Chinese Citizens Arrested: গ্রাহকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে ব্যবহার হত সিম, জেরায় স্বীকার ধৃতের
ধৃতের চিনা যুবকের কাছ থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ছাড়াও মিলেছে বাংলাদেশ ও ভারতে দুটি এবং চিনের ২টি সিমকার্ড।
মাসদা: ব্লু কর্নার নোটিস জারি হয়েছিল। চিনের সেই যুবকই বাংলাদেশ হয়ে ভারতে ঢুকতে গিয়ে ধরা পড়েছে বিএসএফের জালে। অন্তর্বাসের আড়ালে ভারতীয় সিম চিনে নিয়ে যেত সে। সেই সিম ব্যবহার করে হ্যাক করা হত অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। ধৃতকে জেরা করে এমনই তথ্য মিলেছে বলে দাবি BSF সূত্রে।
সিনেমার পর্দায় দিল্লির চাঁদনিচক থেকে সিধুর চিনে পাড়ি দেওয়ার পিছনে ছিল আজব সব কারণ। আর বাস্তবে এক চিনা নাগরিকের ভারতে আসার পিছনে উঠে আসছে একের পর এক অপরাধমূলক তথ্য।
৩৬ বছরের হান জুনওয়ে। চিনের হেবেই প্রদেশের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার ভোররাতে মালদায় ভারত-বাংলাদেশের সীমান্ত মিলিক সুলতানপুর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে BSF। BSF-এ বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে, হান জুনওয়ে একজন ভয়ঙ্কর অপরাধী।
বিভিন্ন ব্যাঙ্ক প্রতারণার সঙ্গে সে জড়িত ছিল বলে BSF সূত্রে দাবি করা হচ্ছে। তাঁর নামে ব্লু কর্নার নোটিস জারি করা হয়। সম্প্রতি ব্যাঙ্ক জালিয়াতির অভিযোগে সান জিয়াং নামে একজনকে, লখনউ থেকে গ্রেফতার করেছিল উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
এবার জালে ধরা পড়ল তার ব্যবসায়িক অংশীদার হান জুনওয়ে। ধৃতের চিনা যুবকের কাছ থেকে ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন ছাড়াও মিলেছে বাংলাদেশ ও ভারতে দুটি এবং চিনের ২টি সিমকার্ড। পাওয়া গেছে ডলার, বাংলাদেশি ও ভারতীয় নোট। মিলেছে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড সোয়াইপ করার ৫টি POS যন্ত্র সহ বেশকিছু জিনিস। পাওয়া গেছে তাঁর পাসপোর্টও।
শুক্রবার কালিয়াচক থানার পুলিশের হাতে ধৃতকে তুলে দেয় BSF। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি তাঁকে জেরা করছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের সন্ত্রাস দমন শাখার অফিসাররাও। BSF ও পুলিশ সূত্রে দাবি, ধৃতকে জেরা করে জানা গেছে, সে এর আগেও চারবার ভারতে এসেছিল।
২০১০ সালে হায়দরাবাদ, এবং ২০১৯ থেকে ৩ বার দিল্লি গিয়েছিল। ২০২০ সালে প্রায় 8 কোটি টাকা দিয়ে গুরুগ্রামে ‘স্ট্রার স্প্রিং’ নামে একটি হোটেলও কেনে সে। BSF-এর তরফে আরও দাবি করা হচ্ছে, জাল নথি ব্যবহার করে প্রায় ১৩০০ ভারতীয় সিম চিনে নিয়ে গেছিল ধৃত যুবক।
শুধু তাই নয়, অন্তর্বাসের আড়ালে সিম নিয়ে যেত বলে জেরায় স্বীকার করেছে ধৃত যুবক। এই সিমগুলি অন্যের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করতে ব্যবহৃত করা হত। বিএসএফ সূত্রে দাবি, ২ জুন ব্যবসায়িক ভিসায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় পা রেখেছিল হান জুনওয়ে। সেখানে চিনা বন্ধুর সঙ্গেই থাকত সে।
৮ জুন, সে চাঁপাই নবাবগঞ্জে যায়। সেখানে একটি হোটেলে ওঠে। চিন থেকে ভারতের ভিসা পাচ্ছিল না বলে, বাংলাদেশ হয়ে ভারতে ঢুকেছে। নদী পেরিয়ে সে এ দেশে ঢুকে পড়েছিল বলে বিএসএফ সূত্রে দাবি।
মালদার চিনা নাগরিককে গ্রেফতার ঘটনায় দানা বাঁধছে রহস্য। ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের মালিক সুলতানপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করে বিএসএফ। পরে তাকে কালিয়াচক থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রচুর ভারতীয় সিমকার্ড সে জোগাড় করে বলে পুলিশ সূত্রে দাবি। সাইবার অপরাধ না ব্যাঙ্ক জালিয়াতি, নাকি অন্য কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে সে এই কাজ করেছে, তা জানার চেষ্টা চলছে।
হান জুন উই নামে ওই চিনা নাগরিককে জেরা করতে আসছে এনআইএ। আসছে উত্তরপ্রদেশের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াডও। কারণ, গত জানুয়ারিতে হানের এক সঙ্গী সান জিয়াংকে গ্রেফতার করে লখনউয়ের অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড। প্রাথমিক জেরায় হান জানিয়েছে, সে ভারতে ব্যবসা করতে চায়। তাই গবেষণার উদ্দেশ্যে সে ২০০৯ সাল থেকে প্রায় প্রতি বছরই ভারতে আসছে। তার দাবি, বাংলাদেশে এসে নদী পেরিয়ে সে ভারতে ঢোকে। তবে সে না বুঝেই ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকেছে বলে দাবি ওই চিনা নাগরিকের। সূত্রের খবর, গতবছর গুড়গাঁওতে প্রায় ৪ কোটি টাকা দিয়ে হোটেল কিনেছিল হান।