চিনকে চাপে রাখতে উত্তরবঙ্গের হাসিমারা হতে চলেছে রাফাল যুদ্ধবিমানের ঘাঁটি, জানাল প্রতিরক্ষামন্ত্রকের সূত্র
নয়াদিল্লি: চিন সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রথম দফার ১৮টি রাফালে যুদ্ধবিমানকে হাসিমারার বায়ুসেনা ঘাঁটিতে আনা হতে পারে। এই মর্মে একপ্রকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। প্রতিরক্ষামন্ত্রক সূত্রে এমনটাই খবর।
ফ্রান্স থেকে ৩৬টি অত্যাধুনিক রাফালে যুদ্ধবিমান একেবারে ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় কিনছে ভারত। প্রথম দফায় অর্ধেক অর্থাৎ ১৮টি যুদ্ধবিমান আসতে চলেছে ২০১৯ সাল নাগাদ। জানা গিয়েছে, এই বিমানগুলি রাখা হবে হাসিমারায়।
এবিপি আনন্দর তরফে যোগাযোগ করা হলে, প্রতিরক্ষামন্ত্রকের এক আধিকারিক এই খবরের সত্যতা স্বীকার করে নেন। নাম না জানানোর শর্তে তিনি বলেন, হাসিমারায় আসছে রাফাল। বিষয়টি একপ্রকার পাকা।
কেন্দ্রীয় সূত্রের খবর, চিনা আগ্রাসনের মোকাবিলা করতে দেশের পূর্ব ও উত্তর-পূর্বের নিরাপত্তাকে ঢেলে সাজাতে উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।
সেই প্রেক্ষিতে, উত্তর-পূর্বে চিন সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান হওয়ায় হাসিমারাকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির রাফালে যুদ্ধবিমান পরমাণু অস্ত্রবহনে সক্ষম। ফলে, সেইদিক দিয়ে চিনের ‘রক্তচক্ষু’-কে পাল্টা হিসেবে ভারত পুরোপুরি প্রস্তুত থাকতে চাইছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রকের এক সূত্রের মতে, বায়ুসেনার ইস্টার্ন কম্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি হল পশ্চিমবঙ্গের হাসিমারা। ১৯৬২ সালে চিন যুদ্ধের পর এই ঘাঁটি গড়ে তোলা হয়।
বস্তুত, একসঙ্গে, চিন, বাংলাদেশ এবং ভূটান সীমান্তের কাছে হওয়ায় এই ঘাঁটি কৌশলগত ভাবেও ভীষণই গুরুত্বপূর্ণ। ঘন জঙ্গল ও চা-বাগানের মধ্যে স্থিত হাসিমারাকে অনেক সময় ‘ভূটানের দুয়ার’ বলা হয়ে থাকে।
বর্তমানে, হাসিমারায় রুশ মিগ-২৭ যুদ্ধবিমানের দুটি স্কোয়াড্রন রয়েছে। এই বিমানগুলি আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে অবসরে চলে যাবে। বায়ুসেনা সূত্রে খবর, রাফালে যুদ্ধবিমানগুলি সেখানে স্থলাভিষিক্ত হবে।
সূত্রের খবর, রাফাল নির্মাণকারী সংস্থা ফ্রান্সের দাসো এভিয়েশনের কয়েকজন পদস্থ আধিকারিক সম্প্রতি হাসিমারার পরিকাঠামো পরিদর্শনে যান। তাঁরা গিয়ে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের পরামর্শও নাকি দিয়ে এসেছেন।
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টম্বর মাসে দুই সরকারের মধ্যে সরাসরি চুক্তির মাধ্যমে ফ্রান্সের থেকে ৫৯ হাজার কোটি টাকার বিনিময়ে এই মিডিয়াম মাল্টি রোল কমব্যাট শ্রেণির যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করে ভারত।