ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে একটানা ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার ‘বিরল নজির’ রঘুবর দাসের
অতীতের পাঁচ মুখ্যমন্ত্রীর একজনও পাঁচ বছর একটানা ক্ষমতায় থাকেননি।
রাঁচি: ঝাড়খণ্ড বিধানসভায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। গণনা শুরুর প্রথম দিকে বিজেপি পিছিয়ে থাকলেও বেলা যত গড়িয়েছে ছবিটা পাল্টেছে। কংগ্রেস ও ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার এগিয়ে থাকলেও কার্যত বিরোধী জোটের ঘারের ওপর নিশ্বাস নিচ্ছে বিজেপি। এখনও তাই। কখনও ৩৬-৩৫-এ এগিয়ে থেকেছে বিজেপি। আবার কখনও ৩৯-৩১-এ এগিয়েছে কংগ্রেস-জেএমএম-আরজেডি জোট। পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে তাতে ত্রিশঙ্কু হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
২০০০ সালে প্রথম স্বশাসিত রাজ্য হওয়ার পর ঝাড়খণ্ডের ক্ষমতায় আসে বিজেপি। অন্তর্বতীকালীন সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন বাবুলাল মারান্ডি। ২ বছর ৪ মাস ক্ষমতায় থাকার পর মুখ্যমন্ত্রী পদে মারান্ডিকে সরিয়ে স্থলাভিষেক হয় অর্জুন মুন্ডার। এরপর ২০০৫ সালে নির্বাচনের পর ক্ষমতায় আসে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। মুখ্যমন্ত্রী হন শিবু সোরেন। কিন্তু সেই সরকার ১০ দিনও টেকেনি। যার ফলে ফের ক্ষমতায় আসে বিজেপি এবং মুখ্যমন্ত্রী হন অর্জুন মুন্ডা। এরপর কখনও মধু কোড়া, কখনও হেমন্ত সোরেন, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদে এসেছেন একাধিক নেতা। তবে কোনও মুখ্যমন্ত্রীই ৫ বছর একটানা ক্ষমতায় থাকতে পারেননি। মাঝে তিনবার রাষ্ট্রপতি শাসনের অধীনেও ছিল এই রাজ্য। এই ইতিহাস পাল্টে নতুন ইতিহাস রচনা করেছেন একমাত্র রঘুবর দাস।
২০১৪ সালে সংখ্যারিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি জোট এবং প্রথমবার ঝাড়খণ্ড সরকারে শীর্ষপদে বসেন একজন অ-আদিবাসী নেতা। তারপর পাঁচ বছর মুখ্যমন্ত্রী পদে কোনও রদবদল হয়নি। আদিবাসী সংরক্ষিত ঝাড়খণ্ডে রঘুবর দাসই একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যিনি তাঁর মেয়াদ পূর্ণ করেছেন। অতীতের পাঁচ মুখ্যমন্ত্রীর একজনও পাঁচ বছর একটানা ক্ষমতায় থাকেননি।
প্রসঙ্গত, ঝাড়খণ্ডের জামসেদপুর পূর্ব থেকে লড়ছেন রঘুবর দাস। তাঁর বিরুদ্ধে ওই আসনে লড়ছেন সরযূ রাই। নির্দল প্রতিনিধি সরযূ রাই একটা সময় রঘুবর দাসের মন্ত্রিসভাতেও ছিলেন। এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন কংগ্রেস প্রার্থী গৌরব ভল্লবও। অন্যদিকে দুমকা ও বারহেত, এই দুই আসন থেকে লড়ছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। জেএমএম নেতার বিরুদ্ধে দুমকা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মন্ত্রী লুইস মারান্ডি।
এই বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত একাই লড়ছে বিজেপি। ৮১টি আসনের মধ্যে ৭৯টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে গেরুয়া শিবির। ঝাড়খণ্ড ছাত্র ইউনিয়নের বিরুদ্ধে কোনও প্রার্থী দেয়নি তারা। আরও একটি আসনেও অ-বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থন করেছে গেরুয়া শিবির। অন্যদিকে, বিরোধী জোটে সর্বাধিক ৪৩টি আসনে লড়ছে জেএমএম। বাকি ৩৮ টি আসেনের মধ্যে কংগ্রেস লড়ছে ৩১টি আসনে। বাকি ৭টি আসনে লড়ছে আরজেডি।