Dilip Ghosh on Party Leaders:অন্য গাছের ছাল, খসে পড়ে গিয়েছে, বেসুরোদের সম্পর্কে দিলীপ, বিলম্বিত বোধোদয়, কটাক্ষ কুণালের
এই অবস্থায় দলের বেসুরোদের নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, নতুনরা দলকে এখনও বুঝে উঠতে পারেননি, তাদের সমস্যা হচ্ছে।
সমীরণ পাল, অশোকনগর : বিধানসভা ভোটের পর বিজেপির অনেক নেতাই দলের রাজ্য নেতাদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। সম্প্রতি ফেসবুক পোস্টে দলের রাজ্য নেতৃত্বকে ফেসবুক পোস্টে নিশানা করেছিলেন সৌমিত্র খাঁ। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও সব্যসাচী দত্তর গলাতেও সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে। এই অবস্থায় দলের বেসুরোদের নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানালেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, নতুনরা দলকে এখনও বুঝে উঠতে পারেননি, তাদের সমস্যা হচ্ছে। পুরনোদের কোনও সমস্যা নেই। অন্য গাছের ছাল লাগিয়েছিলাম, খসে পড়ে গিয়েছে।
দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। দলের নেতা কুণাল ঘোষের তীর্যক মন্তব্য, এখন দীর্ঘশ্বাস ফেলে লাভ নেই। দল ভাঙানোর সময় খেয়াল করা উচিত ছিল।
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ আরও বলেছেন, এমন হবে, আগেই জানতাম। বিলম্বে বোধোদয়। মনে হয় ক’দিন বাদে বিজেপিতে দিলীপ ঘোষেরও দমবন্ধ লাগবে।
বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ সম্প্রতি ফেসবুক লাইভ করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বিরোধী দলনেতা নিজেকে জাহির করছেন। দিল্লিতে গিয়ে ভুল বোঝাচ্ছেন। বিরোধী দলনেতা আয়নার সামনে দাঁড়ান। আমি আমার বাবা-ভাইয়ের জন্য কিছু চাইনি।
বুধবার এভাবেই শুভেন্দু অধিকারীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। খোঁচা দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষকেও। বলেছিলেন, আমাদের রাজ্য সভাপতি অর্ধেক বোঝেন, অর্ধেক বোঝেন না।
পাল্টা দিলীপ ঘোষ জোকার বলে সমালোচনা খারিজ করেছিলেন।
বুধবার সৌমিত্র খাঁর ফেবসুক আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গেই ফেসবুক পোস্ট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুকে একহাত নিয়েছিলেন, তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
এই প্রেক্ষাপটে ফেসবুকেই বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও সব্যসাচী দত্তকে আক্রমণ করেন বিজেপির রাজ্য যুব মোর্চার সাধারণ সম্পাদক অমৃতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতাদের শোকজ করা হয় না কেন? রাজীব-সব্যসাচীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে প্রয়োজনে গণ ইস্তফা বা অন্য কোনও পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব।
গত বিধানসভা ভোটের আগে, চার্টার্ড ফ্লাইটে করে দিল্লি গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধানসভা ভোটে হাওড়ার ডোমজুড় কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থীর কাছে তিনি পরাজিত হন।
বিজেপিকে পরাজিত করে ২১৩টি আসনে জিতে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল।তাৎপর্যপূর্ণভাবে এরপরই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিভিন্ন মন্তব্য ও ফেসবুক পোস্ট ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়।বুধবার সৌমিত্র খাঁয়ের ফেসবুক লাইভের পরপরই রাজীবের এই ফেসবুক পোস্টে তোলপাড় শুরু হয় রাজ্য বিজেপির অন্দরে।
ফেসবুকে শুভেন্দু অধিকারীকে বিঁধে রাজীব লেখেন, বিরোধী নেতাকে বলব, যাঁর নেতৃত্বে এবং যাঁকে মুখ্যমন্ত্রী দেখতে চেয়ে বাংলার মানুষ ২১৩টি আসনে তাঁর প্রার্থীদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন সেই মুখ্যমন্ত্রীকে অযথা আক্রমণ না করে সাধারণ মানুষের দুর্দশা মুক্তির জন্য পেট্রল-ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের মূল্যহ্রাস করাই এখন একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত।
এই প্রেক্ষাপটেই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও সব্যসাচী দত্তকে নিশানা করে সেই ফেসবুকেই আক্রমণ শানান রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার পদাধিকারী।যদিও, বিষয়টিকে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দিতে নারাজ সব্যসাচী দত্ত।এ বিষয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা সৌমিত্র খাঁ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের ফেসবুকে একের পর এক কড়া বার্তার মধ্যেই গতকাল দলীয় শৃঙ্খলার বার্তা দিয়েছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। তিনি বলেছিলেন, যাঁরা অন্যদল থেকে এসেছেন, তাঁরা সিস্টেমটা এখনও বুঝে উঠতে পারেননি। কোথায় কী বলতে হয়, সেই ধৈর্য নেই।