![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/Premium-ad-Icon.png)
কমছে শিউলি, ধুঁকছে খেজুর গুড় শিল্প
শিউলিদের মতে, খেজুর গুড় শিল্প ক্রমশ অনিশ্চয়তার অন্ধকারে এগিয়ে চলেছে। হয়ত একদিন খেজুরের গুড় ইতিহাসের পাতাতেই রয়ে যাবে। শিউলি কারা?
![কমছে শিউলি, ধুঁকছে খেজুর গুড় শিল্প North 24 Pargana: Winter Khejur Gur (Date Palm Jaggery) In Crisis কমছে শিউলি, ধুঁকছে খেজুর গুড় শিল্প](https://static.abplive.com/wp-content/uploads/sites/3/2021/01/28192559/North-24-Pargana-Winter-Khejur-Gur-Date-Palm-Jaggery-Crisis.jpg?impolicy=abp_cdn&imwidth=1200&height=675)
সমীরণ পাল, বারাসাত: নলেন গুড়ের কথা অমৃত সমান, ভোজন রসিক করেন তারই গুনগান।
শীতে খেজুর রসের তৈরি নলেন গুড়ের স্বাদে ডুব দেননি এমন মানুষ পাওয়া বেশ কঠিন। কেউ কেউ মনে করেন নলেন গুড়ের স্বাদ ছাড়া শীতকালই বৃথা। নলেন গুড় সহযোগে লুচি-পরোটা তো আছেই, নলেন গুড়ের নানারকম মিষ্টির জনপ্রিয়তাই আলাদা। প্রদীপের নিচের অংশ অমাবস্যার রাত্রির মতো নিকষকালো!
শিউলিদের মতে, খেজুর গুড় শিল্প ক্রমশ অনিশ্চয়তার অন্ধকারে এগিয়ে চলেছে। হয়ত একদিন খেজুরের গুড় ইতিহাসের পাতাতেই রয়ে যাবে। শিউলি কে? যারা খেজুর রসের গুড় তৈরির কাজে গাছ চড়ার কাজ করেন তাদের এককথায় 'শিউলি' বলা হয়। সময় যত এগিয়েছে, শিউলিদের সংখ্যা কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। আর এখন তা একেবারেই তলানিতে। উল্লেখ্য, বছরের অন্যান্য সময় এই সব শিউলিরা সাধারণত অন্যের জমিতে খেতমজুর বা রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করে পেট চালান।
উত্তর ২৪ পরগণার গোপালনগর থানার অন্তর্গত নূতনগ্রামে অবশিষ্ট দু-তিনজন । অর্ধশতাব্দী ধরে এই পেশার সঙ্গে যুক্ত রামকৃষ্ণ বাছাড়ের কথায়, "লোক দিয়ে কাজ করিয়ে শেষে অবশিষ্ট লভ্যাংশ বলে কিছু থাকে না। এ কাজে কোন সরকারি সহযোগিতাও আমরা পাই না। ছেলেবেলায় বাবার থেকে কাজ শিখেছিলাম সেই মায়াতেই এখনও এই কাজ করি।"
অপরদিকে আরেক শিউলি চারুপদ সরকার জানান, "শীত আসলে একপ্রকার মনের টানে গাছ ঝুলে গুড় তৈরির কাজে লেগে পড়ি। কিন্তু বয়স এখন আর সঙ্গ দিতে চায় না। নতুন করে এই কষ্টের কাজ কেউ শিখতেও চায় না।" তাই সকলের অনাদর ও উদাসীনতায় একদিন হয়ত শিউলিরা হারিয়ে যাবে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। একইসাথে আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, বাজারে ভেজাল গুড় এর কারণে ভাল গুড় তৈরি করেও দাম পাওয়া যায় না। গত বছর যদিও কিছুটা দাম পাওয়া গিয়েছিল কিন্তু এ বছর বাজারদর খুবই কম।
বনগাঁ পরিতোষ নাথ সুপার মার্কেট ঘুরে দেখা গেল খেজুরের গুড়ের পাটালি কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়, যা গত বছরের তুলনায় কেজি প্রতি প্রায় ৪০ থেকে ৫০ টাকা কম।
করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের হাতে টাকা পয়সার ঘাটতি ও লাগামছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি শিউলিদের কাজেও প্রভাব ফেলেছে। শিউলিদের কথায়, সাইক্লোন আমফানের কারণে খেজুর গাছের স্বকীয়তা নষ্ট হয়ে গেছে। গাছে কমেছে রসের পরিমাণ। গাছেদের মুখোমুখি হয়ে পঁচাত্তর ছুঁই ছুঁই শিউলি চারুপদ সরকার, রামকৃষ্ণ বাছাড়রা বুঝেছেন, অর্ধশতাব্দীরও বেশী সময় ধরে ধরে শীতের আগমনে গাছেদের যে প্রাণোচ্ছ্বল প্রাকৃত রূপ তাঁরা দেখেছেন তা ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে কোথায় যেন হারিয়ে গেছে!
ট্রেন্ডিং
সেরা শিরোনাম
![ABP Premium](https://cdn.abplive.com/imagebank/metaverse-mid.png)