নথিতে ভুল সংশোধন হয়নি, এনআরসি-সিএএ ‘আতঙ্কে’ নিজের পেটে ছুরি দিনমজুরের!
তাহেরুদ্দিন এখন কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি।
পূর্ব মেদিনীপুর: পশ্চিমবঙ্গে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হলে কী হবে? ভিটেমাটি হারাতে হবে না তো? কিংবা নাগরিকপঞ্জি হলে কি আদৌ দেশে থাকা যাবে? নাকি শেষ পর্যন্ত ঠাঁই হবে ডিটেনশন ক্যাম্পে? সম্প্রতি সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে দেশ ও রাজ্যে যে জলঘোলা হচ্ছে তাতে আশঙ্কায় দিনযাপন করছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের বসন্তিয়া গ্রামের বাসিন্দা শেখ তাহেরুদ্দিন। তাঁর মনে বাসা বেঁধেছিল আতঙ্ক। আর সেই আতঙ্ক থেকেই এদিন আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন খেটে খাওয়া এই দিনমজুর। এমন ভাবে পেটে ছুরি চালিয়েছেন, বেরিয়ে এসেছে পাকস্থলী। তাহেরুদ্দিন এখন কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি।
শেখ তাহেরুদ্দিনের প্রতিবেশী শেখ মালিক এদিন এবিপি আনন্দকে বলেন, তাহেরুদ্দিন দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা। মাস দুয়েক ধরেই এনআরসি, সিএএ নিয়ে আতঙ্কে ভুগছিলেন তিনি। তার ওপর দিলীপ ঘোষদের একের পর এক বিতর্কিত ও ‘বিদ্বেষমূলক’ মন্তব্য ভীতির জন্ম দিয়েছে এবং তাহেরকে দিশেহারা করেছে।
শেখ মালিক আরও জানান, তাহের কয়েকদিন ধরেই তাঁর আধার, ভোটার কার্ড সহ একাধিক তথ্যের ভ্রম সংশোধনের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরেছেন। সরকারি দফতরের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেরিয়েও কাজ হয়নি। বাবা শেখ মোক্তারুদ্দিনের নথিপত্রের সংশোধন করাতে না পেরেই এদিন আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তাহের, এমনই দাবি পরিবারের। পরিবারের তরফে অভিযোগ, কেন্দ্র সরকারের এই সিএএ এবং এনআরসি আতঙ্কের জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। যদিও সেই অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিরা কেন্দ্রীয় আইন নিয়ে আরও সচেতনতা বৃদ্ধির পক্ষেই সওয়াল করেছেন। পুলিশের তরফে জানান হয়েছে, “তাহেরুদ্দিন এখন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সুস্থ হওয়ার পর যদি ওনার পরিবার লিখিত অভিযোগ করে, সেক্ষেত্রে তদন্ত করে দেখা হবে।”