Bharat Jodo Yatra : 'ওদেরও তো জ্যাকেট নেই, খাবারও নেই হয়ত', যাত্রা শেষে তুষারস্নাত রাহুল, ভাসলেন আবেগে
Rahul Gandhi : '' হয়তো তাদের খাবার নেই। আমি ভাবলাম, যে তারা যদি জ্যাকেট বা সোয়েটার না পরে, আমারও পরা উচিত নয়..."
নয়াদিল্লি : আজই শেষ হল রাহুল গাঁধীর ( Rahul Gandhi ) ভারত জোড়ো যাত্রা ( Bharat Jodo Yatra ) । অন্তিম দিনের আগে রবিবার জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তিবি শ্রীনগরের ( Srinagar ) লাল চকের ক্লক টাওয়ারে ।
দক্ষিণ ভারতের অন্তিম বিন্দু থেকে গত ৭ সেপ্টেম্বর শুরু হয়েছিল ভারত জোড়ো যাত্রা । তার শেষ লগ্নে এসে তুষার বৃষ্টিতে ভিজলেন রাহুল। গায়ে ছিল না জ্যাকেট, ছিল না সোয়েটার। মাথায় স্রেফ কালো একটা টুপি। অঝোরে তুষারপাত। তারই মাঝে বলে চললেন রাহুল। তাঁর বক্তৃতায় উঠে এল এমনকিছু আবেগে ভরা মুহূর্ত, যা আগে বলেননি সাংসদ।
তুষারপাতের মধ্যেই চলল সভা। প্রবল তুষারপাতের মধ্যে দাঁড়িয়ে রাহুল গাঁধী বলেন, ' চারজন শিশু আমার কাছে এসেছিল। তারা সম্ভবত ভিক্ষুক ছিল, তাদের গায়ে কোন কাপড় ছিল না...আমি তাদের জড়িয়ে ধরলাম...তারা ঠান্ডায় কাঁপছিল। হয়তো তাদের খাবার নেই। আমি ভাবলাম, যে তারা যদি জ্যাকেট বা সোয়েটার না পরে, আমারও পরা উচিত নয়..."
রাহুল একদিনের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন একদিন একটি মেয়ে তাঁর কাছে আসে। তারপর একটি চিরকুট তাঁকে ধরিয়ে দেয়। তাতে লেখা ছিল, সে হয়ত রাহুল গাঁধীর সঙ্গে হাঁটতে পারছে না, তবে তাঁর হৃদয় তাঁর সঙ্গেই চলেছে। কারণ সে জানে এই হাঁটা তাঁর ভবিষ্যতের জন্যই। তাতেই নাকি রাহুলের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়।
শ্রীনগরে যাত্রা শেষে হাজির ছিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধীও। রাহুল-প্রিয়ঙ্কার উপস্থিতিতে শ্রীনগরে কংগ্রেস দফতরে জাতীয় পতাকা উত্তোলন হয়। ভাইয়ের নেতৃত্বে বিরাট এই যাত্রা শেষে প্রিয়ঙ্কা জড়িয়ে ধরেন তাঁকে। বলেন, 'আমার ভাই কন্যাকুমারী থেকে ৪-৫ মাস হেঁটে এসেছেন। তাঁরা যেখানেই গিয়েছেন, লোকজন তাদের জন্য বেরিয়ে এসেছেম। কেন? কারণ এই দেশে এখনও একটা আবেগ রয়ে গেছে - দেশের জন্য, এই ভূমির জন্য, এর বৈচিত্র্যের জন্য, যা সমস্ত ভারতীয়দের হৃদয়ে বাস করে' । প্রিয়ঙ্কা আরও বলেন, 'আমার ভাই যখন কাশ্মীরে আসছিলেন, আমার মা ও আমাকে একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, মনে হচ্ছে বাড়ি যাচ্ছি। তিনি বলেন, তাঁর পরিবারের সদস্যরা তার জন্য অপেক্ষা করছেন। '
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে শ্রীনগরে ভারত জোড়ো যাত্রার সমাপনী অনুষ্ঠানে দলীয় সাংসদ রাহুল গাঁধীকে শুভেচ্ছা জানান ও আলিঙ্গন করেন। প্রবল তুষারপাতের মধ্যে এখানে অনুষ্ঠান চলে।
তামিল নাড়ু থেকে এই যাত্রা শুরু হয়। এই যাত্রায় যোগ দিয়েছেন বিভিন্ন রাজ্যের বিদ্বজন, সাধারণ মানুষ ও বিজেপি-বিরোধী রাজনীতিকরা। ৩০ জানুয়ারি শ্রীনগরে এই যাত্রার শেষ দিনে জড়ো হলেন বহু কংগ্রেস সমর্থক। ভারত জোড়ো যাত্রায় দিনের পর দিন ধরে হেঁটেছেন রাহুল। এই মিছিল পেরিয়েছে তামিলনাড়ু,অন্ধ্রপ্রদেশ,কেরল, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক, রাজস্থান, দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানা, পঞ্জাব । শেষ পর্যন্ত এই যাত্রা শেষ হল জম্মু-কাশ্মীরে।