়া স্বর্ণমন্দির চত্বরে জানান, এখন ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। তিনি বলেন, ওনার (সরতাজ) সঙ্গে দেখা করতে আমরা বেশ কিছুদিন ধরেই এখানে রয়েছি। বহু চেষ্টা করেও পারলাম না।
ঘটনায় প্রকাশ, এক পাকিস্তানি মহিলার সঙ্গে ই-মেল মারফৎ আলাপ হয় মুম্বইয়ের বাসিন্দা পেশায় তথ্যপ্রযুক্তি ইঞ্জিনিয়ার এবং এমবিএ ডিগ্রিধারী বছর বত্রিশের যুবক হামিদের।
জানা যায়, ২০১২ সালের ৪ নভেম্বর কাবুল হয়ে পাকিস্তানে ঢোকে হামিদ। কিন্তু, তার পর থেকেই সে বেপাত্তা হয়ে পড়ে। পরে, পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে জানান যে, হামিদকে তিন বছরের হাজতবাস দেওয়া হয়েছে। তাঁকে পেশোয়ারের জেলে রাখা হয়েছে।
এই ঘটনা শুনে স্তম্ভিত হয়ে পড়েন হামিদের বাবা-মা। এদিকে, তিনবছরের সাজা শেষ হওয়ার পর হামিদের মুক্তির বিষয়ে বিভিন্ন দরজায় হত্যে দিয়ে পড়ে থাকেন হামিদের পরিবার। পাক আদালতের দ্বারস্থ হয়ে সেখানে ছেলের মুক্তির আবেদন করা হয়। যদিও, কোনও লাভ হয়নি। আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। তারা জানিয়ে দেয়, হামিদ সেনার হেফাজতে রয়েছে। ফলে, মুক্তির বিষয়ে পাক সেনা সিদ্ধান্ত নেবে।
এমনকী, সরতাজ আজিজের দফতরেও চিঠি লেখেন হামিদের পরিবার। কিন্তু, অভিযোগ, সেখান থেকে কোনও উত্তর আসেনি। ফলে বাধ্য হয়েই সরাসরি দেখা করতে অমৃতসরে চলে আসে আনসারি পরিবার।
সম্মেলনস্থলে গিয়ে প্ল্যাকার্ডও তুলে ধরেন তাঁরা। কিন্তু, সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। রবিবার সন্ধ্যেয় ভারত ছাড়েন আজিজ। আনসারিদের যাবতীয় প্রচেষ্টা জোর ধাক্কা খায়। ‘বীর’ কবে পাক জেল থেকে ছাড়া পাবে, তার অপেক্ষায় গোটা পরিবার।