ব্যাপক ফলন, উঠছে না দাম, সঙ্কটে আলু-চাষিরা, সরাসরি কিনবে রাজ্য, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
কলকাতা: কম হলেও সমস্যা। বেশি হলে আরেক সমস্যা। এবার যেমন আলুর বিপুল ফলনে দাম মিলছে না। বিপাকে চাষিরা। অনেকের চাষের খরচটুকুও উঠছে না। ফলে বাধ্য হয়েই যা দাম মিলছে, সেই দামেই অনেকে অভাবী বিক্রি করে দিচ্ছেন। কিন্তু, তারপরেও আলু উদ্বৃত্ত। হিমঘরের সামনে লম্বা লাইন। সেখানে রাখতে না পারলে তো পচেই নষ্ট! ফলে আলু চাষিদের মাথায় হাত। হিমঘরের কর্মী শেখ আমির আলির দাবি, আলুর ফলন এবার অতিরিক্ত। হিমঘরে সব ঢোকানো যাবে না। হিমঘরে না ঢুকলে পঁচে নষ্ট হবে। আলু চাষি চিত্তরঞ্জন মণ্ডল বলেন, সরকার যেন ঋণ মকুব করে দেয়। ঋণ করে চাষ করা হয়েছে। ব্যাঙ্কের লোকেরা শুনবে না ফলন কম হয়েছে না বেশি। সরকারকে ইমিডিয়েট আলু কিনতে হবে। না হলে অনেকে সুইসাইড করবে। এই প্রেক্ষাপটে, চাষিদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার, নজরুল মঞ্চের অনুষ্ঠান থেকে তিনি ঘোষণা করেছেন, চাষিদের থেকে সরাসরি আলু কিনবে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, মিড ডে মিল সেন্টারের জন্য মাসে ২৮ হাজার মেট্রিক টন আলু লাগে। এই পরিমাণ আলু, সরাসরি চাষিদের থেকে, চার টাকা ষাট পয়সা কেজি দরে কিনবে সরকার। এর পাশাপাশি, আলুর রফতানির জন্যও সরকার দেবে ভর্তুকি। রেলে কেজি পিছু পঞ্চাশ পয়সা এবং জাহাজে কেজি পিছু এক টাকা করে। চাষিদের আলুর দাম না পাওয়া থেকে ধান সংগ্রহে সমস্যা-- দুই ইস্যুতেই এ দিন কেন্দ্রকে দুষেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, নোটবন্দির জন্য এ সব হচ্ছে। চাষিরা দুঃখে আছেন। নোট বন্দির জন্য সময় মতো চাষ করতে পারেননি। নোটবন্দির জন্য আলুচাষিরা প্রবলেমের মধ্যে আছেন। বেশ কিছু কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। ধান সংগ্রহে সরকার সরাসরি চেক দেবে কৃষকদের। পাল্টা, আলু চাষিদের সঙ্কটের জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করে এ দিন কলকাতায় মিছিল করে বিজেপির কিষাণ মোর্চা। মিছিলে নেতৃত্বে থাকা দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, রাজ্য সরকারের উচিত আরও বেশি দামে আলু কেনা। তিনি বলেন, যে দামে আলু কেনার কথা বলেছে তাতে কৃষকের আদৌ কোনও লাভ হবে না। আরও বেশি দাম দিতে হবে। না হলে আত্মহত্যা চলবে। যে সব চাষিরা বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে আলু চাষ করেছেন, তাঁদের অনেকে দেখেছেন লাভের মুখ। আর্থিক সঙ্কটে পড়া আলু চাষিদের অনেকে, মুখ্যমন্ত্রীর এদিনের ঘোষণার পর সুরাহার আসায় বুক বাঁধছেন।