এবার বিজেপির রাজ্য দফতরের পাশেই কৈলাস বিজয়বর্গীয়র বিরুদ্ধে 'গো ব্যাক' পোস্টার
আজ সকালে বিজেপির রাজ্য দফতরের পাশে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের ওপর ওই পোস্টার দেখা যায়। পোস্টারে কৈলাসের ছবি দিয়ে ওপরে লেখা 'গো ব্যাক'।
কলকাতা: বিজেপির রাজ্য দফতরের পাশে 'কৈলাস বিজয়বর্গীয় গো ব্যাক' স্লোগান দিয়ে পোস্টার পড়ল। আজ সকালে বিজেপির রাজ্য দফতরের পাশে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের ওপর ওই পোস্টার দেখা যায়। পোস্টারে কৈলাসের ছবি দিয়ে ওপরে লেখা 'গো ব্যাক'। পোস্টারে মুকুল রায়ের সঙ্গে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ছবিও রয়েছে।
মুরলীধর সেন লেনের পাশাপাশি দলের হেস্টিংসের অফিসের সামনেও এ ধরনের পোস্টার দেখা যায়। সেই পোস্টারগুলি সরিয়ে দেওযার কাজে হাত দেন দলের কর্মীরা।
পোস্টারগুলি কে বা কারা দিয়েছে, তা জানা যায়নি। তবে ভোটে বিপর্যয়ের পর মুকুল রায়ের দলত্যাগ এবং আরও ভাঙনের জল্পনা ঘিরে বিজেপির অন্দরে এখন জোর শোরগোল চলছে। এই পরিস্থিতিতে কয়েকদিন আগে তথাগত রায়ের একটি রিট্যুইট বিতর্কে ঘি ঢেলেছিল।বিজেপিতে মুকুল রায়ের সঙ্গে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয় অত্যন্ত গভীর সম্পর্কের কথা সবারই জানা।আর এই প্রেক্ষাপটে পরোক্ষে মুকুল দল ছাড়ার পর, নাম না করে কৈলাসকে কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন তথাগত রায়। সম্প্রতি দিবাকর দেবনাথ নামে এক ব্যক্তি মুকুল রায় ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়র এই ছবি পোস্ট করে কড়া ভাষায় ট্যুইট করেন,লেখেন, মমতা পিসি এই ভোদো বিড়ালটা কে তৃণমূলে নিয়ে নাও, .. বন্ধুকে না পেয়ে হতাশ হতে পারে।সারাদিন মুকুলের সাথে ফিস/ফিস গুজ/গুজ করতো।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে ট্যুইটের এই বক্তব্যের ইংরাজি অনুবাদ করে আরেকটি টুইট করেন তথাগত রায়। তাতে তিনি লেখেন, ‘একজন একনিষ্ঠ বিজেপি কর্মীর টুইটের যথার্থ অনুবাদই করছি। কোনও অংশ যোগ বা বিয়োগ করিনি।’
কৈলাসের উদ্দেশে ওই ব্যক্তি যে শব্দবন্ধ ব্যবহার করেছেন, তার আক্ষরিক অনুবাদ করতে গিয়ে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি লেখেন ‘স্টুপিড ক্যাট’। তাঁর এই ট্যুইট ঘিরে যখন সরগরম হয়ে ওঠে রাজ্য রাজনীতি, তখন তথাগত রায়ের আরেকটি ট্যুইটও সকলের নজর কাড়ে। ইলিয়াড মহাকাব্যে এই ট্রোজান হর্সই যুদ্ধে নির্ণায়ক হয়ে উঠেছিল...
আর বিধানসভা ভোটে ভরাডুবির পর বঙ্গ রাজনীতিতে দলবদলের মরশুম ঘিরে বিজেপির অন্দরেও এখন সেই ট্রোজান-হর্স যুদ্ধ শুরু হয়।
মুকুল রায় বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলের ফেরার পরই বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথাগত রায় এই ট্যুইট করে বলেন,স্পষ্টই মুকুল রায় ছিলেন ট্রোজান হর্স। বিজেপি তাঁকে স্বাগত জানানোর পরে তিনি দলের সর্বভারতীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুললেন। রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতিয়ে ফেললেন। দলের অন্দরের সমস্ত কথা বিস্তারিত ভাবে জানলেন এবং ফিরে (তৃণমূলে) গেলেন।...যা হওয়ার তা তো হয়ে গিয়েছে। এখন বড় প্রশ্ন হল, মুকুল কি ট্রোজান হর্স-এর ভিতরেও ট্রোজান হর্স রেখে দিয়ে গেলেন?
অর্থাত, তথাগত রায়ের প্রশ্ন, তৃণমূল থেকে আগত নেতাদের মধ্যে বিজেপি অন্দরে আর কোন কোন মুকুল-অনুগামী রয়ে গেছেন, তা নিয়ে! আর এই ইস্যুতেই সম্পূর্ণ ভিন্ন পথে হেঁটে, তারকেশ্বরের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী তথা রাজ্যসভার সদস্য স্বপন দাশগুপ্ত ট্যুইট করে বলেন, ২০১৯-এর পর যাঁরা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁদের সবাইকে ট্রোজান হর্স ভাবার কোনও কারণ নেই। অনেক নবাগতই যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তাঁরা যেন নিজেদের অবাঞ্ছিত না মনে করেন। বাদ দেওয়ার খেলা নয়, বরং নতুন সমর্থক এবং নেতা তৈরি করাই রাজনীতির কাজ।